গাইবান্ধা:
গাইবান্ধায় সোমবার রাতে বনভোজনের বাস উল্টে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। তাদের
বাড়ি ফুলছড়ি উপজেলার মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামে মঙ্গলবার ছিল শোকের মাতম। গতকাল
সন্তানের লাশ দাফনের পর মা-বাবার আহাজারিতে গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও আহতরা অভিযোগ করেন, হেলপার দিয়ে বাস চালানোর কারণে
এই র্দুটনা ঘটে। এদিকে গতকাল কঞ্চিপাড়া খবিরিয়া আলিম মাদ্রাসায় কালো পতাকা
উত্তোলনসহ তিনদিনের কর্মসুচি ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেল- নিহত রাকিবের মা রশিদা বেগম বিছানায় ছেলের স্মৃতিচ্চারণ করে আহাজারি করছেন। পাশে রিকসা চালক বাবা খাজা মিয়া জীবন্ত লাশ হয়ে শুয়ে আছেন। আত্মীয়-স্বজনরা তাদের সান্তনা দিচ্ছেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে রশিদা বেগন বলছিলেন, পিকনিকে যাবার সমায় ছোলট্যা হামার একশো ট্যাকা নিয়া বললো, মা তোমার জন্নে সেনডেল আনমো। সেনডেল আনব্যার চায়া ছোলট্যা হামার লাশ হয়া আইলো। তোমরা হামার ছোলোক আনি দ্যাও। পাশের বাড়ির আঙ্গিনায় আহাজারি করছিলেন নিহত রাকিবের চাচাত ভাই নিহত মোকছেদুল ইসলামের মা মর্জিনা খাতুন। তিনি চিৎকার করে প্রলাপ বকছিলেন, ছোলট্যা কামলা দিয়া ২০০ ট্যাকা কামাই করি পিকনিকের ট্যাকা জোগার করচিলো। হামরাও মানা করি নাই, হাউস (আশা) করচে যাক। আইতোত খবোর পানো ছোলট্যা নাই। এসময় ঘরের ভিতর অবাগ হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন মোকছেদুলের বাবা মহুবর রহমান। এসময় নিহতের ছোট ভাই মেহেদুল (৮) হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল।
আনন্দের যাত্রা হলো শোকের যাত্রা: সোমবার সকাল ৮টায় কঞ্চিপাড়া খবিরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ১০৭ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারি দুইটি বাস ভাড়া নিয়ে আনন্দ যাত্রায় বের হন। তারা দিনাজপুর জেলার বিনোদন কেন্দ্র ’স্বপ্নপুরি’ তে যান। কিন্তু সকালের আনন্দের যাত্রা রাতে পরিণত হয় শোকের যাত্রায়। বনভোজন শেষে সেখান থেকে ফেরার পর একটি বাস গাইবান্ধা শহরে যাত্রাবিরতি করে। অপর বাসটি (ঢাকা-মেট্রো-জ-২৮৯৩) গাইবান্ধা শহর থেকে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ফুলছড়ি উপজেলার মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামের দিকে রওনা দেয়। বাসটি রাত সাড়ে ৯ টায় শহরের অদুরে পুলবন্দি ফলিয়া নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক্টরকে (কাকড়া) অতিক্রম করার সময় বাসটি উল্টে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে বাসের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে রাফিক ও মোকছেদুল নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানকে গতকাল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্ত করা হয়। মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আব্দুর রাজ্জাক ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সাবানা খাতুন গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাদ্রাসার আব্দুর রাজ্জাক ও সাবানা খাতুন গতকাল জানায়, আমরা দুইটি বাস নিয়ে বনভোজনে স্বপ্নপুরিতে যাই। ফেরার পর একটি বাস গাইবান্ধা শহরে যাত্রাবিরতি করে। আমাদের বহনকারি বাসের চালক তার সহকারিকে (হেলপার) বাস চালাতে দিয়ে তিনি শহরে নেমে পড়েন। নামার সময় চালক হেলপারকে বলেন-তুমি যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে আস। পরে আমাদের বাসটি রাত ৯টা ২৫ মিনিটে গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তারপর হেলপার দ্রুতগতিতে বাস চালাচ্ছিল। বাসটি পুলবন্দি ফলিয়া এলাকায় পৌঁছলে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। আমরা দুর্ঘটনার অনেক গল্প শুনেছি। সোমবার নিজেরাই কিভাবে দুর্ঘটনা হয় দেখলাম।
তিন দিনের শোক কর্মসুচি: নিহত রাকিব মিয়া ও মোকছেদুল ইসলাম যথাক্রমে কঞ্চিপাড়া খবিরিয়া আলিম মাদ্রাসার দশম ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। তাদের মৃত্যুতে গতকাল মঙ্গলবার মাদ্রাসা ছুটি দিয়ে তিনদিনের শোক কর্মসুচি ঘোষণা করা হয়। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল লতিফ বলেন, গতকাল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিন কর্মসুচি পালিত হবে। ওই তিনদিন মাদ্রাসায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাচ ধারণ করা হবে।
