Thursday, January 1

ফিরে দেখা ২০১৪ : ক্রিকেট


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: আমরা যদিও বলি ফুটবল এদেশে জনপ্রিয়। কিন্তু দেশের বাইরে ফুটবলের তুলনায় ক্রিকেটই বাংলাদেশকে পরিচয় করে তুলেছে সবচেয়ে বেশি। এদেশকে অনেক অন্যসব অর্জনের পাশাপাশি ক্রিকেটেও ২০১৪ সালটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষত এই বছরেই এককভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজনের কীর্তি লাভ করে বাংলাদেশ। ১৬ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ছয় এপ্রিল ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উৎসবের। টাইগারদের অর্জন ততোটা উল্লেখযোগ্য না হলেও টুর্নামেন্টের সফল আয়োজন করে বাংলাদেশের সংগঠকরা প্রমাণ করেছেন বড় প্রতিযোগিতা আয়োজনে নিজেদের সক্ষমতা। পুরুষ ও নারীদের ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা আয়োজনে পুরোপুরি সফলতার দাবি করা যেতেই পারে, কেবল চট্টগ্রাম এবং সিলেটে আলো বিভ্রাটের কথা বাদ দিলে। ফতুল্লায় প্রস্তুতি ম্যাচ সম্পন্ন হওয়ার পর ১৬ মার্চ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মিলিয়ে মোট চারটি ভেন্যুতে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। কেবল খেলা আয়োজনে নয়, খেলাকেন্দ্রিক বিনোদন আয়োজনেও সফলতার দাবি করা যেতে পারে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিযোগিতা এবার দুভাগে অনুষ্ঠিত হয়। মূল পর্ব শুরু হওয়ার আগে অনুষ্ঠিত হয় কোয়ালিফাইং রাউন্ড। ১৬ মার্চ মিরপুরে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের ম্যাচ দিয়ে শুরু হয় কোয়ালিফাইং রাউন্ডের গ্রুপের খেলা। কোয়ালিফায়িং রাউন্ডে এ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল আফগানিস্তান, নেপাল এবং হংকং। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ের প্রতিপক্ষ ছিল নেদারল্যান্ডস, আরব আমিরাত এবং আয়ারল্যান্ড। বি গ্রুপের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে। এ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ এবং বি গ্রুপ থেকে চমক জাগিয়ে নেদারল্যান্ডস মূল পর্বে জায়গা করে নেয়। তবে মূল পর্ব শুরু হয় ২১ মার্চ মিরপুরে দুই নং গ্রুপের ভারত পাাকিস্তানের ম্যাচ দিয়ে। দুই নং গ্রুপের বাকি খেলাগুলোও অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকায়। গ্রুপটির অন্য দলগুলো ছিলো বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে এক নং গ্রুপের শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। শ্রীলঙ্কা –ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেমিফাইনালে শিলা বৃষ্টি ৩ এপ্রিল মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-শ্রীলঙ্কার সেমিফাইনাল ভেসে গিয়েছিল শিলা বৃষ্টিতে। ফলে ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে লঙ্কানরা ২৭ রানে জয়ী হয়। কুমারা সাঙ্গাকারাকে বিদায়ী উপহার শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটিং লিজেন্ড কুমারা সাঙ্গাকারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্ব আসরের পর ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট থেকে অবসর নেবেন। মিরপুরে ছয় এপ্রিল ভারতকে ছয় উইকেটে হারিয়ে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিতে লঙ্কান ক্রিকেটাররা সাঙ্গাকারাকে দিয়েছিলেন অসাধারণ বিদায় উপহার। মহিলা ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি মহিলা ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিলেটের বিভাগীয় স্টেডিয়ামে। তবে সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঢাকায়। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। এই আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করে বাংলাদেশ এর চেয়েও বৃহত্তর আয়োজনে সক্ষমতারই পরিচয় দিল। নিভে যাওয়া তারা ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে আফতাব আহমেদের ব্যাটিংয়ের ধরণ থেকে তাকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন বলে অভিহিত করেছিলেন সে সময়ের ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন। সে সফরে ফ্লিনটফ, হার্মিসেনদের অবলীলায় করেছিলেন সীমানা ছাড়া করেছিলেন আফতাব। ২০০৫ সালের ১৮ জুন । কার্ডিফে শেষ ওভারে জেসন গিলেস্পির লেংন্থ বলে আফতাবের মিড উইকেটের ওপর দিয়ে মারা ছয় আর সঙ্গে সঙ্গে সে সময়ের অজি অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের অন্ধকার মুখ আর বাংলাদেশের উচ্ছসিত ড্রেসিং রুম। বাংলাদেশের হয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রথম পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখান এ মিডিয়াম পেসার। কিন্তু আফতাবের আগমন ধ্বনিতে যতটা আশা জাগানিয়া অনুরণন ছিল, ঠিক তেমনিই ক্রিকেটাঙ্গন থেকে বিদায় নিলেন স্টাইলিশ এ ব্যাটসম্যান। কিন্তু নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনেন ২০০৭ সালে ভারতের বিদ্রোহী ক্রিকেট লিগ আইসিএলে যোগ দিয়ে। ১০ বছরের জন্যে নিষিদ্ধ হন আফতাব। এরপর আর ছন্দে ফিরতে পারেননি। শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালের ১৬ মার্চ। