কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক : এয়ার এশিয়া ইন্দোনেশিয়ার নিখোঁজ বিমানটির
তল্লাশি অভিযানে নিয়োজিত একটি ইন্দোনেশিয় হেলিকপ্টার সোমবার জাভা সাগরে
দুটি তেলের রেখা আবিষ্কার করেছে। অপরদিকে অস্ট্রেলিয় একটি বিমানও জাভা
সাগরেই কিছু ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেছে। তবে ওই তেলের রেখা এবং বস্তুগুলো
১৬২ জন আরোহী নিয়ে রবিবার সকালে নিখোঁজ হওয়া এয়ার এশিয়া ইন্দোনেশিয়ার বিমান
ফ্লাইট কিউজেড৮৫০৫ এর সঙ্গে যুক্ত কিনা তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে
না।
তবে কর্তৃপক্ষ বিমানটির ভাগ্যে ভয়ানক পরিণতি ছাড়া অন্য কিছুরই প্রত্যাশা করছেন না। রবিবার সকালে নিখোঁজ হওয়ার আগে বিমানটির পাইলট আরও উঁচু দিয়ে উড়ে চলার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু সেখানে আরেকটি বিমান থাকায় কর্তৃপক্ষ সে অনুমতি দেয়নি।
ইন্দোনেশিয়ার তল্লাশি অভিযান দলের নেতৃত্বে থাকা হেনরি বামবাং সোলিস্টিয়ো বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা নিখোঁজ হওয়ার আগে বিমানটির অবস্থান সম্পর্কিত সব তথ্য-উপাত্ত ঘেটে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, বিমানটি সাগরেই বিধ্বস্ত হয়েছে। আর ধারণা করা হচ্ছে যে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর জাভা সাগরের তলদেশেই নিমজ্জিত হয়ে পড়ে রয়েছে।’
রবিবার ভোরে ইন্দোনেশিয়ার সুরাবায়ার জুয়ান্দা বিমান বন্দর থেকে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমান বন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করার এক ঘন্টা পর কালিমাতান (বোর্নিও) ও জাভা দ্বীপের মধ্যবর্তী জাভা সাগরের আকাশে ভারী মেঘমালা ও ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হয়ে যায় বিমানটি।
জাকার্তায় অবস্থিত ইন্দোনেশিয় বিমান বাহিনীর ঘাঁটির কমাণ্ডার রিয়ার মার্শাল ডুয়ি পুত্রান্তো বলেন, তল্লাশি অভিযানে নিয়োজিত অস্ট্রেলিয় বিমান ওরিয়ন নাঙ্গকা দ্বীপের কাছে কিছু সন্দেহজনক বস্তু আবিষ্কার করেছে। কালিমান্তান দ্বীপের কেন্দ্রস্থল থেকে ১০০ মাইল আর বিমানটির নিখোঁজ হওয়ার স্থান থেকে ৭০০ মাইল দূরে সাগরে ভাসমান ওই বস্তুগুলির হদিস মেলে।
অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার বিমান বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার মার্শাল হাদি তিজাহনান্তো মেট্রো টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তল্লাশি অভিযানে নিয়োজিত একটি ইন্দোনেশিয় হেলিকপ্টার জাভা সাগরে দুটি ভাসমান তেলের রেখার সন্ধান পেয়েছে। বেলিতুঙ্গ দ্বীপের কাছে ওই ভাসমান তেলের রেখা দুটির দেখা পায় ইন্দোনেশিয় হেলিকপ্টার। ওই জায়গাটিই বরং বিমানটির নিখোঁজ হওয়ার স্থানের বেশি নিকটে। ভাসমান তেলের রেখা দু’টি থেকে তেল সংগ্রহ করে তা ওই বিমানটি থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হবেও বলে জানান তিনি।
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এয়ার এশিয়া ইন্দোনেশিয়ার পরিচালক বামবাং তিজাহজোনো বলেন, বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার আগে সর্বশেষ বিমানটির একজন পাইলট দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এড়ানোর জন্য ৩২ হাজার ফুট উচু দিয়ে নির্ধারিত গতিপথ ছেড়ে আরো উপরে উঠে ৩৮ হাজার ফুট উচু দিয়ে উড়ে চলার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু সেখানে আরেকটি বিমান থাকায় তাৎক্ষণিকভাবেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম থেকে ওই অনুমতি দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু যখন ওই অনুমতি দেওয়া সম্ভব হতো ততক্ষণে বিমানটি রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। বিমানটির ককপিট থেকে পাইলটের সর্বশেষ যোগাযোগের ৪ মিনিট পরই সেটি কন্ট্রোল রুমের রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
সুরাবায়া বিমান ঘাঁটির নেভাল এভিয়েশন সেন্টারের পরিচালক ফার্স্ট অ্যাডমিরাল সিগিত সেতিয়ানা জানান ইন্দোনেশিয় নৌ-বাহিনীর ১২টি জাহাজ, পাঁচটি বিমান, তিনটি হেলিকপ্টার এবং বেশ কয়েকটি যুদ্ধ জাহাজ তল্লাশি অভিযানে নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি জাহাজ ও বিমান এবং অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমানও এই তল্লাশি অভিযানে যোগ দিয়েছে।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়