ঝালকাঠি: ঝালকাঠি জেলা কারাগারের প্রিজন সেল নির্মাণে আড়াই কোটি টাকার কাজের টেন্ডার নিয়ে ঠিকাদার কর্তৃক কর্মচারীকে মারধরের ঘটনায় গণপূর্ত বিভাগের কার্যালয়ে তালা ঝুলানো হয়েছে। অফিস সহকারী মোজাম্মেল হককে ঠিকাদার নাসির উদ্দিন খান মারধর করার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে গনপূর্ত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টা থেকে নির্বাহী প্রকৌশল কার্যালয়ের প্রধান গেট তালাবদ্ধ করে কর্মচারীরা কর্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। কিছু সময় পর সেখানে নির্বাহী প্রকৌশলি আবুল কালাম উপস্থিত হয়ে কর্মচারীদের কথা শোনেন। তখন সেখানে কর্মচারীকে মারধর করা ঠিকাদার নাসির উদ্দিন খান উপস্থিত হয়ে অপর এক ঠিকাদার গাজী সানাউল হকের এই টেন্ডারে দূর্নীতির প্রসঙ্গ তোলেন। এতে তাদের মধ্যে বাকবিতান্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। তখন নির্বাহী প্রকৌশলী নিজেই তাদের দুজনকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। এরপর সেখানে উপস্থিত কর্মচারীদের সাথেও ঠিকাদার নাসির খান বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পরলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারন সম্পর্কে অফিস সহকারী মোজাম্মেল হক জানান, গত বুধবার দেড়টায় আমাকে ঠিকাদার নাসির অফিসে এসে মারধর করে চলে যান। তখন নির্বাহী প্রকৌশলি তার রুমে অবস্থান করছিলেন। সাথে সাথে আমি বিষয়টি তাকে জানালে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন। মারধরের কারন হিসাবে মোজাম্মেল হক বলেন, গত অর্থ বছরে নাসির উদ্দিন খান জেলা কারাগরের প্রিজন সেল নির্মাণের আড়াই কোটি টাকার টেন্ডারে অংশ নিতে পারেননি। কিন্তু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক সময়ে এই টেন্ডার আহবান করায় তিনি আমাকে দোষারোপ ও মারধর করে। এ প্রসঙ্গে গনপূর্ত শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি জালাল আহমেদ, সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, নির্বাহী প্রকৌল কার্যালয়ের প্রধান সহকারী আজীজুর রহমান, ক্যাশ সহকারী শাহ্আলমসহ অন্যান্য কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার নাসির খানের অবৈধ আবদার না মানলেই সে যখন তখন সবাইকে মারধর এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। ইতিপূর্বেও তিনি গনপূর্তের সাবেক পিয়ন শাহ্আলম, অফিস সহকারী কালাম, ইষ্টিমেটার খোরশেদ আলম ও মাসুদ হোসেন, বিভাগীয় হিসাব রক্ষক আলমগীর হোসেনকে মারধর করেছে। বিগত দিনে এভাবে মারধর করে দুর্নীতির মাধ্যমে পার পেয়ে যাওয়ায় তিনি জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। তার এই বিশাল অর্থ সম্পদ ও ব্যাংক ব্যালেন্সের উৎস কোথায় তা খাতিয়ে দেখা হলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। আমরা এই ঠিকাদারের সঠিক বিচার দাবী করছি। এ প্রসঙ্গে গনপূর্তের অপর এক ঠিকাদার গাজী সানাউল হক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অফিসের কর্মচারীদের সাথে আমাদের সৌহার্দপূর্ন সম্পর্ক রেখেই কাজ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে তারা কোন অন্যায় করলে তা নির্বহী প্রকৌশলির কাছে অভিযোগ করা যেতে পারে। কিন্তু কর্মচারীদের গায়ে হাত তোলার নিন্দা জানাই। এবিষয়ে ঠিকাদার নাসির উদ্দিন খান তার বক্তব্যে বলেন, ঠিকাদার গাজী সানাউল হকের সাথে জেল খানার টেন্ডার চাপা দেয়ার ঘটনায় অফিস সহকারী মোজাম্মেল হক জড়িত। তাই আমি এই ঘটানার প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়ে ঝালকাঠি গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলি আবুল কালাম জানান, গত বুধবার আমি আমার রুমে থাকা কালিন সময়ে আমার ষ্টাফকে মারধর করার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবগত করেছি। এই নিয়ে বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয় পক্ষের সাথে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে গণপূর্তের বরিশাল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলি আব্দুল গনি জানান, ঘটান যাই হোক, আমার ষ্টাফের গায়ে হাত দেয় ঠিক হয়নি। বিষয়টি দ্রুত সুরাহার নির্দেশ দিয়েছি। ---ডিনিউজ
খবর বিভাগঃ
অন্য জেলা
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়