Monday, August 4

মাশরুম চাষে মেহেরপুরের ইকরামুলের ভাগ্য বদল


মেহেরপুর প্রতিনিধি: নিষ্ঠা, ধৈর্য্য আর পরিশ্রমে যে কাক্সিক্ষত সাফল্য ধরা দেয় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মেহেরপুরের ইকরামুল হক নামের এক বেকার যুবক। দরিদ্র পরিবারের সন্তান একরামুল মাশরুম চাষে অল্প দিনেই বেকারত্ব ঘুচিয়ে এক সফল মানুষ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন। এখন তিনি হাজারো বেকার যুবকের বাঁচার অনুপ্রেরণা। মাশরুম চাষ বেকার যুবকের সংসারের অভাব দূর হয়েছে। গাংনী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম কামারখালি। ২০১২ সালে এইচএসসি পাশ করে অর্থাভাবে লেখাপাড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। দারিদ্র্যতার কষাঘাতে যখন জর্জরিত ঠিক তখনই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহীন রেজা জুয়েলের সঙ্গে পরিচয়ের মধ্য তিনি বেকারত্ব ঘোচানোর পথ খুঁজে পান। তার পরামর্শে কুষ্টিয়া থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই বছরই শুরু করেন মাশরুম চাষ। ইকরামুলের বাড়ির একটি ঘরে মাচান ও মেঝেতে মাশরুম চাষ করেছেন। চাষ সম্পর্কে ইকরামুল জানান, স্থানীয় সহজলভ্য উপকরণ দিয়ে একেবারেই অল্প খরচে ঘরে বসে মাশরুম চাষ করা যায়। পলিথিনের ব্যাগে ভরা সিদ্ধ বিচুলীর মধ্যে মাশরুম বীজ বপন করার ১৮ দিনের মধ্যে মাশরুম তৈরি হয়ে যায়। তিনদিনের মধ্যে মাশরুম ফের তৈরি হয়। নামমাত্র অর্থ বিনিয়োগ করে ঘরে বসেই প্রতি মাসে আয় করছেন ৮-১০ হাজার টাকা। পুষ্টিকর ঔষধি গুণসম্পন্ন সবজি হিসেবে মাশরুমের বেশ কদর রয়েছে। তাই স্থানীয়ভাবে এর ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে। ইকরামুলের বাড়িতে প্রথম প্রথম কেউ মাশরুম খেতে রাজি হয়নি ব্যাঙের ছাতা বলে। এখন মাশরুম নিয়ে কাড়াকাড়ি হয়। মাংস কিংবা মাংসের বিকল্প পুষ্টি হিসেবে রান্নায় সুস্বাদু মাশরুমের জুড়ি নেই। কামারখালি গ্রামের হায়াত আলী জানান তারাও আগে মাশরুম খেত না। ইকরামুলের দেখাদেখি এখন তারা মারুম খাওয়া শিখেছেন। হায়াত আলীও এখন মাশরুম চাষের স্বপ্ন দেখছেন। বারাদি হর্টিকালচার সেন্টারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জাহিদুল আমিন জানান, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ক্যান্সার, হৃদরোগ, মেদভূড়ি, জন্ডিস ও রক্তস্বল্পতাসহ জটিল রোগ প্রতিরোধে মাশরুমের জুড়ি নেই। শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের আদর্শ খাবার এটি। তাই শুধু বেকার যুবকরাই নয় যেকোন পেশার মানুষ একেবারেই স্বল্প সময় ব্যয় করে সম্ভাবনাময় মাশরুম চাষ করতে পারেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়