ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম): জীবন মানে যুদ্ধ। এই যুদ্ধের এক লড়াকু সৈনিক হলেন
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর ইউনিয়নের পূর্ব কুটি চন্দ্রখানা গ্রামের
সামছুল হক (৬০)। তিনি অভাবের কাছে হার মানেননি। অভাবকে মোকাবেলা করতে হবে
কাজ দিয়ে এমন সাহস বুকে ধারণ করে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন ঘামঝড়া কাজে। কারো কাছে
হাত না পেতে ও অন্য কোন অবৈধ পথে না গিয়ে বয়স যখন তার ২৫ বছর তখন থেকে
তিনি শুরু করেন গৃহিনীদের মসলাদি বাটার বাটনা (শিলপাটা) কুটানোর কাজ। আজ
তার বয়স ৬০ বছর এখনো তিনি এ কাজই করছেন। সামছুল হক জানান, দীর্ঘ ৩৫ কছর ধরে
তিনি বাটনা কুটানোর কাজ করে জীবন সংসার চালাচ্ছেন। তার ভাগ্যে ৫ শতাংশ
জমির বসত ভিটা ছাড়া আর কোন সম্পত্তি জোটেনি। স্ত্রী, ৪ মেয়ে, ১ ছেলেসহ
পরিবারের ৭ সদস্যের সংসার তিনি এই বাটনা কুটানোর উপার্জনে চালিয়ে আসছেন। এর
মধ্যে এই উপার্জন থেকে ৩ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে তার ১ ছেলে ১ মেয়ে
স্কুলে লেখাপড়া করছে। তিনি বলেন, একটি বাটনা ১৫ থেকে ২০ টাকা মজুরীতে
কুটিয়ে প্রতিদিন গ্রাম ঘুরে তার আয় হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এই উপার্জনই তার
পাথেয়। তবে কেউ বাটনা কিনতে চাইলে তা মহাজনের কাছ থেকে কিনে এনে বিক্রি করে
একটি বাটনা থেকে আয় করেন ৫০ থেকে ৬০ টাকা। সামছুল হক দুঃখ প্রকাশ করে
বলেন, তার এই বাটনা কুটানোর আয় আগের মত আগের মত আর হচ্ছে না। কারণ বর্তমান
গৃহিনীদের মসলাদি দ্রব্য মেশিনে প্যাকেটজাত হয়ে বাজারে বিক্রি হওয়ায় শহর
থেকে শুরু করে গ্রাম গঞ্জেও বাটনার ব্যবহার কমে যাচ্ছে। আর এতে তার
উপার্জনে দেখা দিচ্ছে মন্দাভাব। উপায় না থাকায় তবুও আল্লাহ যতদিন সুস্থ
রাখবেন ততদিন পর্যন্ত এ কর্মেই থাকবেন এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বাটনা কুটার
শ্রমিক সামছুল হক।
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়