Friday, December 12

ধর্ম ও সংস্কৃতি বিকাশে ওয়াজ-মাহফিল


বাংলাদেশে ধর্ম ও সংস্কৃতি বিকাশে ওয়াজ-মাহফিলে পীর-আউলিয়া, ওয়ায়েজিন এবং মসজিদের ইমাম সাহেবরা রাসূলে খোদা (সা.) এর উত্তরাধিকার হিসেবে ইসলামের প্রচার ও প্রসারে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা তাওহিদ, রিসালাত ও আখেরাতের পাশাপাশি মানুষের জীবন-ঘনিষ্ঠ বিষয়ে আলোচনা করে সমাজ এবং ব্যক্তির মানসে এক বিপ্লবী পরিবর্তন সাধনে সক্ষম হয়েছেন। এ বিষয়ে কথা বলেছেন এ দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট আলেম মন শরীয়তের বিধান পালনের জন্য তৈরি করা হয় মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী মাদরাসায়ে নূরিয়া, শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ পবিত্র কোরআনের মাত্র ৫০০ আয়াতে ইসলামের বিধিবিধান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া ৬ হাজার আয়াতে ওয়াজ ও নসিহত প্রদান করা হয়েছে। সাধ্যের বাইরে শরিয়তের কোনো বিধান মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়নি। এ বিধানগুলো পালন করতে যদি বান্দাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করা হয় কিংবা বাধ্য করা হয়, তাহলে এ বিধান পালন আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। বিধানগুলো এমন, মানুষ স্বেচ্ছায় পালন করতে চায় না। অপরদিকে বল প্রয়োগ করে বিধান পালন করানো হলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। সুতরাং আল্লাহর বিধান পালন করানোর গ্রহণযোগ্য একমাত্র পন্থা হলো ওয়াজ-মাহফিল। ওয়াজের মাধ্যমে সে বুঝতে পারবে আল্লাহর বিধানগুলো পালন করার মধ্যে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ নিহিত আছে এবং বিধানগুলো লঙ্ঘন করলে দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। তখন বান্দা নিজেই বিধানগুলো পালন করতে মানসিকভাবে এগিয়ে আসবে। ওয়াজের মাধ্যমে মানুষের মনকে শরীয়তের বিধান পালনের জন্য তৈরি করা হয়। ওয়াজ-মাহফিলের প্রচার যত বেশি করা যাবে, মানুষের জানা ও বোঝার ক্ষেত্রে তত বেশি আগ্রহ জাগবে। তৃণমূল পর্যন্ত দাওয়াত পৌঁছানোর মাধ্যম আলহাজ মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী পীর, জৈনপুর দরবার শরিফ, নারায়ণগঞ্জ ওয়াজ-মাহফিল এক ধরনের দাওয়াত। দাওয়াত ইলাল্লাহ। আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত হিসেবে মাহফিলের আয়োজন করা হয়। স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ মাহফিলে অংশগ্রহণ করে রাত জেগে আনন্দের সঙ্গে দ্বীন শিখছে। মানুষ ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী হচ্ছে। সাংস্কৃতিকভাবে সুশীল মুসলমান হিসেবে গড়ে উঠছে। দ্বীন ইসলামের দাওয়াতের ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সফল ও কার্যকর পদ্ধতি হলো ওয়াজ-মাহফিল। দাওয়াত ইলাল্লাহ ব্যাপক অর্থে তালিম ও তাবলিগকে বোঝায়। দ্বীনের দাওয়াত প্রচারের পাশাপাশি সমাজের সব ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে ওয়াজ-মাহফিল বিশাল ভূমিকা পালন করে। ইসলামী সংস্কৃতি না থাকার কারণে নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় হচ্ছে মাওলানা মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জাবেরী খতিব, রয়েল ট্যানারি জামে মসজিদ, হাজারীবাগ জাতির বিশ্বাস, ধ্যান-ধারণা, চিন্তাধারা, জীবন-পদ্ধতি, আচার-অনুষ্ঠান, ধমীয় জীবনাচার, নৈতিক, আধ্যাত্মিক, চেতনাবোধ ইত্যাদির সামষ্টিক রূপই হচ্ছে প্রকৃত সংস্কৃতি। সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো_ তাওহিদ, রিসালাত ও আখেরাত। এ তিনটি বিষয়ের উপরেই সংস্কৃতির ভীত রচিত হয়েছে। সেই