Thursday, March 20

বাংলাদেশ মাদক ব্যবহারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশ

ঢাকা: ‘মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হওয়া সত্ত্বেও গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল ও গোল্ডেন ক্রিসেন্টের মধ্যবর্তী ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ মাদক ব্যবহারের জন্য ঝূঁকিপূর্ণ দেশ। আমাদের মাদক সমস্যা প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।’
বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কে এম মাইদুল ইসলামের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংসদে এ তথ্য দেন।

তিনি বলেন, ‘তিন দিক দিয়ে ভারতের সঙ্গে চার হাজার কিলোমিটার ও দক্ষিণ পূর্ব কোণে মিয়ানমারের সাথে আড়াইশ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত আরও একটি ভৌগলিক নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও শহরায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ইন্টারনেট ও আইটির ব্যাপক উন্নতির ও ব্যবহার, সামাজিক সচেতনতার অভাব ইত্যাদিকে মাদক সমস্যার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।’

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত, মিয়ানমার এবং পাকিস্তানের মাদক সিজারের তুলনামূলক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বাংলাদেশে মাদক পরিস্থিতি অতটা ভয়াবহ নয়। তাই মাদক নিয়ন্ত্রণের মত বহুমাত্রিক সমস্যা মোকাবেলায় এখনই সেনাবাহিনীর উপর দায়িত্ব দেয়া সমীচীন হবে না।’

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মিলে ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে ৯১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৭ বোতল ফেন্সিডিল, এক হাজার ২৩৩ কেজি হেরোইন, এক লাখ ৩৮ হাজার ২১৮ কেজি গাঁজা, নয় লাখ ৭০ হাজার ৮৬৮ অ্যাম্পুল ইনজেক্টিং ড্রাগস, ৮৮ লাখ ৯৮ হাজার ৩০৫ টি ইয়াবা ট্যাবলেট আটক করে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১৫ হাজার ৩৫৬টি মামলা করে ১৬ হাজার ২৯২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।’

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাদক সমস্যাকে মোকাবেলা করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসারসহ সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করছে। শুধুমাত্র অভিযান পরিচালনা ও মামলা রুজু করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে গণসচেতনতা সৃষ্টি ও সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের উপর জোর দেয়া প্রয়োজন।’

চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরীর এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নীতিমালা না থাকায় দেশে পুলিশ ফাঁড়ি ও ক্যাম্প স্থাপনের যাতীয় কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। ফাঁড়ি ও তদন্ত কেন্দ্রের জনবল কাঠামো একই ধরণের। আর তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনে নীতিমালাও রয়েছে। এ বিবেচনায় ফাঁড়ির বিকল্প বর্তমানে তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের বিদ্যমান নীতিমালার আলোকে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারের নিকট থেকে প্রস্তাব পাওয়া গেলে বিবেচনা করা হবে।’

এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মৃত্যু কারোই কাম্য নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব লাশ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর ব্যাপারে প্রশাসন তদন্ত করছে না এমনটি নয়। আমরা প্রতিটি বিষয়ে তদন্ত করছি। তদন্ত করে দেখছি এসব ঘটনার পেছনে কেউ জড়িত আছে কিনা। জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বাংলামেইল২৪ডটকম/

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়