Tuesday, September 24

পিরোজপুরের আল আমিন নিজের তৈরি হেলিকপ্টারে আকাশে উড়তে চান

ম. শহিদুল্লাহ, পিরোজপুর প্রতিনিধিঃআকাশে উড়ার চেষ্টাটি প্রথম করেছিল প্যারিসের দুই ভাই জোসেফ ও জ্যাকুস এটিন্নে ১৭৮৩ সালের এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখে। কিন্তু এবার বাংলাদেশে এ চিন্তার জনক পিরোজপুরের অল্পশিক্ষিত যুবক আল আমিন তাও আবার নিজের তৈরি হেলিকপ্টারে ।
পিরোজপুর শহরের কুমারখালি এলাকার অল্পশিক্ষিত যুবক আল আমিন(২৩)। দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত রিক্সাচালক পুত্র আল আমিনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দৌড় ষষ্ঠ শ্রেণী অবধি।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে ছেড়ে রোজগারের পথ বেছে নিতে হয় অল্প বয়সেই।স্কুলকে বিদায় জানালেও তার মনের সৃজনশীল চিন্তা ভাবনার স্কুলে সে ছিল নিয়মিত ছাত্র ।তার মনে প্রতিনিয়ত নাড়া দিত নতুন কিছু আবিষ্কারের যেটা আগে কেউ করে নি অথবা করলেও তার চেয়ে ব্যতিক্রম করে কিভাবে করা যায়। যেমন চিন্তা তেমন কাজ বাসার পাশে একটি অটোরিক্সা ও মটর সাইকেল ওয়ার্কশপে চাকরি করতেন। চাকরির পাশাপাশি তার মনের সুপ্ত ইচ্ছার মূলে পানি ঢালতে লাগলেন। প্রথমেই ভাবলেন কি করা যায়? ভাবতে ভাবতে একসময় তৈরি করে ফেললেন বাই সাইকেলের বডি ব্যবহার করে  মটর সাইকেলের ইঞ্জিন লাগিয়ে ইঞ্জিন চালিত বাই সাইকেল, অতঃপর অটোরিক্সা।নিত্যনতুন আবিষ্কারে তার মনে সৃষ্টি হতে লাগল নতুন অনুপ্রেরনা। পরিচিতজনের কাছে উৎসাহ পেতে থাকলেন। এবারে চিন্তা করলেন আরো ব্যতিক্রম কিছু করার।একটি হেলিকেপ্টার তৈরি করবেন (!) যেই ভাবনা সেই কাজ।ওয়ার্কশপের বেতন থেকে জমানো টাকা খরচ করে লোহার পাইপ অ্যালুমিয়ামের পাখা, জিআই পাইপ  কিনে নিজের মেধা ও সৃজনশিলতা দিয়ে তৈরি করে ফেললেন ব্যাটারিচালিত হেলিকেপ্টার।পরিক্ষামুলকভাবে চালালেন তার হেলিকেপ্টার কিন্তু তা ২ ফুটের বেশি উপরে উঠল না। তিনি সন্তুষ্ট হতে পারলেন না । এবারে তিনি তৈরি করতে চাইলেন আরো বড় এবং আরো অধিক  ক্ষমতাসম্পন্ন হেলিকেপ্টার।সাড়ে তিন মাসের অক্লান্ত পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ে ১০০ সিসি মটর সাইকেলের ইঞ্জিন ব্যবহার করে তৈরি করলেন অকটেন দ্বারা চালিত হেলিকপ্টার। কিন্তু আকাশে উড়াতে পাড়লেন না।প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি(পাখা, নিয়ন্ত্রন সিস্টেম) কিনতে তার যে খরচ পড়বে তেমন সামর্থ তার নেই।যা অন্যের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।আল আমিন জানান, ‘এখন তার এই আবিষ্কারকে আকাশে উড়াতে প্রয়োজন দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা’। তিনি আশা করছেন টাকা যোগাড় করতে পারলে ৩/৪ জন মানুষ নিয়ে তিনি আকাশে উড়াতে সক্ষম হবেন।
প্রতিদিনই শত শত উৎসুক জনতা তার আবিষ্কার দেখতে ভিড় জমায়।উৎসাহ উদ্দিপনা নিয়ে তার তৈরি হেলিকপ্টারকে দেখতে আসেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিক জানান, ‘আল আমিন ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু আবিষ্কারের নেশায় মত্ত থাকত এবং সে বিভিন্ন বিষয় আবিষ্কারে সফলও হয়েছে’। পিরোজপুর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক বাবু নরোত্তম দেবনাথ জানান, ‘আল আমিন তার একসময়কার ছাত্র ছিল এবং তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করে কিছু করতেন এবারো সে তার কাছে পরামর্শ করেছিলেন এবং তার নিজের চেষ্টায় হেলিকেপ্টার তৈরি করেছে এখন সরকারী সহযোগিতা পেলে সে সফল হতে পারবে’।---হেলোটুডে

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়