Monday, September 23

বেগম জিয়ার জনসভাকে ঘিরে খুলনা বিভাগে জোর প্রস্তুতি


খুলনা: ২৯ সেপ্টেম্বর খুলনায় বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভাকে ঘিরে গোটা খুলনা বিভাগে চলছে প্রস্তুতির মহড়া। বিভাগের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যায়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের পাশাপাশি ১৮দলীয় জোটের উদ্যোগে চলছে প্রস্তুতি। এ জন্য প্রতিদিন শুভেচ্ছা মিছিলের পাশাপাশি গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ, গণসংযোগ ও আলোচনা সভা চলছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রত্যন্ত পল্লী থেকে শহরতলী- উপজেলা ও জেলা সদর সমূহে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা শুরু হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে কিভাবে বরণ করা হবে, জনসভায় কতো লোক আনা হবে তার জোর প্রস্তুতি চলছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে ২৮ সেপ্টেম্বর বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সড়ক পথে খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন। পথে বিভিন্ন পথ সভায় ভাষণ দেবেন। এরপর ওই দিন রাতে তিনি যশোর সার্কিট হাউজে অবস্থান করবেন। যশোর জেরা বিএনপি রাতে তার আগমনকে একটি সামবেশের মাধ্যমে স্বাগত জানাবে।
পরের দিন সকালে তিনি খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। যশোর থেকে খুলনা পর্যন্ত দীর্ঘ ৬০ কিলোমিটার পথে নামবে হাজারো জনতার ঢল। বিএনপি’র জাতয়ী স্থায়ী কমিটি’র সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম যশোর জেলা বিএনপি’র প্রস্তুতি সভায় বলেছেন ২৯ সেপ্টেম্বর যশোর থেকে খুলনা পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে আবাল,বৃদ্ধসহ সব ধরণের মানুষ সারি বদ্ধভাবে দাড়িয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অভিনন্দন জানাবে। এ লক্ষ্যে যশোর সদর, অভয়নগর,বাঘারপাড়া,মনিরাপুর ও কেশবপুর উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক সাধারণ মানুষের উপস্থিতির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দীর্ঘ ৬০ কিলোমিটর পথ হবে জনতার স্বঃস্ফুর্ত নিরাপত্তা ঢাল।
খুলনা মহানগর বিএনপি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা ২টা থেকে মূল জনসভার কাজ শুরু হলেও সকাল থেকে পৃথক মঞ্চ থেকে জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পরিচালনায় গণ সঙ্গীত অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে সোমবার জনসভার মঞ্চ নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠিানিকভাবে শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, দেশ নেত্রীর আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে স্থানীয় ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ স্বেচ্ছায় নিজ নিজ এলাকায় বর্ণাঢ্য ফটক ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করবে। জনসভার দুই দিন আগে নগরীর প্রত্যেকটি সড়কদ্বীপের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো মরিচ বাতি দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হবে এবং গোটা নগরী সাজবে অপরূপ সাজে। প্রায় ১০লাখ লোকের সমাবেশ ঘটবে জনসভায়। তাই খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে মূল মঞ্চ হলেও তার আশে-পাশের তিন বর্গকিলোমিটার জুড়ে থাকবে মাইকের ব্যবস্থা। এ জন্য ঢাকাস্থ মাইক ব্যবসায়ী তাহের এর মালিক পক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে এবং তিন’শ মাইকের চাহিদা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া হাই রেজুলেশনের প্রজেক্টর দিয়ে জনসভার বাইরে আসা মানুষদের দেখার জন্য থাকবে বাড়তি ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে প্রযুক্তি আর সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশ গ্রহণের মাধ্যমে খুলনার জনসভা হবে এ যাবতকালের সর্ববৃহত জনসভা।
এ দিকে সোমবার দুপুর থেকে সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভার মূল মঞ্চ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। জনসভার দিন জাসাসের শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য পৃথক আরো একটি মঞ্চ তৈরি করা হবে। তৈরি হবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের চিত্র ধারনের সুবিধার্থে আরো একটি মঞ্চ। 
মূল মঞ্চ নির্মাণ কাজের প্রারম্ভে উপস্থিত সাংবাকিদের জনসভা কেন্দ্রিক বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি। তিনি বলেন, খুলনা মহানগর ও জেলা ছাড়াও বিভাগের অন্যান্য জেলা থেকে বিএনপি সহ ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা গাড়ি বহর নিয়ে আসবেন। এ জন্য আশেপাশের জেলাগুলোতেও ব্যাপক প্রস্ততি চলছে। জনসভার সমন্বয়কারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম শনিবার যশোরে এক বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় এ লক্ষ্যে সুষ্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। মূল মঞ্চের আয়তন হবে ৩৫ ফুট বাই ৭০ ফুট। নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি বলেন, আমরা সার্কিট হাউজ ময়দানকে জনসভা মঞ্চ হিসেবে গণ্য করবো। আর সমগ্র খুলনা মহানগরী হবে জনসভাস্থল। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে স্থাপন করা হবে এলইডি মনিটর, যাতে দূরদুরান্ত থেকে আগত মানুষ যারা মাঠের কাছ পর্যন্ত পৌছাতে পারেবন না, তারা মঞ্চের চিত্র দেখতে পারেন। 
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জনসভায় আগত নেতাকর্মীদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেয়া হবে। অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে সার্বক্ষণিকভাবে একটি করে এ্যাম্বুলেন্স থাকবে। জনসভার মাঠে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সাংবাকিদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বেষ্টনী সহকারে মিডিয়া গ্যালারী স্থাপন করা হবে। ফটো সাংবাদিকদের জন্য সুউচ্চ মঞ্চ তৈরি করা হবে। ১৮ দলীয় জোটের নারী কর্মী যারা পর্দা সহকারে জনসভায় নেত্রীর বক্তব্য শুনতে চান তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সোমবার মঞ্চ নির্মাণ কাজের উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা, মঞ্চ ও ময়দান উপ কমিটির আহবায়ক সেকেন্দার জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, এ্যাড. ফজলে হালিম লিটন, সিরাজুল ইসলাম মেঝোভাই, মোল্লা আবুল কাশেম, আ ন ম ফখরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, উপ কমিটির সদস্য সচিব আরিফুজ্জামান অপু, মাহবুব কায়সার, শেখ হাফিজুর রহমান, আবু হোসেন বাবু প্রমুখ। ---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়