Tuesday, October 8

ত্রুটিপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম লাইনে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল রেলের

মিরসরাই(চট্টগ্রাম): ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনে মিরসরাইসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে রেল চলাচল করছে। রেলওয়ে যোগাযোগের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত হলেও এখন প্রায়ই রেল দুর্ঘটনা ঘটছে। গত বছর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১০০ দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত এবং ১৯ জন আহত হয়েছেন। এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে ছয় কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে। এ রুটে গত বছর ১৭টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া লাকসাম-আখাউড়া রুটে সাতটি মিরসরাইয়ের চিনকি আস্তানা-লাকসাম রুটে ১২টি, চট্টগ্রাম-সিজিপিওয়াই-ফৌজদারহাট ১২টি, চট্টগ্রাম-দোহাজারী ১১টি, আখাউড়া-সিলেট ৯টি, লাকসাম-চাঁদপুর ৬টি, লাকসাম-নোয়াখালী ৪টি ও চট্টগ্রাম-নজিরহাট রুটে দু’টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনের সাথে বিভিন্ন যানবাহনের সরাসরি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর মিরসরাইয়ে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়। এ সময় রেলের উদ্ধারকাজে নিয়োজিত দুই রেলশ্রমিক দিদারুল ইসলাম ও হারুন অর রশিদ অন্য একটি রেলের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান। বর্তমানে ওই এলাকার প্রায় আধা কিলোমিটার খুব ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইন, কিপ স্লিপার খুলে নেয়া, চালকের অদক্ষতা, যান্ত্রিক ত্র“টি, ট্রাফিক আইন না মানা ও ওভারলোডিং প্রধানত এই ছয় কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। রেলওয়ের নথিতে দেখা গেছে, গত বছরের দুর্ঘটনাগুলোর পর রেল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনার কারণ এবং দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে। তদন্ত রির্পোটে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী, চালক, প্রকৌশল বিভাগ, যান্ত্রিক লোকো বিভাগ, যান্ত্রিক ক্যারেজ বিভাগকে দায়ী করা হয়। রেলের পক্ষ থেকে সে সময় ৫৮ ব্যক্তি বা বিভাগকে দায়ী করে তিরস্কারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়। এ ছাড়া দুর্ঘটনার শিকার বিভিন্ন ব্যক্তি বা যানবাহনকেও দায়ী করা হয় ওই প্রতিবেদনে। তবে এর সংখ্যা ছিল কম। এ ব্যাপারে রেলওয়ের এক শ্রমিক নেতা বলেন, দুর্ঘটনার পর রেল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে রিপোর্ট দেয়া পর্যন্ত কোনো রকম দায়সারাভাবেই দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু পরে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সাধারণত দেখা যায় না। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক তফাজ্জল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি ট্রেন দুর্ঘটনায় দশজন নিহতের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, গত বছর শুধু ট্রেন দুর্ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আর কয়েক দিন আগে আমাদের দু’জন লোক ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেছেন। এ ছাড়া ট্রেন দুর্ঘটনায় আর কেউ মারা যাননি। তিনি আরো বলেন, ছোটখাটো দুর্ঘটনাতো ঘটবেই। তাহলে আমাদের বিভিন্ন স্টেশনে রিলিফ ট্রেন ও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কী কারণে রাখা হয়েছে? তবে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় রেললাইনে সংস্কারের কাজ চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়