Monday, October 7

সুনামগঞ্জ ছাতকের ঐতিহ্যবাহী লঞ্চঘাট এখন শহরের ডাষ্টবিন


সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ ছাতকের ঐতিহ্যবাহী লঞ্চঘাটে দীর্ঘদিন ধরে বিপদজনক অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী সাধারণ উঠা-নামা করছে। যাত্রী উঠা-নামার স¤পূর্ন অনুপযোগী এ লঞ্চঘাট সংস্কারের অভাবে যুগ-যুগ ধরে যাত্রীরা চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। সংস্কারের কোন উদ্যোগ না থাকায় লঞ্চঘাটটি এখন শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলার একমাত্র ডাষ্টবিনে পরিনত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এ অঞ্চলের মানুষের এক সময়ের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌ-পথ। নৌ-পথে যাতায়াতের জন্য ছাতক-সুনামগঞ্জ-সাচনা রুটে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে লঞ্চ ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ-যুগ ধরে। তৎকালীন সময়ে দাঁড়-বৈঠার হাতেগোনা কয়েকটি নৌকা চলাচল করলেও সিংহভাগ মানুষই নিরাপদ ও দ্রুত চলাচলের জন্য লঞ্চের উপর নির্ভরশীল ছিল। বৃটিশ শাসনামলে ছাতক-দোয়ারা ও কো¤পানীগঞ্জের মানুষ পায়ে হেঁটে নতুবা স্টিমার যোগে সিলেট শহরে যাতায়াত করতো। পরবর্তীতে নদীর নাব্যতার কারনে পাকিস্তান শাসনামল থেকে লঞ্চের উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠে এ অঞ্চলের মানুষ। পৌর শহরের পশ্চিমবাজার এলাকায় তৎকালীন সময়ে লঞ্চ যাত্রীদের সুবিধার জন্য জেটি ব্যবহার করা হলেও স্বাধীনতার পর এক সময় জেটি সরিয়ে নিয়ে গেলে লঞ্চযাত্রীদের দূর্ভোগের কারন সূচিত হয়। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হলেও শহরের পশ্চিমবাজারস্থ ঐতিহ্যবাহী লঞ্চঘাটটির এতটুকু উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও নৌ-পথের যাত্রীরা এখনো অনেকটা লঞ্চের উপর নির্ভরশীল। ছাতক-সুনামগঞ্জ নৌ-পথে শত শত যাত্রী আসা-যাওয়ার পাশাপাশি মালামাল ও শাক-সবজি পরিবহনের জন্য এখনো এ অঞ্চলের মানুষের কাছে লঞ্চের কদর রয়েছে। দোয়ারাবাজার, টেংরা টিলা এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে শাক-সবজি বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয় ছাতকবাজারে। এসব মালামাল ও যাত্রী সাধারণ উঠা-নামা করতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন। যুগ-যুগ ধরে অনাদর-অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারনে ঐতিহ্যবাহী ছাতক লঞ্চঘাটটি এখন মারাÍক আকার ধারন করেছে। একটু অসাবধানতার কারনে এখানে যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী সাধারণ লঞ্চে উঠা-নামা করছে অনেকটা বাধ্য হয়েই। তবে মালামাল উঠা-নামা করা অনেকটাই অসাধ্যকর হয়ে পড়লেও এভাবেই চলছে দিনের পর দিন। বিষয়টি স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা আমলে না নেয়ায় লঞ্চ যাত্রীদের মধ্যে যুগ-যুগ ধরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলার আন্ধারিগাঁও, গনাই, মল্লিকপুর, বাউসা-বড়বাড়ি, বেতুরা, বারকাহনসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিার্থীরাও লঞ্চে আসা-যাওয়া করে আসছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। বৃষ্টি-বাদলের দিনে পশ্চিমবাজারের এ লঞ্চঘাটটি হয়ে উঠে ভয়াবহ। এ সময় প্রতিদিনই লঞ্চে উঠা-নামা করতে গিয়ে ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। ঐতিহ্যবাহী এ লঞ্চঘাটটিকে অবজ্ঞা ও অবহেলার চোখে দেখার কারনে বর্তমানে ঘাটটি শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলার একমাত্র স্থানে পরিনত হয়েছে। ফলে যাত্রী সাধারণের উঠা-নামা করা কষ্টকর হওয়ার পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনার দূর্গন্ধে নাকে রুমাল দেয়া ছাড়া উপায় থাকেনা। শহরের ময়লা-আবর্জনা অব্যাহতভাবে ফেলার কারনে লঞ্চঘাট এলাকার পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। প্রথম শ্রেণীর মর্যাদাপ্রাপ্ত ছাতক পৌরসভার একমাত্র লঞ্চঘাটের এমন বেহাল দশা পৌরসভার মর্যাদার সাথে বড়ই বেমানান। এসব দেখার যেন এখানে কেউ নেই। ঐতিহ্যবাহী এ লঞ্চঘাটটিকে সংস্কার ও যাত্রী উঠা-নামায় সু-ব্যবস্থা করে দিয়ে লঞ্চ চলাচলের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে স্থানীয় লোকজন দাবী জানিয়েছেন।---ডিনিউজ


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়