ঢাকা: সকালের নাস্তায় রুটি, সব্জি, ডিম। বেলা সাড়ে ১১টায় সিঙ্গারা-সমুচা বা ফল। দুপুরে গোশত বা মাছ দিয়ে ভাত। বিকালের নাস্তায় দুধ-বিস্কুট। রাতে মাছ ভাত। কারাগারে বসেও নিত্য এমন খাবারই খাচ্ছেন সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার মালিক সেই সোহেল রানা। এসব খাবারের কিছু সরবরাহ করছে কারা কর্তৃপক্ষ। বাকিগুলো নিজের টাকায় ক্যান্টিন থেকে কিনে খাচ্ছেন তিনি। খাচ্ছেন, ঘুমচ্ছেন, অন্য বন্দিদের সঙ্গে গল্প-আড্ডায় কারাগারে বেশ আরামেই আছেন সোহেল রানা। যার বিরুদ্ধে রয়েছে হাজারেরও বেশি পোশাক শ্রমিক হত্যা মামলার অভিযোগ।-ঢাকা টাইম
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের হাই সিকিউরিটি কারগারের আছেন তিনি। ওই কারাগারে কক্ষ আছে এক হাজার ২০টি। বেশিরভাগ কক্ষেই রাখা হয়েছে একাধিক বন্দিকে। কোনো কোনোটিতে একজন । সাভারের যুবলীগ নেতা সোহেল রানাও আছেন একা এক কক্ষে। গত ২৪ এপ্রিল সাভারে নয়তলা বিশিষ্ট রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এতে বিপুল শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনায় করা মামলায় ২৮ এপ্রিল সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৯০ সেলের বিশেষ কক্ষে রাখা হয়। পরে মাসখানেক আগে তাকে পাঠানো হয় কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারগারে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগারে থাকতে বিশেষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করতেন রানা। পুরনো ঢাকার নান্নার মোরগ-পোলাও, সাতরওজা এলাকার আনন্দ বেকারীর নাস্তা, নাজিমউদ্দিন রোডের হোটেল নিরবের হরেক রকমের ভাজি-ভর্তা ও চিকন চালের ভাত খেতেন তিনি। ঠাণ্ডা পানীয় সরবরাহ করা হতো কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে প্রিন্স ফাস্ট ফুডের দোকান থেকে। এছাড়া প্রয়োজনে কারারক্ষী ও মেট-রাইটারদের মোবাইল ফোনেও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলতেন। পরে এসব অভিযোগ নিয়ে কানাঘুষা শুরু হলে রানাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগার থেকে কাশিমপুরে পাঠানো হয় বলে সূত্রে জানা গেছে।
তবে কারা কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী জানান, যেসব সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে এগুলোর কোনো প্রশ্নই আসে না। কোনো অভিযোগের কারণে নয় বরং নিরাপত্তাজনিত কারণে সোহেল রানাকে ঢাকা থেকে কাশিমপুরে পাঠানো হয়েছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, হাই সিকিউরিটি কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যান্য কারাগারের চেয়ে অনেক উন্নত। এছাড়া সুযোগ-সুবিধাও বেশি। তাছাড়া ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সেল সংখ্যা কম বন্দির চাপ বেশি। তাই তাকে ঢাকা থেকে গাজীপুরে পাঠানো হয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক জানান, মাসে দুইবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান রানা। কারাগার থেকে দেয়া খাবারই খাচ্ছেন তিনি। ইচ্ছে হলে কারাগারের ক্যান্টিন থেকে খাবারও আনিয়ে খাচ্ছেন। তবে এর বাইরে বিশেষ কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে না বলে জানান এই কারা কর্মকর্তা।
দায় এড়াতে চায় সোহেল রানা: রানা প্লাজা নির্মাণে ত্রুটি থেকে শুরু করে ফাটল দেখা দেওয়ার পরও পোশাককর্মীদের কাজে যেতে বাধ্য করার দায় নিতে রাজি নন সোহেল রানা। এখন পর্যন্ত তাকে দু'দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের বিশেষ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগে ডিবিও তাকে একাধিক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে বরাবরের মতো তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সর্বশেষ দফায় জিজ্ঞাসাবাদেও রানা দাবি করেন, ভবনটি ত্রুটিপূর্ণভাবে নির্মাণের দায় প্রকৌশলী ও নির্মাণের সঙ্গে জড়িতদের। আর ফাটল দেখা দেওয়ার পরও রানা প্লাজার পোশাক কারখানা খুলে রাখার দায়ভার কারখানা মালিকের। ভবনটি ধসে পড়ায় মালিক হিসেবে তিনি নিজেই ব্যক্তিগতভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
গত ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত রানাসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সবাই বর্তমানে কারাবন্দি। তাদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনজন। মামলার তদন্তের স্বার্থে বিদেশে থাকা দুই প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র।
রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনায় সাভার থানায় দুটি মামলা হয়। শিউলী আক্তার নামের এক পোশাককর্মী আদালতে একটি মামলা করেন। এরপর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। সাভার থানার দুটি ও আদালতে করা মামলাটির তদন্ত করছে সিআইডি। অন্যদিকে, রানার ইটভাটা থেকে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় ধামরাই থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়েছে। ওই মামলা বর্তমানে তদন্ত করছে সাভার জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী দেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম ওই ভবনধসের ঘটনায় মারা যান মোট ১ হাজার ১৩১ জন। আর জীবিত উদ্ধার করা হয় ২ হাজার ৪৩৮ জনকে।--ডিনিউজ