দাফন: মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে নিহত রাকিব মিয়া ও মোকছেদুল ইসলামের লাশ দাফন করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষক ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ তাদের জানাযায় অংশ নেন। অপরদিকে গতকাল নিহতের প্রতি পরিবারকে দশ হাজার টাকা অনুদান দেয় জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে গাইবান্ধা-বালাসি সড়কের জেলা শহরের অদুরে পুলবন্দি ফলিয়া নামক স্থানে একটি বনভোজনের বাস উল্টে রাকিব মিয়া ও মোকছেদুল নামে দুইজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত ও শিক্ষকসহ অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেল- নিহত রাকিবের মা রশিদা বেগম বিছানায় ছেলের স্মৃতিচ্চারণ করে আহাজারি করছেন। পাশে রিকসা চালক বাবা খাজা মিয়া জীবন্ত লাশ হয়ে শুয়ে আছেন। আত্মীয়-স্বজনরা তাদের সান্তনা দিচ্ছেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে রশিদা বেগন বলছিলেন, পিকনিকে যাবার সমায় ছোলট্যা হামার একশো ট্যাকা নিয়া বললো, মা তোমার জন্নে সেনডেল আনমো। সেনডেল আনব্যার চায়া ছোলট্যা হামার লাশ হয়া আইলো। তোমরা হামার ছোলোক আনি দ্যাও। পাশের বাড়ির আঙ্গিনায় আহাজারি করছিলেন নিহত রাকিবের চাচাত ভাই নিহত মোকছেদুল ইসলামের মা মর্জিনা খাতুন। তিনি চিৎকার করে প্রলাপ বকছিলেন, ছোলট্যা কামলা দিয়া ২০০ ট্যাকা কামাই করি পিকনিকের ট্যাকা জোগার করচিলো। হামরাও মানা করি নাই, হাউস (আশা) করচে যাক। আইতোত খবোর পানো ছোলট্যা নাই। এসময় ঘরের ভিতর অবাগ হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন মোকছেদুলের বাবা মহুবর রহমান। এসময় নিহতের ছোট ভাই মেহেদুল (৮) হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল।
আনন্দের যাত্রা হলো শোকের যাত্রা: সোমবার সকাল ৮টায় কঞ্চিপাড়া খবিরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ১০৭ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারি দুইটি বাস ভাড়া নিয়ে আনন্দ যাত্রায় বের হন। তারা দিনাজপুর জেলার বিনোদন কেন্দ্র ’স্বপ্নপুরি’ তে যান। কিন্তু সকালের আনন্দের যাত্রা রাতে পরিণত হয় শোকের যাত্রায়। বনভোজন শেষে সেখান থেকে ফেরার পর একটি বাস গাইবান্ধা শহরে যাত্রাবিরতি করে। অপর বাসটি (ঢাকা-মেট্রো-জ-২৮৯৩) গাইবান্ধা শহর থেকে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে ফুলছড়ি উপজেলার মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামের দিকে রওনা দেয়। বাসটি রাত সাড়ে ৯ টায় শহরের অদুরে পুলবন্দি ফলিয়া নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক্টরকে (কাকড়া) অতিক্রম করার সময় বাসটি উল্টে সড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে বাসের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে রাফিক ও মোকছেদুল নিহত এবং অন্তত ২৫ জন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানকে গতকাল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্ত করা হয়। মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আব্দুর রাজ্জাক ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সাবানা খাতুন গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাদ্রাসার আব্দুর রাজ্জাক ও সাবানা খাতুন গতকাল জানায়, আমরা দুইটি বাস নিয়ে বনভোজনে স্বপ্নপুরিতে যাই। ফেরার পর একটি বাস গাইবান্ধা শহরে যাত্রাবিরতি করে। আমাদের বহনকারি বাসের চালক তার সহকারিকে (হেলপার) বাস চালাতে দিয়ে তিনি শহরে নেমে পড়েন। নামার সময় চালক হেলপারকে বলেন-তুমি যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে আস। পরে আমাদের বাসটি রাত ৯টা ২৫ মিনিটে গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তারপর হেলপার দ্রুতগতিতে বাস চালাচ্ছিল। বাসটি পুলবন্দি ফলিয়া এলাকায় পৌঁছলে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। আমরা দুর্ঘটনার অনেক গল্প শুনেছি। সোমবার নিজেরাই কিভাবে দুর্ঘটনা হয় দেখলাম।
তিন দিনের শোক কর্মসুচি: নিহত রাকিব মিয়া ও মোকছেদুল ইসলাম যথাক্রমে কঞ্চিপাড়া খবিরিয়া আলিম মাদ্রাসার দশম ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। তাদের মৃত্যুতে গতকাল মঙ্গলবার মাদ্রাসা ছুটি দিয়ে তিনদিনের শোক কর্মসুচি ঘোষণা করা হয়। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল লতিফ বলেন, গতকাল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিন কর্মসুচি পালিত হবে। ওই তিনদিন মাদ্রাসায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাচ ধারণ করা হবে।
দাফন: মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মধ্য কঞ্চিপাড়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে নিহত রাকিব মিয়া ও মোকছেদুল ইসলামের লাশ দাফন করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষক ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ তাদের জানাযায় অংশ নেন। অপরদিকে গতকাল নিহতের প্রতি পরিবারকে দশ হাজার টাকা অনুদান দেয় জেলা প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে গাইবান্ধা-বালাসি সড়কের জেলা শহরের অদুরে পুলবন্দি ফলিয়া নামক স্থানে একটি বনভোজনের বাস উল্টে রাকিব মিয়া ও মোকছেদুল নামে দুইজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত ও শিক্ষকসহ অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়