Sunday, December 28

ধামরাইয়ে মধু চাষে সাফল্য


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: শুধুমাত্র সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি চাষের ফলে ধামরাই উপজেলায় সরিষা ও মধু চাষে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ধারাবাহিকভাবে গত ১০ বছরে উপজেলাটির হাজারো কৃষক পরিবার সরিষা ও মধু চাষ করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। শীতের বারতা আর কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল বেলায় সুবিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে বইছে সবুজের সমারোহ। বিস্তীর্ণ মাঠে সবুজের সমারোহের মাঝেই বাতাসে হিন্দোলিত হচ্ছে- হলুদ সরষের পরাগায়ন। ধামরাইয়ের এই অঞ্চলটিতে সরিষা মৌসুমে মৌমাছিদের গুনগুনিয়ে গান গাওয়াই মনে করিয়ে দেয় সরিষা ফলনে কৃষকদের সফলতার কথা। গাজীপুর বিসিকের অধীনে আটিপাড়া এই গ্রামের মতই ইকুরিয়া, হাটুরিয়া, বাংলাপাড়া ও মালঞ্চসহ প্রায় ৮-১০টি গ্রামে এখন বইছে মৌমাছির গুঞ্জন আর হলুদ সরিষার সমারোহ। ইতোমধ্যেই অনেক এলাকায় বেকাররা সরিষা চাষ করে ব্যাপক সফলতা পাওয়ায় এই অঞ্চলের অনাবাদী জমিগুলোতেও এখন সরিষা চাষ হচ্ছে। আটিপাড়া এলাকার সাবলম্বী যুবক আলতাফ (৩৫) জানান, নিজ জমিতে সরিষা ক্ষেতে মধু চাষের মাধ্যমে তার সুদিন ফিরেছে। সরিষার পাশাপাশি মধু চাষের মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ে তিনি এখন স্বচ্ছল জীবন-যাপন করছেন। ধামরাইয়ে মধু চাষে সাফল্য এলাকার প্রবীণ এক কৃষক আকবর আলী (৬৫) জানালেন, কয়েক যুগ ধরে মৌমাছি ও সরিষা চাষ করে সফল হওয়ার গল্প। তিনি দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে সরিষা ক্ষেতে মৌচাষ করে আসছেন। আর পেশাতেই তিনি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। গাজীপুর বিসিকের মৌচাষ প্রকল্পের প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা মোবাচ্ছের হোসেন জানান, বছরের বাকি সময় প্রশিক্ষণ দিলেও এই মৌসুমে তারা এই অঞ্চল থেকে মাসে সাড়ে ৬শ’ কেজি মধু আহরণ করেন। ধামরাইয়ে মধু চাষে সাফল্য উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, ১০ বছর আগে এই অঞ্চলে জমিগুলো পতিত পড়ে থাকলেও মৌচাষে কেউ আগ্রহী হত না, কিন্তু বর্তমানে চিত্র ভিন্ন। এক সময় এখানকার কৃষকরা সরিষা ক্ষেতে মধু চাষে আগ্রহী ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সরিষার ক্ষেতে মধু চাষের মাধ্যমে বাড়তি আয়ের কথা জেনে তারা এখন ব্যাপক পরিসরে মধু চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে একদিকে মৌমাছি সরিষার ফুলের ক্ষতিকারক “জাম” পোকাকে নিধনের মাধ্যমে সরিষার ফলন বাড়ায়। অপরদিকে এ পোকা দমনে অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই এসমস্যা থেকে তারা আশানুরূপ সরিষার ফলনের পাশাপাশি আহরিত মধু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। আর মধু চাষে কৃষকদের আগ্রহী করার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে উপজেলার কৃষি অফিস থেকে মাঠ পর্যাযে বিভিন্ন কর্মশালার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। তাই এ পদ্ধতি সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হলে অতিরিক্ত সরিষা চাষের মাধ্যমে যেমন ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণ করা যাবে। তেমনি মধু উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। -----ঢাকা টাইমস।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়