ঢাকা: ধর্মীয় বিধি-নিষেধের কারণে মূলত গর্ভপাত করা বা না
করার সিদ্ধান্তে সমাজ মাথা ঘামাতে শুরু করে। এটা এমন এক বিষয় যে ব্যাপারে
খোলা মনে সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো সুযোগ বহুদিন পায়নি মানুষ। আজ সামাজিক আচরণ
দৃষ্টিভঙ্গি ও সমাজবাস্তবতার অনেক পরিবর্তন আসার পর এ বিষয়টি আর ঘরের
অন্ধকার কোণের লুকোছাপার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।
আধুনিক কালে সারাবিশ্বে গর্ভপাতের ইস্যুতে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ উরুগুয়ের
প্রসঙ্গ এজন্যে বারবার এসেছে যে, সেখানে এ কর্মকাণ্ডটির ওপর আরোপিত ছিল
বিশেষ ধরনের ট্যাবু- যা আরোপ করেছিল স্বয়ং সে দেশের প্রশাসন। দেশটিতে ১৯৩৮
সালে প্রথম গর্ভপাত নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। কিন্তু সমাজের চালিকাশক্তি- অর্থনীতি
ও ধর্মের শেকলে বাঁধা মানুষকে- একটি নতুন প্রাণ আসবে কী আসবে না- সে
ব্যাপারে বারবার কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আর এতে একটি ভ্রুণকে বধ করতে
অনেক প্রাণহানির ঘটনা থামানো যায়নি।
আইনত নিষিদ্ধ হওয়ার পরও কি নারীর গর্ভপাত থেমে থেকেছে? থাকেনি। বিগত দশকের
পরিসংখ্যান অনুযায়ী উরুগুয়েতে গড়ে ২০ হাজার নারীকে শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে
হাসপাতালের শরণাপন্ন হতে হয়েছিল- যারা গোপনে গর্ভপাতের জন্যে শরীরের ওপর
অবৈজ্ঞানিক পাশবিক নিরীক্ষা চালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। তাদের একটি বড়
অংশই পরবর্তীতে মারা যায়। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে দেশটিতে প্রথম
গর্ভপাত বৈধ করে আইন প্রস্তাব করা হয়- যেন অন্তঃসত্ত্বা নারীরা অন্তত
বাঁচতে পারে। কিন্তু তৎকালীন প্রেসিডেন্ট তাবারে ভাসকুয়েসের ‘না’ ভোটের
কারণে সে আইনটি উৎরে যেতে পারেনি।
আইন অনুযায়ী কোনো নারী গর্ভপাত করিয়েছে প্রমাণিত হলে তার ৬ থেকে ১২ মাসের
কারাদণ্ড হতো। গর্ভপাত করানোর সময় নজরে এলে কারাদণ্ডের বিধান ছিল ১২ থেকে
২৪ মাস। এতে অনেক অসহায়- নিরূপায়- আর্থিক অনটনের শিকার- ধর্ষণের শিকার
নারী; সামাজিক মর্যাদা হারানোর বেদনা পেরিয়ে আরও শোচনীয় পরিণতি বরণ করতো।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়