ঢাকা: 'টুইন টাওয়ার' হামলার ১২ বছর পূর্তি হচ্ছে বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এক সন্ত্রাসী হামলায় নিউইয়র্কের ‘টুইন টাওয়ার’ ধসে পড়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পার্ল হারবারের পর এটিই যুক্তরাষ্ট্রের উপরে সবচেয়ে বড় হামলা। ১৯ জন বিমান ছিনতাইকারীসহ সবমিলিয়ে ২,৯৯৩ জন নিহত হয়েছিল ওই হামলায়, যাদের মাঝে বাংলাদেশী ছিলেন ১৪ জন।
ওই সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল আল কায়দা আর ওসামা বিন লাদেনের বিরুদ্ধে। এরপরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা আর সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নামে পাল্টে গেছে গোটা বিশ্ব রাজনীতিই।
নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ারে দুটি বেসামরিক বিমান আঘাত হানে। আরও দুটি বিমান হামলা চালায় ওয়াশিংটনে । একটি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক দপ্তর পেন্টাগনে আর অপরটি আছড়ে পড়ে একটি খোলা মাঠে। আমেরিকান এয়ারলায়েন্সর ফ্লাইট ১১ বিমানটি ইস্টার্ন ডে-লাইট টাইম (ইডিটি) ০৮২৫ ঘণ্টায় প্রথমে ছিনতাই হয়। ১৮ মিনিট পর উড়ন্ত বোমা হয়ে সেটি আছড়ে পড়ে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের উত্তর টাওয়ারে।
প্রথম বিমানটি ছিনতাই হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ছিনতাই হয় ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ১৭৫ বিমানটি। ইডিটি সময় ০৯০৩ ঘণ্টায় এটি আঘাত হানে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের দক্ষিণ টাওয়ারে।
দ্বিতীয় বিমানটি যখন দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে তখন সে দৃশ্য জ্বলন্ত উত্তর টাওয়ার থেকে ধারণ করা হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়।
ইডিটি ০৯৪০ ঘণ্টায় ছিনতাই হয় আমেরিকান এয়ারলাইন্সের আরেকটি (ফ্লাইট ৭৭) বিমান। এটির আঘাতে আংশিক ক্ষতি হয় পেন্টাগনের। চতুর্থ বিমানটি পেন্টাগনের কাছের একটি মাঠে গিয়ে আছড়ে পড়ে।
বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের ১১০ তলা উচুঁ দক্ষিণ টাওয়ারে দ্বিতীয় বিমানটি আঘাত হানার প্রায় এক ঘণ্টা পর টাওয়ারটি ধসে পড়ে। আর তার কয়েক মিনিটের মধ্যে ধসে পড়ে উত্তর টাওয়ারটিও।
আক্রান্ত টুইন টাওয়ার ধসে পড়ার আগে বাঁচার আশায় অনেকেই লাফিয়ে পড়েন।
হামলায় ক্ষতি হয় ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি ডলারের। আর এ ঘটনার পরে সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত বিভিন্ন সামরিক অভিযানে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ থেকে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছে। রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের 'কস্ট অব ওয়ার' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
ওয়ান-ইলেভেনের বড় বিপর্যয় থেকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের ওপর তৈরি হচ্ছে ৮২ তলার ফ্রিডম টাওয়ার। টুইন টাওয়ারের গ্রাউন্ড জিরোতে এর নির্মাণ শুরু হয় ২০০৬ সালে। শেষ হবে ২০১৩ সালে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে একুশ শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর অন্যতম।
বিশ্বের সকল শান্তিকামী মানুষের প্রত্যাশা এধরণের ঘটনা যেন আর কলঙ্কিত না করে বিশ্ব ইতিহাসকে।---ডিনিউজ
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়