সংস্কৃতির আলোকে যদি নিজ নিজ জীবন পরিচালনা করতে পারি, তাহলে আমরা বাতিল শক্তিকে মোকাবিলা করতে পারব। ইসলামী সংস্কৃতি না থাকার কারণে ছেলেমেয়েদের নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় হচ্ছে। ইসলামী সংস্কৃতি প্রচার ও প্রসারের অন্যতম মাধ্যম হলো_ ওয়াজ-মাহফিল। এর মাধ্যমে মানুষ ইসলামকে জানার সুযোগ পায়। সংস্কৃতিটা কী তা মানুষকে জানানো ও বোঝানো রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জ্ঞানের উত্তরসূরি হিসেবে আলেমদের দায়িত্ব। ইসলামকে ভালোভাবে বুঝলে অমুসলিমরা ইসলামে আকৃষ্ট হতো ডা. মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম (নও মুসলিম) নলছিটি, ঝালকাঠি মাহফিলের প্রচলন রাসূলে আকরাম (সা.) থেকে শুরু হয়েছে। মাহফিলের মাধ্যমে কোরআন ও সুন্নাহর পাশাপাশি রাসূলের চরিত্র, সাহাবিদের জীবনীচর্চা হয়। ব্যক্তিজীবনে আমি নিজেও নবীদের জীবনী, সাহাবিদের জীবনী, হাক্কানি পীর-মাশায়েখদের জীবনী পড়ে জেনে-শুনে ইসলামের দিকে এগিয়ে এসেছি। ইসলাম গ্রহণের আগে চুপিসারে গভীর রাতে নবীদের জীবনীগুলো পড়তাম। কোরআন ও হাদিস পড়ে হাক্কানি ওলামায়ে কেরামদের আমল দেখে দেখে নিজেকে গড়তে চাইলে বেশি করে মাহফিলে অংশ নেয়া উচিত। সুললিত কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির, ইসলামের সৌন্দর্য, কোরআনের তাত্তি্বক আলোচনা, রাসূল (সা.) এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য শুনে বিনা জবরদস্তিতে, স্বপ্রণোদিত হয়ে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় অংশগ্রহণ করে মানুষ নিজেদের ধন্য মনে করছে। একজন মানুষ যদি ইসলাম ভালোভাবে বুঝত তাহলে অমুসলিমরা আরও বেশি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতো। রাসূলুল্লাহ (সা.) সমষ্টিগত জীবন বেশি পছন্দ করতেন মাওলানা আবু জাফর মুহাম্মদ ছালেহ খতিব, বাইতুন নূর জামে মসজিদ, মিরপুর রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের উপস্থিতিতে যেসব বক্তব্য রেখেছেন, সেগুলোও একেকটি মাহফিল। রাসূলের বক্তব্যগুলোই আমরা পরবর্তী সময়ে হাদিস আকারে পেয়েছি। এমনকি কোনো সাহাবি যদি মজলিসে উপস্থিত না থাকতেন, তাদের উপস্থিত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতেন। একদিন হজরত আবু হুরায়রা (রা.) অন্য সাহাবিদের কাছে গিয়ে বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে সম্পদ (জ্ঞান) বিক্রি হচ্ছে আর তোমরা বাজারে ঘুরছ! এভাবে বলে বলে তাদের আল্লাহর রাসূলের মজলিসে নিয়ে আসতেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) সমষ্টিগত অবস্থা বেশি পছন্দ করতেন। সমষ্টিগতভাবে যদি মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করে আল্লাহ তায়ালাও সমষ্টিগতভাবে তার বান্দাদের স্মরণ করেন। সাধারণ মানুষের কাছে মাহফিল অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কোরআন হাদিসের তেমন জ্ঞান না থাকার কারণে মাহফিলকে তারা দ্বীন শরিয়তের ইলম হাসিলের মাধ্যম মনে করে। সেক্ষেত্রে বক্তারা যদি দায়িত্ব নিয়ে কথা না বলে, তাহলে অনেক সময় মানুষের দুনিয়ায় ও আখেরাতে সব বিষয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মূলত ইসলামের সব কাজই একেকটি সংস্কৃতি মাওলানা মুহাম্মদ আবুবকর সিদ্দিক চেয়ারম্যান, আল হাদিস বিভাগ, ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদরাসা প্রত্যেক বক্তাই ইসলামের আদর্শকে কেন্দ্র করে দ্বীন প্রচার করে। ব্যক্তিবিশেষে দাওয়াতের পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। মূলত ইসলামের সব কাজই একেকটি সংস্কৃতি। মাহফিলে মানুষের জীবন-ঘনিষ্ঠ বিষয়গুলো বেশি আলোচিত হয়। এক শ্রেণীর মানুষ বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকা, কোরআন ও হাদিস চর্চা করে ইসলামকে জানে এবং মানে। এক শ্রেণীর মানুষ আছে, যারা বিভিন্ন মাহফিল ও জুমার দিনে আলোচনার ওপর নির্ভর করে জীবন পরিচালনা করে, সেক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক আলোচনা করা প্রয়োজন। মাহফিল শুধু একটি সংস্কৃতিই নয় বরং কোরআনের একটি মোজেজা মাওলানা নেছার উদ্দীন আহমাদ চেয়ারম্যান, ইকরা সাহিত্য কেন্দ্র, মীর্জাগঞ্জ বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও মাহফিলে অংশ নেয়। মাহফিলকে শিশুদের মতো করে সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় কীভাবে উপস্থাপন করা যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। একটি রাজনৈতিক প্রোগ্রাম বা অন্য কোনো প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে প্রচার ও নিরাপত্তা বিধানের জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয় করার পরেও বোমা হামলা কিংবা চেয়ার ছুড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়। অথচ মাহফিলে লাখ লাখ লোক জড়ো হয়; কাউকে ভাড়া দিয়ে হাজির করতে হয় না, কোনো ধরনের মারামারি হয় না, অহঙ্কার-গৌরব না করে চুপ থেকে একে অপরে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে কোরআন শোনার জন্য সুযোগ করে দেয়। মাহফিল শুধু একটি সংস্কৃতিই নয়, বরং এটি কোরআনের একটি মোজেজা। জানার ক্ষেত্রে ত্রুটি নিয়ে আলোচনা না করা চাই মাওলানা মাহমুদুল হাসান প্রভাষক, শরিফবাগ ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা ধামরাই, ঢাকা নবীরা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে যেভাবে দাওয়াতের কাজ করেছেন, বর্তমানে তেমনিভাবে নবীদের অবর্তমানে তাদের দাওয়াতের কাজটি এগিয়ে নিতে জান-প্রাণ দিয়ে ওলামায়ে কেরামরা সেই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ওয়াজ ও তাফসির মাহফিলের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষ কোরআন জানতে পারছে, হেদায়েত লাভ করছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে প্রমাণ করছে জীবন গঠনের জন্য মাহফিল সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। ওয়াজ-মাহফিল একটি বড় প্রতিষ্ঠান। এখানে লৌকিকতা, বানানো গল্প, অপ্রয়োজনীয় বাক্য, অসত্য তথ্য, ভৌতিক আলোচনা, অলীক কল্প-কাহিনী, বিভ্রান্তিমূলক উক্তি, তথ্যগত বিভ্রাট, জানার ক্ষেত্রে ত্রুটি নিয়ে আলোচনা না করা প্রয়োজন। এ জন্য প্রত্যেক আলোচকের উচিত অত্যধিক পরিমাণে কোরআন, তাফসির, হাদিস, বিশুদ্ধ সিরাত, ইতিহাস, বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিকসহ সাম্প্রতিক বিষয়ের চর্চা করা। কোনো ব্যক্তির জীবন, কর্ম ও আদর্শ দিয়ে মানুষকে ইসলাম বোঝাতে চাইলে ইসলাম বিতর্কিতভাবে উপস্থাপিত হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ওয়াজ মাহফিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংস্কৃতি মাওলানা মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন খতিব, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, নারায়ণগঞ্জ মাহফিল অর্থ অনুষ্ঠান। ওয়াজ-মাহফিল মানে নসিহতের অনুষ্ঠান। আল্লাহ তায়ালা নিজেই সর্বপ্রথম ফেরেশতাদের নিয়ে রুহের জগতে মাহফিল শুরু করেন। আদম (আ.) কে ছাত্র বানিয়ে আল্লাহ শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে তাকে প্রথম শিক্ষাদান করেন। আদম (আ.) তার সন্তানদের উপদেশ দিলেন। যুগে যুগে নবীরা তার জাতিকে নসিহত করেছেন, মাহফিল করেছেন। রাসূল (সা.) সাফা পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশে নসিহত করেছেন (ওয়াজ)। রাসূল (সা.) সবচেয়ে বড় ওয়াজটি করেছেন