Monday, December 15

চট্টগ্রামে নির্বাচনী হাওয়া, প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ


চট্টগ্রাম: তফসিল ঘোষণা হয়নি এখনো। তবে সময় ঘনিয়ে আসা আর নির্বাচন কমিশনের আভাসের প্রেক্ষিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বইছে সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনী হাওয়া। প্রার্থী হতে ইচ্ছুক রাজনৈতিক নেতা ও অনুসারীদের দৌড়ঝাঁপও শুরু হয়ে গেছে। তাদের তৎপরতা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। নগরীর অলি-গলিতে রঙিন পোষ্টার সাঁটানো, মতবিনিময় সভা, আর্শীবাদ লাভে শীর্ষ নেতাদের কাছে ধর্ণা দেওয়া থেকে শুরু করে নেতাকর্মীদের সন্তুষ্ট রাখার মত সব ধরনের তৎপরতা চলছে নগরীর সর্বত্র। যদিও তফসিল ঘোষণার আগে এসব তৎপরতার অনেকটাই বেআইনী বলে জানান নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান, ২০১০ সালের ১৭ জুন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ম›জুর আলম। সে হিসেবে মেয়াদপূর্তির আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিয়ম রয়েছে। তাছাড়া চলতি বছরের শুরুর দিকে সরকার চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠানে উদ্যোগ নেন। যা পরে পিছিয়ে যায়। ফলে গত ৭ আগস্ট নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে যথাসময়ে চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আভাস দেওয়া হয়। এতে আগামী এপ্রিল বা মে মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর একে ঘিরেই চট্টগ্রামে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তবে তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনী প্রচারণা সম্পূর্ণ বেআইনি। এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ পেলে নির্বাচন কমিশন অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তা খোরশেদ আলম। এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের কাছে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের কদর বেড়ে গেছে উল্লেখ করে কতিপয় নেতাকর্মী জানান, প্রার্থীরা নেতাকর্মীদের ডেকে হাতে টাকা পয়সা ধরিয়ে দিচ্ছে এবং এর পর পোস্টার, ব্যানার লাগানো থেকে শুরু করে আয়োজন করা হচ্ছে মতবিনিময় সভাও। যদিও পোষ্টার ও মতবিনিময় সভার ভাষা সরাসরি প্রচারণার মত নয়। সরেজমিনে দেখা যায়, পোস্টার ব্যানার দেখে প্রার্থীদের প্রচারণা বিষয়টি মনে হয় না সরাসরি। তবে অনুসারিরাই বলছে ‘আসন্ন চসিক নির্বাচনে তমুক দলের প্রার্থী হিসেবে অমুখ ভাইকে’ মেয়র পদে দেখতে চাই। আর মতবিনিময় সভায় প্রার্থী হতে ইচ্ছুকরা নিজেদের সেবা ও এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরে গুণের প্রচারণা করছেন। এমনকি মেজবানিও খাওয়ানো হচ্ছে এসব সভায়। নির্বাচনকে ঘিরে মাঠে ময়দানে সরব হয়ে উঠেছেন এমন নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি নূরুল ইসলাম বিএসসি, খোরশেদ আলম সুজন, সাধারণ স¤পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। আর বিএনপি নেতাদের মধ্যে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আমির খসরু ও মীর নাছিরও প্রার্থী হতে পারেন। তাছাড়া বর্তমান মেয়র মঞ্জুর আলমও বিএনপি সমর্থিত হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে জানান বিএনপির কতিপয় শীর্ষ নেতারা। তবে এ বিষয়ে ডা. শাহাদাৎ হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, জ্যেষ্ঠ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, আমির খসরু ও মীর নাছিরের মেয়র পদে নির্বাচন করার কোন সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া বর্তমান মেয়র মঞ্জুর আলম বিএনপির ব্যানার নিয়ে মেয়র হওয়ার পর আওয়ামী লীগের দালালি করেছেন। যা বিএনপি নেতাকর্মীরা ভুলে যায়নি। শুধু তাই নয়, মেয়র হিসেবে নানা ব্যর্থতার দায়ে চট্টগ্রামবাসী আস্থা হারিয়েছেন তাঁর উপর। এ অবস্থায় বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে আমিই মেয়র পদে প্রার্থী হবো। এদিকে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন চসিক নির্বাচনে একক প্রার্থী হওয়ার দারি করে বলেন, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম মেয়র হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে সরকারি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রমকে নিজের সাফল্য হিসেবে প্রচার করছে। যা সংগঠনের নীতিমালাবিরোধী। এ কারনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে শোকজও করা হয়েছে। এছাড়া জাতীয় পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির বহিস্কৃত সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠও চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে মাঠে ময়দানে চষে বেড়াচ্ছেন। তবে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা শামসুল আলম নাশকতার অভিযোগে জেল-হাজতে থাকায় মেয়র পদে নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের কেউ তৎপরতা চালাতে দেখা যায়নি। বিগত দুটি মেয়র নির্বাচনে মাওলানা সামশুল আলমই জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন । চসিক নির্বাচন নিয়ে আগামীকাল যাবে দ্বিতীয় কিস্তি

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়