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট লিগেও তার চাহিদা কমতে থাকে। সবমিলিয়ে ২৯ বছর বয়েসী আফতাব নিজেই বুঝতে পেরেছিলেন অকালেই ফুরিয়ে গেছেন তিনি। এ বছর আগস্টের ২৭ তারিখ প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের দলবদলে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলার জন্যে সই করতে এসে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন এ মৌসুম শেষেই অবসরে যাবেন তিনি। সুপার লিগে উঠতে ব্যর্থ হয় ব্রাদার্স আর অনেক সম্ভাবনাময় আফতাবের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে ২০১৪ সালে। নির্ভরতার নাম মুমিনুল বাংলাদেশ ক্রিকেট আকাশের সম্ভাবনাময় এক তারার নাম মুমিনুল হক। সদ্য কৈশরোত্তীর্ণ এই তরুণ অভিষেকের পর থেকেই টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন। অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতায় টেস্টে ২০ ইনিংসের বেশি খেলেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের গড় হিসেব করলে ব্র্যাডম্যানের পরেই অবস্থান মুমিনুলের। ক্রিকেট কিংবদন্তী ব্র্যাডম্যানের গড় ৯৯.৯৬ তার পরেই মুমিনুলের অবস্থান। এ পর্যন্ত ২৩ ইনিংসে ৬৩.০৫ গড়ে করেছেন ১১৯৮ রান। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বছরের শেষ টেস্টেও খেলেছেন অপরাজিত ১৩১ রানের ইনিংস। মুমিনুল হক সৌরভের ব্যাট ২০১৪ সালেও ছড়িয়েছে সৌরভ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে খেলেন অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস। তার এই ইনিংসের কল্যাণেই টেস্টটি ড্র করে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা এড়ায় বাংলাদেশ। এরপর ক্যারিবীয় সফরে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি মুমিনুল। দুই টেস্টেই প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন যথাক্রমে ৫১ ও ৫৬ রানের ইনিংস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে এসে আবারো স্বরূপে ফেরেন মুমিনুল। মিরপুরে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৫৩ রান। খুলনা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৩৫ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেছিলেন ৫৪ রানের ইনিংস। বছরের শেষ টেস্টের শেষ ইনিংসে এসে সেঞ্চুরির দেখা পান বাংলাদেশের এই লিটল মাস্টার। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। টাইগারদের আফগানিস্তান ও হংকং লজ্জা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পঁচা শামুকে পা কাটার অভ্যাস পুরনো। টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জনের পরও ২০০৩ বিশ্বকাপে হেরেছিল আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ কানাডা এবং কেনিয়ার বিপক্ষে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা দুই জায়ান্টকে হারালেও, নিজেরা হেরেছিল আরেক সহযোগী সদস্য আয়ারল্যান্ডের কাছে। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আইরিশদের কাছে হার মানতে হয়েছিল আশরাফুলদের। ছোট দলগুলোর কাছে হারের অভিজ্ঞতা একদমই নতুন নয় বাংলাদেশের জন্যে। ২০১৪ সালেও আইসিসির দুই সহযোগী সদস্য আফগানিস্তান এবং হংকংয়ের কাছে হারের লজ্জা বহন করতে হয়েছে সাকিব মুশফিকদের। ২০১৪ সালের ১ মার্চ ফতুল্লায় এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানদের কাছে ৩২ রানে হেরে যায় স্বাগতিকরা। টসে জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিক ফিল্ডিং বেছে নিয়েছিলেন। ৯০ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে সহজ জয়েরই ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সামিউল্লাহ শেনওয়ারি এবং আসগার স্ত্যানিকজায়ের ১৬৪ রানের পার্টনারশিপে আফগানরা ২৫৪ রানের ফাইটিং স্কোর দাঁড় করায়। ২৫৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে এলোমেলো ব্যাটিংয়ের খেসারত দিয়ে ম্যাচটি হেরে যায় মুশফিক বাহিনী। বাংলাদেশ অলআউট হয় ২২২ রানে। আফগানদের সঙ্গে হারের ২০ দিন পর ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির কোয়ালিফাইং রাউন্ডে আরও বড় লজ্জায় ডোবে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে ২০ মার্চ এক নম্বর গ্রুপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের শেষ ম্যাচে পুঁচকে হংকংয়ের কাছে দুই উইকেটে হের যায় টাইগাররা। টস জিতে হংকং ব্যাটিংয়ে পাঠায় স্বাগতিকদের। কিন্তু অমার্জনীয় ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৬.৩ ওভারে ১০৮ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ১০৯ রানের ছোট্ট পুঁজিকে হংকংয়ের জন্য কঠিন করে ফেলেছিলো সাকিবদের ঘূর্ণি জাদু। