Monday, November 10

অ্যানাকোন্ডার পেটে অ্যাডভেঞ্চারে যাবেন তিনি


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: সিনেমায় দেখা গেছে, আস্ত একটা মানুষকে গিলে খাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার বৃহৎ সাপ অ্যানাকোন্ডা। এবার সেই সাপের পেটে সত্যি সত্যিই যেতে চলেছেন এক ব্যক্তি। তাও আবার স্বেচ্ছায়। শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই জানিয়েছেন পল রসোলি। ডিসকভারিতে এই দৃশ্য সরাসরি দেখানো হবে বলে জানা গেছে। ওয়াইন্ডলাইফের চিত্র পরিচালক পল রসোলি জানিয়েছেন, অ্যানাকোন্ডার পেটের ভিতর যাবেন তিনি। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই দৃশ্য ডিসকভারিতে সরাসরি দেখানো হবে বলেও জানা গেছে। অ্যানাকোন্ডার পেটে অ্যাডভেঞ্চারে যাবেন তিনি তবে সাপের পেটে যাওয়ার আগে বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন। তাই ফ্যাবরিকের তৈরি একটি বিশেষ পোশাকও তৈরি করা হয়েছে। এই পোশাকটি পরেই তিনি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাপ অ্যানাকোন্ডার পেটে যেতে চলেছেন পল। পোশাকটি সাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এই পোশাকের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে এই পোশাক ছোট সাপের কামড় থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হলেও অ্যানাকোন্ডার পেটে যাওয়ার জন্য নিরাপদ নয়। তবে সত্যিই নিরাপদ কিনা তা কীভাবে পরীক্ষা করা হবে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পোশাক নিয়ে যে প্রশ্নই থাকুক না কেন সাপের পেটে যাওয়ার লাইভ দৃশ্য দেখার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি যে মুখিয়ে আছেন সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পরিবেশবাদীরা সোচ্চার পল রোসোলি নামে এক বণ্যপ্রাণী চিত্রনির্মাতা স্ব-নির্মিত ‘স্নেকপ্রুফ’ পোশাক পরে আমাজনের জঙ্গলে বসবাসকারী দানবীয় প্রজাতির অজগর অ্যানাকোন্ডার পেটের ভেতরে ঢুকবেন। আর পুরো ঘটনাটির দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করবে ডিসকভারি চ্যানেল। এরপর ভিডিওটি আগামী ৭ ডিসেম্বর ডিসকভারি চ্যানেলের বিশেষ অনুষ্ঠান হিসেবে সম্প্রচার করা হবে। এমনই খবর দিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ডেইলি মেইল। অ্যানাকোন্ডার পেটে অ্যাডভেঞ্চারে যাবেন তিনি পল রোসোলি জানান স্ব-নির্মিত একটি ভারী স্নেকপ্রুফ পোশাক পরে তিনি স্বেচ্ছায় আমাজান জঙ্গলে বসবাসকারী অ্যানাকোন্ডা প্রজাতির অজগরের খাদ্য হবেন। উল্লেখ্য, অ্যানাকোন্ডা প্রজাতির একটি অজগর সর্বোচ্চ ৩০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এদিকে বণ্যপ্রাণী প্রেমীরা পল রোসোলি ও ডিসকভারি চ্যানেলের এই উদ্যোগকে ‘বণ্যপ্রাণীর সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মাত্রার অপব্যবহার’ হবে বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে ২৬ বছর বয়সী পল রোসোলি বণ্যপ্রাণী প্রেমীদের এই অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ‘তোমরা আমাকে চেনো না। আমি কখনোই কোনও প্রাণীকে আঘাত করবো না। কিন্তু অ্যানাকোন্ডা কীভাবে কোনও মানুষকে গিলে খায় সেটাও তোমাদের দেখা উচিৎ!’ বণ্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ এবং ‘ইন্ডিয়ানা জোনস অফ দ্য অ্যামাজান’ খেতাবপ্রাপ্ত পল রোসোলির আমাজানের খুটিনাটি সব বিষয়ের উপরই দখল রয়েছে। তার ওয়েবসাইট বায়োডাটা ঘেঁটে আরও দেখা গেছে যে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল ও পেরুর বনবাদাড়েও চষে বেড়িয়েছেন তিনি। আর মাত্র ১৮ বছর বয়স থেকেই তিনি পেরুর আমাজান জঙ্গলে অভিযান শুরু করেন। অ্যানাকোন্ডার পেটে অ্যাডভেঞ্চারে যাবেন তিনি তবে তিনি অভিজ্ঞ হোন বা না হোন তাতে কিছুই যায় আসে না বণ্যপ্রাণী প্রেমীদের। বণ্যপ্রাণী প্রেমীরা ডিসকভারি চ্যানেলের প্রতি পল রোসোলির পুরো শো’টাই বাতিল করে দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। চেঞ্জ ডট ওআরজি নামের একটি ওয়েবসাইট এ ব্যাপারে একটি পিটিশনে বণ্যপ্রাণী প্রেমীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে নেমেছে। এ পর্যন্ত ৫০০ জন ওই পিটিশিনে স্বাক্ষর করেছেন।
পিটিশনে বলা হয়েছে, এ ধরনের কান্ড হবে কোনও বণ্যপ্রাণীর সম্ভাব্য সর্বোচ্চ মাত্রার অপব্যবহার। এতে অজগরটির মৃত্যুও ঘটতে পারে। কার‌ণ, একটি পূর্ণ-বয়স্ক সবুজ অ্যানাকোন্ডার পক্ষে একজন পূর্ণ-বয়স্ক মানুষের চওড়া কাঁধ পেটে ধারণ করা সম্ভব নয়। অ্যানাকোন্ডা প্রজাতির অজগররা সাধারণত, বণ্য শুকর, হরিণ, আমাজানের খালে বসবাসকারী করালজাতীয় প্রাণী ও কুমির ভক্ষণ করে বেঁচে থাকে। অ্যানাকোন্ডা প্রজাতির অজগরদের মানুষ ভক্ষণের প্রমাণিত কোনও ঘটনার বিবরণ নেই। সূতরাং একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অ্যানাকোন্ডার পেটে ঢোকাটা খুব সহজ কাজ হবে বলে মনে হয় না।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়