পাবনা: যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে পাবনার এক সহকারী জজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে তার স্ত্রী। মামলার শুনানি শেষে আগামী ৩১ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম গাজীর সঙ্গে ২০১১ সালের ৩ ডিসেম্বর একই উপজেলার নাংলা গ্রামের মারুফা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মারুফা খাতুনের নিকট মোটা অংকের যৌতুক দাবি করে তাকে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল তার স্বামী। ২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সিরাজুল ইসলাম গাজী তার কাছে ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে বাডী থেকে বের করে দেয়। একই বছরের ১৩ নভেম্বর মারুফা খাতুন সাতক্ষীরা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে সিআরপি-১১৯/১২ (দেবহাটা) একটি মামলা দায়ের করেন। এরই মধ্যে সিরাজুল ইসলাম গাজী পাবনার বেড়া কোর্টের সিনিয়র সহকারী জজ হিসেবে পাবনায় যোগদান করেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, স্বামী সিরাজুল ইসলাম গাজীর ভগ্নিপতি আব্দুল খালেক মারুফা খাতুনকে বলেন, আপনার স্বামীর কর্মস্থল পাবনার বাসায় গেলে এই সমস্যার সমাধান হবে। চলতি বছরের ২৬ জুলাই মারুফা খাতুন পাবনা শহরের মণ্ডলপাড়ার (শাহারা ক্লাব) ভাড়া বাসায় গেলে সিরাজুল ইসলাম গাজী যৌতুকের ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে নির্যাতন করে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় মারুফা খাতুন চলতি বছরের ৩ আগস্ট পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৩৭/২০১৩।
পাবনার বেড়া কোর্টের সিনিয়র সহকারী জজ সিরাজুল ইসলাম গাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মানসিক ও পারিবারিক অশান্তি, চরিত্রহীন, অবাধ্য, অসামাজিক আচরণ এবং প্রতারণার অভিযোগে স্ত্রী মারুফা খাতুনকে ২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর খুলনা কোর্টের মাধ্যমে তালাক প্রদান করা হয়। তিনি আরো বলেন, তালাক প্রাপ্ত হওয়ার পরও সে আমার গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে অবস্থান নেয়। গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্ততায় সে বাবার বাড়ী ফিরে যায়। আমার ভাই মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম ২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা থানায় ৩৩৩ নং একটি সাধারণ জিডি করেছেন। তিনি বলেন, আমার কর্মস্থল পাবনায় এসে সাবেক স্ত্রী মারুফা খাতুন বাসায় আসেন এবং জোরপূর্বক আমার সঙ্গে থাকার জন্য জোর করেন। থাকতে না দেওয়ায় সে আত্মহত্যার হুমকি দেন। এর ফলে ২০১২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আমি পাবনা সদর থানায় ৪৭০ নং একটি সাধারণ ডায়েরী করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার সঙ্গে অনেক আগেই আমার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে। যৌতুকের মামলা খারিজ হওয়ার এক বছর পর আবার নতুন করে নির্যাতনের মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।
এদিকে মামলার বাদি মারুফা খাতুন এব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে রাজি না হওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে তার আইনজীবী আশরাফুজ্জামান হালিম বলেন, বুধবার আদালতে মামলার শুনানি হয়েছে। আগামী ৩১ অক্টোবর আদালত মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।---ডিনিউজ
খবর বিভাগঃ
অন্য জেলা
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়