Thursday, December 18

ঠাণ্ডাজ্বর প্রতিরোধে গ্রহণ করবেন যেসব খাবার


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: হালকা কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় সারাদেশে এখন চলছে শীতের আমেজ। শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে চলছে হরেক রকমের শীতের পিঠা আর খেজুর রস খাওয়ার ধুম। আনন্দবার্তা নিয়ে শীত হাজির হলেও এর মধ্যেও কারো কারো জন্য শীত বিভীষিকা হয়ে ওঠে। কারণ তারা প্রায়ই ঠাণ্ডাজ্বর বা সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হতে থাকেন। যতই উষ্ণ কাপড়চোপড়, লেপ-কম্বল ব্যবহার করা হোক না কেন, তাদের অবধারিতভাবে ভুগতেই হয়। কী খাবার খেলে শীত থেকে কিছুটা হেলেও বাঁচা যায় এসব ব্যাপারে লিখছেন ডা. মোশরাত জাহান শীতে ঠাণ্ডাজ্বর প্রতিরোধে দেহের প্রতিরোধব্যবস্থাকে জোরদার করাই শ্রেয়। এ কাজে সহায়তা করতে পারে কিছু ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যা আমাদের খাদ্যে উপস্থিত থাকে। ফু প্রতিরোধী কপার: রক্তের অন্যতম উপাদান শ্বেতকণিকা, যারা জীবাণু প্রতিরোধের ক্ষেত্রে অন্যতম যোদ্ধা হিসেবে কাজ করে। দেহকে রক্ষা করতে হলে তাদের প্রয়োজনমতো পুষ্টি দিতে হবে। এ তালিকায় প্রথমে আসবে কপার, যা কণিকাগুলোর বৃদ্ধিতে অনেক সহায়তা করবে। কপারসমৃদ্ধ খাদ্যের মধ্যে আছে সেমাই, ঝুড়ি, শিম, ডাল, মটরশুঁটি, কেশর আলু, ঢেঁপ, ওলকচু, শামুক, মানকচু ও চকোলেট। ফু প্রতিরোধী ভিটামিন-ই: অন্যান্য ক্ষেত্রের মতোই বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। ৬৫ বছরের পর সুস্থ বৃদ্ধরাও খুব কম সাইটোকাইন নামক জীবাণু রোধের রাসায়নিক মাধ্যমটি উৎপাদন করতে পারে; দেহে প্রবেশকারী জীবাণু গলধকরণকারী ম্যাক্রোফেজ কম থাকে; ন্যাচারাল কিলার কোষও কমে যায়। আর অতিরিক্ত ভিটামিন ই দিলে প্রয়োজনীয় সাইটোকাইন উৎপাদন দ্বিগুণ পর্যন্ত হতে পারে। অন্য কথায়, ভিটামিন-ই রোগ প্রতিরোধের কিছু কিছু ব্যবস্থাকে দ্বিগুণ হারে কাজে লাগায়। ভিটামিন-ই-এর উৎস হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের বীজ, তিল, চীনাবাদাম, গম, লেটুসপাতা, জব, ভুট্টা উদ্ভিজ তেল, মৎস্য ও মৎস্য চর্বি, ডিম ও মুরগির মাংস। ফু প্রতিরোধী ফলিক এসিড ও ভিটামিন বি১২ জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে যখন কোষের সংখ্যা খুব দ্রুত বাড়তে থাকে তখন ফলিক এসিড ও ভিটামিন-বি ১২ খুব প্রয়োজন হয়ে পড়ে। জিংকের মতোই এ ভিটামিনগুলো (বি ভিটামিন) হাড়ের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে থাকে। আর হাড়ের ভেতরে অস্থিমজ্জাই এসব কোষ তৈরির কারখানাটি অবস্থিত। লেটুসপাতা, বাঁধাকপি, বৃক্ক, শিম, কমলা, সবুজ পাতাওয়ালা শাক, বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, জব, ভুট্টা ইত্যাদিতে প্রচুর ফলিক এসিড থাকে। ভিটামিন বি১২ শুধু প্রাণিজ খাদ্য যেমন- কলিজা, ডিম ও দুধে থাকে। ফু প্রতিরোধী জিংক: দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে সজীব রাখতে জিংক অপরিহার্য। জিংকের অসংখ্য কাজের মধ্যে অন্যতম হলো অস্থিমজ্জার জীবাণু বিধ্বংসী কোষগুলোর উৎপাদন তদারকি করা। এটি থাইনাস গ্রন্থিরও খোঁজখবর রাখে। থাইনাসে শ্বেতকণিকা বিশেষভাবে পরিবর্তিত হয়ে ‘টি’ কোষ তৈরি করে। জিংকের অন্যতম উৎস হলো বিভিন্ন রকম ডাল, মটরশুঁটি, তিল, তিসি, শস্যদানা, গরুর গোশত ও সামুদ্রিক উদ্ভিদ। ‘ফু’ প্রতিরোধী কোয়ার্সেটিন: দেহে আক্রমণকারী ভাইরাসগুলো দেহকোষকে ধ্বংস করার পর দেহে বেশ কিছু ‘যুক্তমৌল’ (ফ্রি র‌্যাডিকেল) জমা হয় বা দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে যেকোনো সময় উড়িয়ে দিতে পারে। কোয়ার্সেটিন এক ধরনের প্রাকৃতিক উদ্ভিজ রাসায়নিক পদার্থ যা শাকসবজি ও ফলমূল প্রচুর পরিমাণে জমা থাকে, ওই সব মুক্ত মৌলকে নিষ্ক্রিয় করে প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সচল রাখে। কোয়ার্সেটিনের অন্যতম উৎসব হলো পেঁয়াজ,আপেল (বিশেষ করে আপেলের ত্বক), কালো চা, রসুন, জাম ও জামজাতীয় ফল, আঙ্গুর ও টমেটো।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়