ফেনী: এক মুঠো ভাত একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য সারাদিন অসম্ভব পরিশ্রম করে নিজেদের খাবার নিজেরাই জোগাড় করে ফেনীর ৯ পথশিশু। ভালো খাবার কিংবা ভালো জামার প্রলোভনে ওদের মন টলেনা। রাস্তায় বের হলে দেখা যায় এই সকল পথশিশু। এদের কেউ ভিক্ষা করছে কেউ বা কাগজ কুড়াচ্ছে রাস্তায় পড়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের বোতল সংগ্রহ করছে। আর এসব বিক্রি করে যে কয় টাকা আয় হয় তাই তাদের উপার্জন। মানুষের চলাচলে রাস্তা ঘাট, রেলস্টেশন,বাস টার্মিনাল, ফেরিঘাট ইত্যাদি স্থানে ওদের দেখা যায়।কিন্তু ফেনীর ৯ পথ শিশুর আয়ের ্ উৎসটা ভিন্ন রকম।
ফেনী শহরের ময়লা আবর্জনা পঁচা বাসি খাবার হাসপাতালের নোংরা বর্জ্য মৃতু জীবজন্তু যেখানে ফেলা হয় অর্থ্যৎ দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভা ড্যাম্পিং এই শিশুদের আয়ের প্রধান উৎস। সকাল হলেই কাঁধে বস্তা নিয়ে ছুটে যায় পৌরসভার ড্যাম্পিংয়ে। আর অপেক্ষার প্রহর গুণতে থাকে কখন ট্রাক ভর্তি পৌরসভা নতুন বর্জ্য আসবে। ট্রাক ভর্তি, দুর্গন্ধময় আবর্জনা ফেলার সাথে সাথে ছুটে যায় সেখানে। একমুঠো ভাত আর মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাতে তাদের সেই সুন্দর কচি হাত দিয়ে খুঁজতে থাকে লোহা-লঙ্কার, প্লাস্টিক এদের মধ্যে বরিশাল থেকে আসা আবদুল আউয়াল এর ৭ বছরের শিশুপুত্র রেজাউল হক, জামাল মিয়ার ১১ বছরের শিশুপুত্র মনির, আলমগীর এর ১২ বছর এর শিশুপুত্র আসলাম, বজলু মিয়ার ১২ বছরের শিশুপুত্র বাচ্চু, এছাড়াও খুলনা থেকে এসেছে ৮ বছরের ভুট্টু ও কামরুল, ১০ বছরের তানজিন, ১২ বছরের মহসিন, ১৩ বছরের আরিফ। দুর্গন্ধ ও আবর্জনার মধ্যে থাকতে থাকতে এদের অনেকই নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। একটি পোষাক একটানা মাসেরও অধিক গায়ে দিয়ে থাকে। দিন শেষে যা আয় করে তা দিয়ে নিজে খায় এবং আয়ের বড় একটি অংশ মা-বাবাকে দিতে হয়। আগামী ১৬ অক্টোবর পবিত্র ঈদুল আয্হা আর মাত্র ৮ দিন বাকি। ৯ পথশিশু জানায় ঈদ উপলক্ষ্যে পৌরসভার ড্যাম্পিংয়ে ২ দিন বর্জ্য খুঁজতে আসবেনা। তাই দিনের বড় একটি অংশ এখন ড্যাম্পিংয়ে ব্যয় করছে। পথশিশু তানজিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে। ঈদ আসলে বড় লোকেরা নতুন নতুন জামা-কাপড় পরে, ভালো-ভালো খাবার খায়, কিন্তু আমরা পথশিশু বলে আমাদের খবর কেউ নেয়না।
৭ বছরের রেজাউল জানায়, আমাদের দেশে বিত্তশালীরা তাদের সন্তানদের জন্মদিন পালন করেন জমকালোভাবে। অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্যায় করে অনেক টাকা পয়সা। কিন্তু তারা যদি কিছু টাকা বাচিয়ে আমাদের পথশিশুদের মাঝে বস্ত্র, খাদ্য, কিংবা কিছু অর্থ ব্যয় করতেন তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হতাম।
আমরা এই সব পথশিশুদের দিকে একটুও ফিরে তাকাইনা। অথচ আমাদের একটু সাহায্য এদের মুখে হাসি ফোটাতে পারে। মনে রাখা উচিত এই সব পথশিশুরা আমাদের সমাজেরই সন্তান। তাই আসুন পথশিশুদের জন্য আমাদের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিই।----আবদুল্লাহ আল-মামুন(ডিনিউজ)
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়