আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, “সাধারণত এক দল ক্ষমতায় থাকলে আরেক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেখানে নেতাদের পরিপক্বতা বৃদ্ধি পায়। সাহস বৃদ্ধি পায়। কিন্তু আমি তো সরকার দলীয় সংসদ সদস্য। আমার বিরুদ্ধে মামলা হলো ছিনতাইয়ের মামলা। আমার বিরুদ্ধে মামলা হলো লুটের মামলা। এখানে রাজনৈতিক পরিপক্বতার কী আছে? আমার তো গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিত।”
জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে সোমবার রাতে বে-সরকারি টেলিভিশন গাজী টিভিতে ‘সংবাদ সংলাপ’ শীর্ষক এক টকশোতে অংশ নিয়ে ‘জেল রাজনীতিবিদদের পাঠশালা’ উপস্থাপকের এমন মন্তব্যের জবাবে রনি এসব কথা বলেন।
তাহলে আপনি এখন কী করবেন? যে গোলাম মাওলা রনি ছিলেন তাই-ই থাকবেন নাকি গলায় দড়ি দিয়ে মরবেন-উপস্থাপকের এমন এক প্রশ্নের জবাবে রনি বলেন, “আমি এমপি হওয়ার পরে এই পৌনে পাঁচ বছরে একটি বিশ্বাস ও আদর্শ বুকে ধারণ করে কিছু কথা বলেছি এবং যে কথাগুলো বিশ্বাস করি সে কথাগুলো বলেছি। ব্যক্তিগত জীবনে সেই কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। আমার প্রতিপক্ষ যারা আছেন তারা চেষ্টা করেছেন আমার দুর্নীতি খুঁজে বের করার, কিন্তু তারা তা পারেনি। তো সেই বিশ্বাস থেকে আমি নড়বো না।”
তিনি বলেন, “মানুষ বাঁচে অল্প কিছু দিন। এর মধ্যে যদি একজন মানুষ বারবার রং পরিবর্তন তরে তাহলে তো সে মানুষ থাকলো না।”
রনি বলেন, “কিছু কিছু বিষয়ে আমার ভুল হয়েছে। সেখানে আমি সঠিক ছিলাম না। আমাদের দেশে চিরাচরিত একটি কথা আছে, চুরিকে ঘৃণা করো চোরকে নয়। সেইসব জায়গায় আমার কিছু ভুল হয়ে গেছে। সেগুলো হলো- আমি টু দি পয়েন্টে মানুষের নাম ধরে কিছু কিছু জায়গায় উপস্থাপন করেছি। আমি একটি সিস্টেমের কথা বলতে গিয়ে সিস্টেমের পরিচালকের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। সেটা জেলখানায় বসে একান্ত ভাবনায় মনে হয়েছে, এটা আমার ঠিক হয়নি।”
তিনি বলেন, “আমি নিজের অজ্ঞানতার কারণে কিছু কিছু মানুষকে ব্যক্তিগত আক্রমন করে তাদের ব্যক্তিগত শত্রু হয়েছি। তাই যখন আমি গর্তের মধ্যে পড়েছি তখন এই ইউনিটগুলো এমনভাবে ইউনাইটেড হয়ে গেছে যে, আমি ‘মাইনকার চিপা’র মতো অবস্থায় পড়ে গেছি।”
অঞ্জন রায়ের উপস্থাপনায় এ টকশোতে রনির সঙ্গে আরো ছিলেন, ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক আরিফুর রহমান ও বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বেসরকারি চ্যানেল ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের দুজন সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়। গত ২৪ জুলাই মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর গত ১০ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত তাকে জামিন দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সকাল সোয়া ১১টায় কারাগার থেকে বের হন তিনি।
খবর বিভাগঃ
বিশেষ খবর
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়