Wednesday, September 11

ডোমার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল দশা


ডোমার (নীলফামারী): নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ৮টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকে মাত্র ৩ জন ডাক্তর।  আর ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে দিয়ে চলছে ডোমারের চিকিৎসা ব্যবস্থা। 
 ডোমার সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দুরে ২১ বিঘা জমির উপর ১৯৬৮ সালে ৩১ শষ্যা বিশিষ্ট্য উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠা হয়। তৎকালীন উপজেলার নেতৃবৃন্দ স্বাস্থ কমপ্লেক্সে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা হবে মর্মে সদর থেকে দুরে প্রাতিষ্ঠা করেছে। আর বর্তমানে এর দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গোটা উপজেলাবাসীকে। উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ২১ জন ডাক্তারের স্থলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তাসহ রয়েছে মাত্র ৪ জন ডাক্তার। ১জন জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেসথেসিয়া), ১ জন অর্থপেডিক্স, ১ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিও), ১ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), ১ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট (আইএনটি), ১জন জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্ম ও যৌনরোগ), ১ জন আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ১ জন মেডিসেন বিশেষজ্ঞ, ১জন গাইনি বিশেষজ্ঞ, ১ জন ডেন্টাল সার্জেন্ট পদগুলি দীর্ঘদিন ধরে শুন্য রয়েছে এবং সহকারী সার্জেন্ট (এমও, আইএমও, ইএমও, প্যাথলজি, এ্যানাস) ৬ জনের স্থলে রয়েছে ১ জন এবং ৮টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোন ডাক্তার নেই। পাশাপাশি ২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও কোন ডাক্তার বসে না বলে অভিযোগ রয়েছে। উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে ৩১ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও মাত্র ৩ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এদিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর ১৫ জন কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৬ জন। ৯টি পদেই শূণ্য। তৃতীয় শ্রেনীর ১১১ জন কর্মচারীর থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৭৪ জন। ৩৭টি পদ শুণ্য এবং চতুর্থ শ্রেণীর ৩১ জন কর্মচারীর মধ্যে রয়েছে ২৪ জন। ৭টি পদ দীর্ঘ দিন ধরে শুণ্য রয়েছে। এরমধ্যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তর শওকত আলী সাফায়াত এবং সোনারায় উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শারমিন নাহার যোগদান করার পর থেকে অনুপস্থিত রয়েছে বলে মেডিকেল সুত্রে জানা গেছে। ডাক্তার এবং কর্মচারীরর অভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। অনেক সময় ডাক্তাররা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকলেও রিপ্রেজেনটেটিভ এবং প্রাইভেটে চিকৎিসা নিয়ে ব্য¯ত থাকতে দেখা যায়। অনেক সময় ফার্মাসিস্ট এবং ওয়ার্ড বয়রা ডাক্তারের কাজ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও একটি অচল আরেকটি আধা স্বচল। এ্যামবুলেন্সটি বাহিরে রেখে রোদ, বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ২টি এক্সরে মেশিন থাকলেও একটি অকেজো আর একটি আধা অকেজো রয়েছে। ২০০৭ সালে বিগত সরকার আমলে ৩১ শষ্যা থেকে ৫০ শয্যায় উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সটি উন্নিত করা হলেও জনবল এবং সরঞ্জামাদির অভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির মূল ফটকের দুইধারে অবৈধ ভাবে দোকানঘর উত্তোলন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে একটি কুচক্রি মহল। অবৈধ ভাবে দোকান ঘর তুললেও তাদের বিরুদ্ধে অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে জানা গেছে ।  
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মোঃ মো¯তাকুর রহমান খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে অভিহিত করে আসছি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়