নিজেদের ওরা পরিচয় দিতেন বিদেশি নাগরিক হিসেবে। কেউ সাজতেন বর, কেউবা কনে। বর-কনের খোঁজে আসা নিরীহ মানুষকে এভাবেই প্রতারণার জাল বিছিয়ে ঠকাচ্ছিল চক্রটি। তবে শেষ রেহাই হলো না। শেষবার পুলিশের জালে আটকা পড়লেন ৮ ভুয়া বর ও কনে। আর এখন তাদের ঠাঁই হয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাস্টডিতে।
ডিবি জানিয়েছে, ম্যারেজ মিডিয়ার নামে সুন্দরী নারীদের বিদেশি নাগরিক পরিচয় দিয়ে বিয়ে নামে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর শ্যামলী ও আফতাব নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- এরশাদ (৩৮), আলমগীর হোসেন ওরফে বাদশা (৩৪), ইকবাল হোসেন (২৮), জাহাঙ্গীর (৩৩), আসমাউল হুসনা মিশু (২৪), সাদিয়া মিতু (২৬), সায়লা শারমীন (৩৬) ও সালমা (২৮)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন জাল বিদেশি পাসপোর্ট, ভিসা, নিকাহনামা ও নোটারি পাবলিক-এর স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইংল্যান্ড ও আমেরিকা প্রবাসী ভুয়া সুন্দরী নারীদের পাত্রী সাজিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করে আসছে। এ চক্রের মূল হোতা এরশাদ।
রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
মিডিয়া সেন্টারের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী প্রতিরোধ টিমের একটি দল শ্যামলী ও বাড্ডা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আফতাব নগরের ৩ নম্বর রোডের এ ব্লকের ৫৯ নম্বর ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ফারুক হোসেনের বাড়ির নিচ তলা থেকে প্রতারক চক্রের মূল হোতা এরশাদসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করে।
মাসুদুর রহমান জানান, ওই বাড়িতে তারা কিছু সুন্দরী নারীকে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইংল্যান্ড ও আমেরিকার নাগরিক পরিচয় দিয়ে পাত্রী সাজিয়ে পত্রিকায় 'পাত্র চাই' বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতারণা করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহীরা তাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে। পরে তাদের কথিত কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ম্যারেজ মিডিয়া অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতারক চক্রটি সুন্দরী নারীদের জাল ভিসা ও পাসপোর্টের ফটোকপি দেখিয়ে তাদের সাথে পাত্রী সন্ধানকারীদের দেখা করানোর মাধ্যমে আকর্ষণ তৈরি করে। এরপর মোটা অংকের নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে ভুয়া নিকাহনামার মাধ্যমে বিয়ে করিয়ে আত্মগোপন করে। পরবর্তী সময়ে অন্যত্র অফিস নিয়ে পুনরায় শুরু করে ওই প্রতারণামূলক ব্যবসা।
উপ-কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ইরানী, মুন্নী, তিশা, সাগর, মিজানসহ বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। এরা ভুয়া ম্যারেজ মিডিয়ার সাথে যুক্ত আছেন।
তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে।---পরিবর্তন
খবর বিভাগঃ
বিশেষ খবর
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়