ঢাকা: কেবল কেক কেটে জন্মদিন পালন করলে বা দুয়েকটি ‘গাড়ি ভাঙলে’ আন্দোলন হবে না মন্তব্য করে ছাত্রদলের কর্মীদের রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৪৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদল আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল তার বক্তব্যের মধ্যে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানানোর সময় ছাত্রদল কর্মীরা কেবল তাদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিবের ক্ষেত্রে হাততালি দিলে দৃশ্যত বিরক্ত হন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব। গ্রেপ্তার অন্য সবার মুক্তির দাবিতেও ছাত্রদলকর্মীদের প্রতিক্রিয়া একই ধরনের হওয়া উচিৎ মন্তব্য করে ফখরুল বিরোধী দলের আন্দোলনে ছাত্রদল কর্মীদের সেভাবে পাওয়া যায় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে উপস্থিত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “শুধুমাত্র কেক কেটে কিংবা স্তুতি-বন্দনা করে তারেক সাহেবের জন্মদিন পালন করলে চলবে না। দেশের সংকট উত্তরণে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। “দুয়েকটা গাড়ি ভাঙলে আন্দোলন হবে না। ছাত্রদলের হাজার-হাজার নেতা-কর্মীকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে।”
আলোচনা সভার পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলসহ নেতাদের নিয়ে ৪৯ পাউন্ডের একটি কেক কাটেন। তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করে তিনি বলেন, “আমরা যদি আন্দোলনের মাধ্যমে অবরুদ্ধ গণতন্ত্র মুক্ত করতে পারি, তাই হবে তারেক রহমানের জন্মদিনে আমাদের বড় উপহার।”
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ১৯৬৫ সালে বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। জরুরি অবস্থা জারির পর ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেককে গ্রেপ্তার করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পরের বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য যান। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন। ‘পাতানো নির্বাচনে বিএনপি নেই’
নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা নিয়ে বিএনপির পুরনো অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানিয়ে ফখরুল তার বক্তৃতায় বলেন, “সারাদেশের মানুষ দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, ‘নির্দলীয় সরকার’ ছাড়া পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভার অধীনে কোনো নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ নেবে না। দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।” বিদেশিদের কাছেও সরকারের ওই পাতানো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পটুয়াখালীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিরোধী দল নাকি দেশে অশান্তি করছেন। তাকে বলতে চাই, বিরোধী দল নয়, আপনিই দেশে অশান্তি ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করছেন।” সরকার রাষ্ট্রীয় শক্তি ব্যভহার করে ‘গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান’ ভেঙে দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে সহিংসতায় যতো মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিরোধী দলীয় নেতার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ছাত্র বিষয়ক সহ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ নেতা-কর্মীদের নিৎশর্ত মুক্তি দাবি করেন ফখরুল।
ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি বজলুল করীম চৌধুরী আবেদের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএনপির সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ছাত্র দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল হক নাসির। এদিকে তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম আজাদসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে কেক কাটেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও বরকত উল্লাহ বুলু। এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে তারেকের জন্মদিনের কেক কাটা হয়।---ডিনিউজ
খবর বিভাগঃ
রাজনীতি
সর্বশেষ সংবাদ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়