Monday, November 10

পবিত্রতা অর্জনে কুলুখ ব্যবহার


মুফতি হিফজুর রহমান প্রশ্ন : আমাদের এলাকায় একজন অশিক্ষিত লোক অনেক বছর বিদেশে ছিলেন। এ বছর তিনি দেশে এসেছেন। আগে ইসলাম সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। এখন তিনি নিজেকে আলেম হিসেবে দাবি করছেন। কিন্তু তার কথা ও মাসয়ালা আলেমদের সঙ্গে মিলছে না। কয়েক দিন ধরে আমি লক্ষ করলাম, তিনি প্রস্রাব করার পর শুধু পানি ব্যবহার করেন। ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করেন না। এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করলে, বললেন ঢিলা ব্যবহার করা নাকি কোরআন দ্বারা প্রমাণিত নয়। কোনো নবী নাকি ঢিলা ব্যবহার করার আদেশ দেননি এবং ঢিলা ব্যবহারের কোনো প্রমাণ শরিয়তে নেই। এটা নাকি বেদায়াত। তার কথাটির কি কোনো ভিত্তি আছে? আবদুল্লাহ যুবায়ের, ঢাকা উত্তর : নবী করিম (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে বর্ণিত হাদিস ও তাদের জীবন-প্রণালীতে পবিত্রতা অর্জনের তিনটি পদ্ধতির কথা বর্ণিত হয়েছে। শুধু পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন বা এস্তেঞ্জা করা, শুধু মাটির ঢিলা দ্বারা এস্তেঞ্জা করা এবং পানি ও ঢিলা উভয়টি ব্যবহার করে এস্তেঞ্জা করা। এর পক্ষে বিভিন্ন দলিল বিদ্যমান। যেমন হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) যখন প্রাকৃতিক প্রয়োজনে সাড়া দিতে গেলেন, তখন আমি একটি ছোট পাত্রে পানি নিয়ে এলে তিনি তা দ্বারা এস্তেঞ্জা করলেন। (আবু দাউদ শরিফ : ১/১৬)। অন্য একটি হাদিসে এসেছে, হজরত ওমর (রা.) একবার প্রস্রাব করলেন এবং তার লজ্জাস্থানকে মাটি দ্বারা মুছলেন এবং বললেন, এভাবেই রাসূল (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন। (তাবরানি শরিফ : ৫/২৯)। যারা প্রস্রাব-পায়খানার পর পবিত্রতা অর্জনের ক্ষেত্রে কুলুখ ও পানি উভয়টি ব্যবহার করেন কোরআন মজিদে তাদের প্রশংসা করা হয়েছে। এরশাদ হচ্ছে, 'সেখানে রয়েছে এমন কিছু লোক যারা ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে, আর আল্লাহ তায়ালা ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।' (সূরা তওবা : ১০৮)। হাদিস শরিফে আছে, কুফাবাসী সম্পর্কে যখন এ আয়াত নাজিল হলো, তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, আমরা ঢিলা ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে পানিও ব্যবহার করি। (বুলুগুল মারাম : ৩৩)। মোটকথা, তিনটি পদ্ধতির সবগুলোই শরিয়তসম্মত, কোনোটিই বেদায়াত নয়। তাই প্রশ্নকারী ব্যক্তির কথা অজ্ঞতাপ্রসূত ও ভিত্তিহীন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, শরিয়তের কোনো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি সওয়াবের পরিবর্তে গোনাহের কারণ হয়। এস্তেঞ্জায় ঢিলা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও লক্ষ রাখতে হবে, যেন সাধারণ ভদ্রতা, সম্ভ্রম ও সতর ঢাকার বিষয়টি লঙ্ঘিত না হয়। প্রধান মুফতি, জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মোহাম্মদপুর, ঢাকা

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়