Saturday, September 28

রোববার খুলনায় খালেদা জিয়ার জনসভা

খুলনা: রবিবার খুলনা যশোরের ৬০ কিলোমিটার জুড়ে নামবে প্রতিবাদী মানুষের ঢল। মানুষের এই ঢল নামবে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার খুলনা সফরকে ঘিরে। তাই যশোর-খুলনার দু’পাশের সড়কে জনতার সারিবদ্ধ উচ্ছ্বাস ও অভিনন্দন হবে এ যাবৎকালের সর্ব বৃহৎ মানব প্রাচীর। পথে পথে অভ্যার্থনা দেওয়া হবে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকলেও মুক্তি পাগল মানুষ তাদের প্রিয় নেত্রীকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূর্নবহালের দাবিতে খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে ১৮ দলের জনসভা রোববার। বেলা দুটায় সভা শুরু হবে। সকাল ১০টা থেকে ঢাকা থেকে আগত জাসাসের ৪০ সদস্যের সাংস্কৃতিক দল সঙ্গীত পরিবেশন করবে। সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এতে বক্তৃতা করবেন। খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি রোববারের জনসভা পূর্ব এ কথা বলেন। 
এ উপলক্ষে গোটা খুলনা সেজেছে বর্ণিল সাজে। জনসভা বিএনপি তথা ১৮দলীয় জোটের হলেও খুলনাবাসী পেয়েছে রূপসী নগরী। সন্ধ্যা নামতেই গোটা খুলনা শহরে আলোর ঝলকানি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাতে বের হচ্ছেন এবং ঘুরে ফিরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অপরূপ আলোক সজ্জা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। আর এ সব কিছুই হলো বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সৌজন্যে।
অপর দিকে খুলনার জনসভাকে স্মরণকালের সেরা সমাবেশে রূপ দিতে চায় স্থানীয় বিএনপি। সে অনুযায়ী এ অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। আর খালেদা জিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দুই দিনের এ সফরকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বড় বড় ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো। নির্মাণ করা হয়েছে সুসজ্জিত ২৫০টি তোরণ। শনিবার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছন জোটের নেতাকর্মীরা। এছাড়া, জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়ন লাভের আশায় এ অঞ্চলে মনোনয়ন প্রার্থীরা ব্যাপক শো-ডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিদিন ওয়ার্ড, থানা ও উপজেলায় চলছে প্রস্তুতি সভা ও প্রচার মিছিল। মহাসড়ক ও সড়ক দ্বীপে শোভা পাচ্ছে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি। জনসভা সফল করতে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেঁয়ে গেছে পুরো মহানগরী।
যশোর থেকে আজ রোববার সকালে তিনি খুলনায় এসে জনসভায় যোগ দেবেন। জনসভা শেষে আজকেই তিনি ঢাকা ফিরবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সমাবেশে জন্য ২ হাজার ৪৫০ বর্গফুটের মঞ্চ তৈরী করা হয়েছে। মঞ্চে ২৫০ জন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আসন গ্রহণ করবেন। সারাদেশ থেকে নেতারা খুলনায় আসতে শুরু করেছেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর বিশেষ শাখার দেয়া তথ্য মতে, আর্মড পুলিশ ও কেএমপি পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। সার্কিট হাউসস্থ জনসভাস্থলে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকবে। সার্কিট হাউস মাঠের চারপাশে সশস্ত্র ও সাদা পোশাকে পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। স্টেডিয়াম ও সার্কিট হাউস সংলগ্ন ভবনের ছাদগুলোতে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
সূত্র জানায়, পথের বাজার থেকে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনের ছাদেও পুলিশ মোতায়েন করা হবে। মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের যানবাহন সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, পীর খানজাহান আলী (রহ.) সেতুর নিচে, গল্লামারী, জোড়াগেট ও রেলওয়ের স্টেশন এলাকায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, বিরোধীদলীয় নেত্রীর নিরাপত্তার জন্য স্ট্যাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। তাছাড়া র‌্যাবের একাধিক গাড়ি টহল দেবে। নগরীর নিরাপত্তায় পুলিশের সাথে সম্পর্ক রেখে সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার ব্যবস্থা থাকবে।
এদিকে শনিবার দুপুর ১২টায় জনসভা সফল করার লক্ষে ১৮ দলের উদ্যোগে মোহামেডান ক্লাব মিলনায়তনে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু ব্রিফিংয়ে বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, এ জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে। এ জনস্রোত ঠেকানো যাবে না। ৭টি মেডিকেল টিম, ৫টি এ্যাম্বুলেন্স দুটি ক্লিনিক ও দুটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকলেও লাখ লাখ মানুষ এ জনসভায় অংশগ্রহণ করবে। ৫ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক সার্কিট হাউজ ময়দানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। ইতোপূর্বে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া বিকেল ৪টায় মঞ্চে উঠবেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি বক্তৃতা শুরু করবেন। ৩ বর্গকিলোমিটার স্থাপন করা হয়েছে মাইক। ৭ বিভাগীয় শহরের জনসভা থেকে ঢাকা থেকে চূড়ান্ত কর্মসূচি দেয়া হবে। জনসভাকে ঘিরে নগরীতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পুলিশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের হয়রানী করছে বলে অভিযোগ করেন নগর বিএনপির সভাপতি। পাইকগাছায় দু’জন এবং ডুমুরিয়ায় একজন জামায়াত কর্মীকে পুলিশ আটক করে বলে ব্রিফিংয়ে জানান হয়। নেতাকর্মীদের হয়রানী না করার জন্য প্রশাসনের প্রতি তিনি আহবান জানান। 
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন এম নূরুল ইসলাম দাদু ভাই, অধ্যাপক মাজিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, কেসিসি’র মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, কৃষিবীদ শামিমুর রহমান শামীম, মাসুদ খান ভাষানী, মোঃ আক্তারুজ্জামান, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, শফিকুল হক মিলন, অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান লাবু, মাওলানা এমরান হুসাইন, লোকমান হাকিম, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, সালাউদ্দিন মিঠু, মুফতি রেজাউল করিম, সাহরুজ্জামান মোর্তুজা, সাবেক এমপি ডাঃ গাজী আব্দুল হক, সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন, মাওলানা ওয়ালি উল্লাহ আরমান, অ্যাডভোকেট আক্তার জাহান রুকু, অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুল বারী, মাস্টার শফিকুল  আলম, মোল্লা আবুল কাশেম, অধ্যাপক আমীর আলী, সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট বজলার রহমান, ফখরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শাহ আলম, মহিবুজ্জামান কচি প্রমুখ।---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়