Tuesday, November 12

রাজনীতির মাঠে নেই বিএনপির টপটেন

ঢাকা : রাজনীতির মাঠ থেকে হঠাৎই ডুব দিয়েছে বিএনপির ‘টপটেন’ লিডার। রাজনীতির মাঠ চাঙায় অগ্রণী ভূমকার ১০ দাপুটে শীর্ষ নেতার দেখা মিলছে না মাঠে। শীর্ষ নেতারা মাঠে না থাকায় হতাশ হয়ে পড়ছেন দলের নেতা-কর্মীরা। হরতালও জমছে না। বিশেষ করে গত শুক্রবার রাতে বিএনপির শীর্ষ তিন নেতাসহ ৫ জন গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের ‘তারকা’-রা (বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা) মাঠ থেকে সটকে পড়েছেন। দলের ভাইটাল ৩ সহযোদ্ধা গ্রেফতারের পর হঠাৎ করেই বাঘা বাঘা নেতাদের দেখা মিলছে না। গ্রেফতারের ভয়ে হুট করেই ‘ডুব’ দিয়েছেন তারা-এমনটাই ধারণা করছেন রাজনৈতিক সচেতন মহল। এ অবস্থায় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের হরতাল কর্মসূচি অনেকটা ‘ফ্লপ’ হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে ১৮ দলীয় জোট প্রধান ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও এক রকম ‘গৃহবন্দি’ অবস্থায় রয়েছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে-বিরোধীদলীয় নেত্রীর নিরাপত্ত্বা ব্যবস্থা অধিকতরভাবে নিশ্চিত করতে তাঁর বাসভবন এলাকায় প্রশাসনের উপস্থিতি ও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার পরবর্তী চলমান আন্দোলনে ‘তুখোড়’ নেতাদের পাশে না পাওয়ায় অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ছেন খালেদা জিয়া। এ পরিস্তিতিতে দলের ‘কান্ডারি’র ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী আহমেদ।

২৫ অক্টোবরের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মহাজোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলো বিএনপি নেতারা। কিন্তু ৬০ ঘণ্টা করে দু’দফায় টানা একশ’২০ ঘণ্টা হরতাল শেষে নতুন করে আরো ৬০ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার পর গত শুক্রবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এম. কে. আনোয়ার ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে শীর্ষ নেতারা কার্যত: নেতা, কর্মী-সমর্থকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।

৫ অক্টোবর সিলেটের একটি জনসভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন,  ‘এ সরকারের মেয়াদ আছে ২০ দিন। আওয়ামীলীগের ভাইয়েরা প্রস্তুত হন, ২০দিন পর কোন ঘরে লুকাবেন? ’ এরপর ১৪ অক্টোবর রাজধানীর এক সভায় মির্জা আলমগীর বলেছিলেন, ‘কোয়ার্টার ও সেমিফাইনাল খেলা শেষ। ২৫ অক্টোবর ফাইনাল খেলার প্রস্তুতি নেন। ফাইনালে আমরা জিতবোই।’ কিন্তু গত শুক্রবার শুরু হওয়া ৮৪ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণার পর রাজনৈতিক অঙ্গণে ‘হেভিওয়েট’ এই নেতাকে দেখা যাচ্ছে না।

দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্দোলনের আরেক নেতা মির্জা আব্বাস। দাপুটে এই নেতাকেও মাঠে দেখা যাচ্ছেনা।

১৪ অক্টোবর ঢাকা মহানগর বিএনপির সভায় সাদেক হোসেন খোকা নেতু-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘লগি-বৈঠার আক্রমণের শিকার হলে প্রয়োজনে দা-কুড়াল নিয়ে মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।’ এ বক্তব্যের পর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গণে তাঁর স্বাভাবিক বিচরণ চোখে পড়েনি।

২৪ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের এক সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘২৫ অক্টোবর থেকে মহাজোট সরকার আর বৈধ নয়। এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া সবার নৈতিক দায়িত্ব।’

২৫ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু বলেছিলেন, ‘কাল থেকে যেখানেই মহাজোট সরকারের নেতা-কর্মীদের পাওয়া যাবে সেখানেই শায়েস্তা করা হবে।’ ওই দুই নেতাকেও দলের কোনো কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছেনা বিএনপির আরেক যুগ্ম-মহাসচিব আমানুল্লাহ আমান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, তরিকুল ইসলাম, বরকত উল্লাহ বুলু ও কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকেও। আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে রয়েছেন। 

এ পরিস্থিতিতে দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অনেকটা একক কান্ডারি হয়ে মাঠে রয়েছেন। বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলনে নানা মত ও অভিযোগ করে চলেছেন তিনি।---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়