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ৮৩ রানের মধ্যে ছয় উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত দুই বল বাকি থাকতে শেষ হাসি হাসে হংকং। বছরের আবিষ্কার তাইজুল-তাসকিন-জুবায়ের শেষ দিকের জিম্বাবুয়ে সিরিজ ছাড়া ২০১৪ সালটা মোটেও ভালো যায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। প্রায় পুরো বছরের হতাশার মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছেন ২০১৪-এর সেরা আবিষ্কার বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম, পেসার তাসকিন আহমেদ এবং লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখন। তাইজুল ইসলাম নিষেধাজ্ঞায় পড়ে সাকিব আল হাসানের দরজা বন্ধ হয়ে গেলে জাতীয় দলের দরজা খুলে যায় লিগের দুর্দান্ত খেলোয়াড় তাইজুল ইসলামের জন্যে। সুযোগটাও ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছেন বাংলাদেশের নতুন এই স্পিন সেনশন। ৫ সেপ্টেম্বর কিংসটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল ২২ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার তাইজুলের। প্রথম টেস্টেই বাজিমাত করেন তিনি। অভিষেকেই ১৩৫ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে বুঝিয়ে দেন জাতীয় দলে দীর্ঘ সময় থাকতে প্রস্তুত তিনি। তারপর ৫ টেস্টে নেন ২৫ উইকেট। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট নেওয়ারও রেকর্ড গড়ে ফেলেন এই তরুণ স্পিনার। এরপর ২৮ নভেম্বর ওয়ানডে অভিষেকেতো বিরল ইতিহাস গড়েন তাইজুল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক করে অনন্য নজির গড়ে ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপিয়ে দেন। ওই ম্যাচে নিয়েছিলেন সব মিলিয়ে ৪ উইকেট। তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকে নতুন সেনসেশন তাসকিন আহমেদ। মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাসকিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অজি ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ তাসকিনের গতির ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। ১৭ জুন মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অভিষেক হয় এই তরুণ পেসারের। অভিষেকেই গুড়িয়ে দিয়েছিলেন ভারতের টপ অর্ডার। ২৬ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে সবার নজর কাড়েন তিনি। তার বোলিংয়েই ভারত গুটিয়ে যায় ১০৫ রানে। জুবায়ের হোসেন লিখন বিশ্ব ক্রিকেট থেকে লেগ স্পিনারদের রাজত্ব যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। এরই মধ্যে অভিষেক হলো বাংলাদেশি লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখনের। অভিষেক সিরিজেই সবার নজর কাড়েন সদ্য কৈশোরোত্তীর্ণ লিখন। ২৫ অক্টোবর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক সিরিজের প্রথম টেস্টে দুই উইকেট পেলেও ৩ নভেম্বর শুরু হওয়া খুলনা টেস্টে দেখিয়েছেন তার কব্জির জাদু। পঞ্চম চা বিরতির আগে চাকাভা এবং আরভিনের উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন লিখনই। এখন পর্যন্ত তিনটি টেস্ট খেলে ১১ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তিন নম্বরে রয়েছেন লিখণ। এছাড়া, দুটি ওয়ানডে খেলে লিখন নিয়েছেন চার উইকেট। ক্রিকেটে নারীরাও নজর কেড়েছে বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেট দলও এ বছর বয়ে এনেছে দেশের জন্যে সম্মান। দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর দিয়ে বছরটা শুরু করেছিল বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটাররা। ২০১১ সালে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশের মহিলাদের জন্যে এটি ছিল প্রথম কোন বিশ্ব আসরে খেলার প্রথম অভিজ্ঞতা। হতাশ করেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। মার্চে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় তারা শ্রীলঙ্কা এবং আয়ারল্যান্ডের মেয়েদের হারিয়ে চমকে দিয়েছিল সবাইকে। এছাড়াও কয়েকটি খেলায় জয়ের কাছাকাছি যাওয়ার পরও হেরে গেলে ক্রিকেট মহলে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেট দল। ২০১০ সালে গুয়াংজু এশিয়ান গেমসের মতো এ বছরও কোরিয়ার ইনচন এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট ইভেন্টে রৌপ্য পদক জয় করে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ২৬ সেপ্টেম্বর ইনচনে পাকিস্তানের মেয়েদের কাছে ইভেন্ট ফাইনালে চার রানে হেরে যায় বাংলাদেশের মেয়েরা। সে ম্যাচেও এক সময় মনে হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা জয়ের পথেই ছিল। সীমিত সুযোগ সুবিধা নিয়েও বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেট দল দেশের জন্যে সম্মান বয়ে আনছে। মেয়েদের পারফরমেন্স বিসিবির কর্তাদেরও উৎসাহিত করেছে। ইতিমধ্যে মেয়েদের প্রথম বিভাগ এবং প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের আয়োজন করেছে বিসিবি। ইতিমধ্যে ব্যাকআপ ক্রিকেটারদের নিয়ে প্রথমবারের মতো মেয়েদের এ দল তৈরী করা হচ্ছে, এর ফলে মেয়েদের ক্রিকেট আরো এগিয়ে যাবে। বিসিবি মহিলা ক্রিকেটের প্রসারে ইতোমধ্যে ক্রিকেটারদের বেতন কাঠামোর আওতায় এনেছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়