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের হাই সিকিউরিটি কারগারের আছেন তিনি। ওই কারাগারে কক্ষ আছে এক হাজার ২০টি। বেশিরভাগ কক্ষেই রাখা হয়েছে একাধিক বন্দিকে। কোনো কোনোটিতে একজন । সাভারের যুবলীগ নেতা সোহেল রানাও আছেন একা এক কক্ষে। গত ২৪ এপ্রিল সাভারে নয়তলা বিশিষ্ট রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এতে বিপুল শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনায় করা মামলায় ২৮ এপ্রিল সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৯০ সেলের বিশেষ কক্ষে রাখা হয়। পরে মাসখানেক আগে তাকে পাঠানো হয় কাশিমপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারগারে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগারে থাকতে বিশেষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করতেন রানা। পুরনো ঢাকার নান্নার মোরগ-পোলাও, সাতরওজা এলাকার আনন্দ বেকারীর নাস্তা, নাজিমউদ্দিন রোডের হোটেল নিরবের হরেক রকমের ভাজি-ভর্তা ও চিকন চালের ভাত খেতেন তিনি। ঠাণ্ডা পানীয় সরবরাহ করা হতো কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে প্রিন্স ফাস্ট ফুডের দোকান থেকে। এছাড়া প্রয়োজনে কারারক্ষী ও মেট-রাইটারদের মোবাইল ফোনেও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলতেন। পরে এসব অভিযোগ নিয়ে কানাঘুষা শুরু হলে রানাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারগার থেকে কাশিমপুরে পাঠানো হয় বলে সূত্রে জানা গেছে।
তবে কারা কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী জানান, যেসব সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে এগুলোর কোনো প্রশ্নই আসে না। কোনো অভিযোগের কারণে নয় বরং নিরাপত্তাজনিত কারণে সোহেল রানাকে ঢাকা থেকে কাশিমপুরে পাঠানো হয়েছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, হাই সিকিউরিটি কারাগারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যান্য কারাগারের চেয়ে অনেক উন্নত। এছাড়া সুযোগ-সুবিধাও বেশি। তাছাড়া ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সেল সংখ্যা কম বন্দির চাপ বেশি। তাই তাকে ঢাকা থেকে গাজীপুরে পাঠানো হয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক জানান, মাসে দুইবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান রানা। কারাগার থেকে দেয়া খাবারই খাচ্ছেন তিনি। ইচ্ছে হলে কারাগারের ক্যান্টিন থেকে খাবারও আনিয়ে খাচ্ছেন। তবে এর বাইরে বিশেষ কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে না বলে জানান এই কারা কর্মকর্তা।
দায় এড়াতে চায় সোহেল রানা: রানা প্লাজা নির্মাণে ত্রুটি থেকে শুরু করে ফাটল দেখা দেওয়ার পরও পোশাককর্মীদের কাজে যেতে বাধ্য করার দায় নিতে রাজি নন সোহেল রানা। এখন পর্যন্ত তাকে দু'দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের বিশেষ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগে ডিবিও তাকে একাধিক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে বরাবরের মতো তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সর্বশেষ দফায় জিজ্ঞাসাবাদেও রানা দাবি করেন, ভবনটি ত্রুটিপূর্ণভাবে নির্মাণের দায় প্রকৌশলী ও নির্মাণের সঙ্গে জড়িতদের। আর ফাটল দেখা দেওয়ার পরও রানা প্লাজার পোশাক কারখানা খুলে রাখার দায়ভার কারখানা মালিকের। ভবনটি ধসে পড়ায় মালিক হিসেবে তিনি নিজেই ব্যক্তিগতভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
গত ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনায় করা মামলায় এখন পর্যন্ত রানাসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সবাই বর্তমানে কারাবন্দি। তাদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনজন। মামলার তদন্তের স্বার্থে বিদেশে থাকা দুই প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র।
রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনায় সাভার থানায় দুটি মামলা হয়। শিউলী আক্তার নামের এক পোশাককর্মী আদালতে একটি মামলা করেন। এরপর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। সাভার থানার দুটি ও আদালতে করা মামলাটির তদন্ত করছে সিআইডি। অন্যদিকে, রানার ইটভাটা থেকে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় ধামরাই থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়েছে। ওই মামলা বর্তমানে তদন্ত করছে সাভার জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী দেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম ওই ভবনধসের ঘটনায় মারা যান মোট ১ হাজার ১৩১ জন। আর জীবিত উদ্ধার করা হয় ২ হাজার ৪৩৮ জনকে।--ডিনিউজ
খবর বিভাগঃ
বিশেষ খবর
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়