সুমন হাওলাদার: ব্রিটিশ আমলে সুমদ্রে জাহাজ চ
লাচলের জন্য তৈরি কারা লাইট হাউটগুলোর (জাহাজের দিক নিদর্শনের) অবস্থা আজ অনেকটাই অস্তমিত। ১৬৬ বছর আগের এসব লাইজ হাউজগুলোর সমস্যা যেন প্রতিনিয়তেরই ঘটনা। এগুলো মেরামত বা সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশও সহজ লভ্য নয় বলে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর সূত্রে জানাগেছে। পাশাপাশি দেশের উপকুলীয় এলাকায় নতুন করে আরও চারটি লাইট হাউজ স্থাপনের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাতে সমুদ্রে জাহাজ চলাচল নির্বিঘœ করতে ইংরেজ শাসনামলে বাংলাদেশের উপকুলীয় এলাকা সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা নারিকেল জিঞ্জিরা, কক্সবাজার ও কুতুবদিয়া দ্বীপে তিনটি লাইট হাউজ তৈরি করা হয়েছিল। ১৮৪৬ সালে প্রথম তৈরি করা হয়েছিল কুতুবুদিয়া দ্বীপের লাইট হাউজ। এটির উচ্চতা ১২৮ ফিট। এটি প্রতি ১০ সেকেন্ড পরপর বাতি জ্বলে উঠে। যা রাতে অনেক দূর থেকেও দেখা যায়। সেন্টমার্টিন দ্বীপের লাইট হাউজটি ১২৮ ফিটউচু। প্রতি ৩০ সেকেন্ড পরপর বাতি জ্বলে উঠে। কক্সবাজারের লাইট হাউজটি ১৭৭ফিট উচু। প্রতি ১৫ সেকেন্ড পর পর এর বাতি জ্বলে ওঠে। বর্তমানে এগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। অথচ এর মাধ্যমে শুধু বিদেশী জাহাজই নয় অভ্যন্তরীণ জাহাজও নির্বিঘেœ সমুদ্রে রাতে চালাচল করে। কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে এসব লাইট হাউজ তার ঐতিহ্য হারাচ্ছে। হারাচ্ছে তার কার্মক্ষমতাও। তার পরেও এই খাতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকার আয় করছে ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব।
সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্রধান ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফখরুল ইসলাম ডিনিউজকে বলেন, প্রতিনিয়তই বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে। এ কারণে দেশের উপকুলীয় এলাকায় নতুন করে আরও ৪টি লাইট হাউজ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়। এগুলো কুয়াকাটা, দুবলার চর, ভোলা এবং মনপুরা দ্বীপে স্থপন করা হবে। এগুলো স্থাপনে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে কোরিয়ান সরকার। ‘গ্লোবাল মেরিটাইম ডিস্ট্রেস এন্ড সিগন্যাল সিস্টেমস (জিএমডিএসএস)’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণও করা হয়েছে। এর আওতায় এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এ প্রজেক্টের কারিগরী সহায়তাও দেবে কোরিয়া। তবে এ প্রকল্প পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের নিজস্ব ভবনের প্রয়োজন। যেখানে স্থাপন করা হবে ‘কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার’। ভবন ও আনুসাঙ্গীক স্থাপনা তৈরির জন্য সাড়ে তিন একর জমি প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ পেলে এ ভবনও তৈরি করে দেবে কোরিয়া। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩৬২ কোটি টাকা।
শেল্টার হাউস কাম পরিদর্শন বাংলো
দেশের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন বা নারিকেল জিঞ্জিরা এবং কতিুবদিয়ার অধিবাসীদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র ও লাইটহাউস দুটি পরিদর্শনের জন্য দুটি ‘শেল্টার হাউস কাম পরিদর্শন বাংলো’ তৈরি করার জন্যও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়। এ দুটি পরিদর্শন বাংলো তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই প্লান তৈরির কাজ শুরু করেছে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর। এ কাজে প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ হবে।
সূত্র জানায়, সরকারিভাবে এ দুটি জায়গায় বসবাসের সুযোগ নাই। নাই কোনও অবকাশ যাপনের অবকাঠামোও এ জন্য সেন্টমার্টিন এবং কুতুবদিয়ায় আধৃুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ বিলাশ বহুল পরিদর্শন বাংলো তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্মাণ শেষে সরকারি ভিজিটরদের বরাদ্দের পাশাপাশি সাধারণ পর্যটকদের কাছে এগুলো ভাড়াও দেওয়া হবে। ফলে আয় হবে রাজস্বও। পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তি বেদখলের হাত থেরে রক্ষা করা যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে স্থানীয়রা এখানে আশ্রয় নিতে পারবেন।