Friday, December 12

শিশু-কিশোরদের অপসংস্কৃতি থেকে দূরে রাখুন


মাওলানা জিল্লুরহমান ফারুকী খতিব, হিজবুল্লাহ জামে মসজিদ, চাঁদপুর সম্মানিত মুসল্লিরা! মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে অসংখ্য-অগণিত শুকরিয়া আদায় করছি, যিনি আমাদের পবিত্র সফর মাসের এ জুমায় তার ঘরে ইবাদতের জন্য হাজির হওয়ার তৌফিক দান করেছেন। আমাদের দুনিয়ার এ জীবনের প্রিয়তম বস্তু ও হৃদয়ের অন্যতম আনন্দ হলো সন্তান-সন্ততি। পাশাপাশি আখেরাতের জীবনেরও সঙ্গী ও আনন্দ তারা। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে ঘোষণা করা হয়েছে, জান্নাতে মোমিনরা তাদের সন্তানদের সাহচার্য উপভোগ করবেন। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন, 'এবং যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তান-সন্ততি, যারা ঈমানের বিষয়ে তাদের অনুগামী হয়েছে, তাদের সঙ্গে মিলিত করবো তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল কিছুমাত্র হ্রাস করবো না।' (সূরা তুর : ২১)। প্রিয় মুসলি্লরা! সন্তানদের দুনিয়া ও আখেরাতে সত্যিকারের আনন্দের উৎস বানাতে বাবা-মায়ের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে সন্তান আনন্দের পরিবর্তে চিরস্থায়ী পরিতাপের কারণ হতে পারে। এজন্য সন্তানকে দৈহিক, আত্মিক, মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী, স্বাবলম্বী ও সম্মানিত রূপে গড়ে তোলা বাবা-মায়ের মূল দায়িত্ব। প্রথম যে বিষয়টি শিশু-কিশোরদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে তা হলো, সততা ও ধার্মিকতা। তারা ইসলামের সঠিক বিশ্বাস, কর্ম ও আচরণ শিখবে এবং পালন করবে। এছাড়া স্বার্থপরতা, ধোঁকাবাজি, মোনাফিকি, সৃষ্টির অকল্যাণ ইত্যাদি যেসব বিষয় আল্লাহ নিষেধ করেছেন- তা তারা ঘৃণা করবে এবং বর্জন করবে। আল্লাহর ভয় তাদের হৃদয়মূলে বদ্ধ করে দিতে হবে। নামাজ, রোজা, জাকাত, জিকির, সৃষ্টির সেবা, সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজে নিষেধ ইত্যাদি সব দায়িত্ব তারা আগ্রহভরে পালন করবে। সন্তানদের এভাবে তৈরি করা বাবা-মায়ের অবধারিত কর্তব্য। অন্যদিকে অপসংস্কৃতি ও অশ্লীলতা থেকে শিশু-কিশোরদের দূরে রাখতে অভিভাবকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির এ যুগে, মিডিয়ার কল্যাণে ঘরে বসেই, এমনকি হাতের মুঠোয় এমনসব বস্তু লাভ করে থাকি, যা দ্বারা আমাদের শিশু-কিশোররা সহজেই ধ্বংস হতে পারে। আকাশ সংস্কৃতি, চরিত্র বিনষ্টকারী সিনেমা, নাটক, গান থেকে শিশু-কিশোরদের অবশ্যই বিরত রাখতে হবে। মিডিয়ার ভালো দিকগুলো গ্রহণ এবং মন্দ দিকগুলো বর্জন করে তারা যেন তাদের জীবনকে আলোকিত জীবন হিসেবে গঠন করতে পারে, সেদিকেই আমাদের সবার সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। অপসংস্কৃতির বিষাক্ত ছোঁয়ায় আজ শিশু-কিশোররা অন্ধকারের অতল তলে হারিয়ে যাচ্ছে। নিজস্ব চিন্তা-চেতনা, সভ্যতা-সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়ছে। শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের এ দেশে যা আমাদের জন্য মারাত্মক দুঃসংবাদ বৈ আর কিছুই নয়। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের খেদমতে অনুরোধ করব, আসুন আমরা শিশু-কিশোরদের অপসংস্কৃতির করাল গ্রাস থেকে ফেরাতে প্রাণপণ চেষ্টা করি। ছোটবেলা থেকেই তাদের চরিত্র গঠনে মনোযোগী হই। আসুন একটি সুন্দর সমাজ ও দেশ গঠনে এগিয়ে আসি। অনুলিখন : এম বায়েজীদ হোসাইন

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়