আরাফাতের ময়দানে। বিদায় হজের ভাষণ শ্রেষ্ঠ একটি ওয়াজ। সংস্কৃতির আলোকেই ধর্ম বিনির্মিত হয়েছে। সেই হিসেবে ইসলামী জীবন বিধানের সব কর্মকা-ই ইসলামী সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ওয়াজ-মাহফিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংস্কৃতি। আলোচনার মাধ্যমে মানুষের অন্তরের রোগ দূরীভূত হয় সৈয়দ শাহ মুতাসিম বিল্লাহ রব্বানী পীর সাহেব, বদরপুর দরবার শরিফ মসজিদে নববিতে রাসূল (সা.) সাহাবিদের সামনে নসিহত করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন, সলফে সালেহিনরা ইসলাম প্রচারে যে নসিহতগুলো করেছেন_ সেটিই মূলত ওয়াজ। তাবলিগি বয়ান দ্বারা সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। তবে তাবলিগি বয়ান ও ওয়াজ-নসিহত এক নয়। তার কারণ মাহফিলের মধ্যে কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা, কিয়াস, শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত, মারেফতের আলোচনা থাকে। প্রত্যেকটি মানুষ পূর্ণাঙ্গভাবে মুসলমান হিসেবে গড়ে ওঠে। মাহফিল বড় ধরনের তাবলিগের অন্তর্ভুক্ত। মাহফিলের আলোচনার মাধ্যমে মানুষের অন্তরের রোগ দূরীভূত হয়। ধর্মহীন সংস্কৃতি মানুষকে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে পারে না মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল হাই নিজামী খতিব, বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদ, ঝালকাঠি মাহফিলের মাধ্যমে নসিহত করা হয়, নৈতিক শিক্ষাদান করা হয়। এ নৈতিক শিক্ষার মধ্যেই রয়েছে_ সততা, উদারতা, দয়া, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ইত্যাদি। যদি একজন মানুষকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায়, তাহলে সে ব্যক্তি অন্যের প্রতি জুলুম করবে না। মানুষের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করবে না। এলাকার মানুষ তার হাত ও মুখ থেকে যখনই নিরাপদ থাকবে, তখনই তার প্রতি মানুষের উদারতা বাড়বে। পরস্পর সহনশীল আচরণ করবে। এতে আন্তরিকতার পরিধি বাড়বে। ইসলামী সংস্কৃতি ও অনৈসলামিক সংস্কৃতি_ দুটোর প্রভাবই মানবজীবনে কমবেশি বিদ্যমান। চিরন্তন সত্য, ধর্মহীন সংস্কৃতি কখনোই মানুষকে আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে পারে না। ইসলামী সংস্কৃতি সব সময় মানুষকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। তবে ইসলামী সংস্কৃতি বিকাশে চাই জ্ঞানগর্ভ পরিকল্পনা। মাহফিলের মাধ্যমে মানুষের মাঝে ঐক্যের বন্ধন তৈরি হয় মাওলানা হাফেজ কাজী মারুফ বিল্লাহ খতিব, বৃহত্তর জাজিরা কেন্দ্রীয় মসজিদ, কেরানীগঞ্জ আমাদের সংস্কৃতি ও অন্যান্য কাজের মতো ওয়াজ-মাহফিল আমাদের জীবনের একটি অংশ। যতদিন দ্বীনের দাওয়াত অব্যাহত থাকবে ততদিন এ দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা, সৌহার্দ, ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় থাকবে। যখনই ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ হয়ে যাবে, তখনই এ দেশে অশান্তি ও অরাজকতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে। ওয়াজ-মাহফিল এখন যা হচ্ছে, এর চেয়ে আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন। তরুণ সমাজকে মাহফিল শোনার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। মাহফিলে একই মঞ্চে একাধিক বক্তার উপস্থিতি ও একাধিক বিষয়ে একমত পোষণ করার মধ্য দিয়ে যেমন অনৈক্য দূর হয়, তেমনি সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরনের ঐক্য তৈরি হয় বিধায় মাহফিলকে সফল সমাবেশ বলা চলে। * সাক্ষাৎকার : মুহাম্মদ আবদুল কাহহার

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়