Saturday, August 24

চিতায় তোলার আগেই বেঁচে উঠলো মড়া

:: সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :: 
চারদিকে হরি বল, বল হরি ধ্বনি। স্বজনেরা অপেক্ষায় আছেন কিছুক্ষণ পর চিতায় তোলা হবে মরদেহ। আবারো হরি বল ধ্বনিতে স্বজনেরা এগিয়ে গেলেন মরদেহের কাছে। কিন্তু চিতায় তোলার আগে নড়ে ওঠেন মড়া সূর্যকান্ত রায় (৬৫)।
এগিয়ে আসেন ডাক্তার। মরার পরেও প্রায় একঘণ্টা বেঁচে ছিলেন সূর্যকান্ত। এরপর আবার নিথর হয়ে আসে তার দেহ।
শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মোবারকপুর শ্মশান ঘাটে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে। মরা মানুষ বেঁচে যাওয়ার খবর শুনে উৎসুক মানুষ শ্মশানঘাটে ভিড় করেন।
মোবারকপুর গ্রামের রঞ্জিত রায় জানান, তার বাবা সূর্যকান্ত তিন মাস আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সে সময় অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে তিনি সে যাত্রায় বেঁচে যান। কিন্তু পার্শ্বক্রিয়া হিসেবে তিনি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। বৃহষ্পতিবার বিকেলে সূর্যকান্ত রায়ের বোন নগরবাসী হালদার মৃত্যুবরণ করেন। শোকে সূর্যকান্ত বিমর্ষ হয়ে পড়েন।
শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে মোবারকপুর শ্মশানে বোনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পর সূর্যকান্ত রায় আবোরো হৃদরোগে আক্রান্ত হন। বিকেল ৫ টার দিকে গ্রাম্য ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রামবাসী জানান, ধর্মীয় রীতিনীতি শেষে রাত ৮ টার দিকে মৃতদেহ মোবারকপুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। স্নানশেষে 'হরি বল-হরি বল, বল হরি, হরি-হরি' ঈশ্বরের নাম জপ করে চিতায় তোলার আগেই মরদেহে প্রাণের স্পন্দন অনুভব করেন চিতার আশেপাশে থাকা স্বজনেরা।
এ সময় ডাকা হয় গ্রাম্য ডাক্তার হাজরা পদ বিশ্বাসকে। তিনি নাড়ির গতি পেয়ে শ্মশানঘাটেই সূর্যকান্তের শরীরে স্যালাইন পুশ করেন। এরপর ডাক্তার হাজরা পদ বিশ্বাসের পরামর্শে ডাকা হয় তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিত্সক ডা. ফরহাদ হোসেনকে।
এক ঘণ্টা বেঁচে ছিলেন সূর্যকান্ত। রাত ৯ টার দিকে চিকিত্সক ফরহাদ হোসেন তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শুক্রবার রাতেই মরদেহের সত্কার করা হয়।
এবার সত্যি সত্যি মারা যান সূর্যকান্ত।
তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিত্সক ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, রাইগারমোটিভস এর কারণে অনেক ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির দেহে তাপ অনুভূত হয়। এ সময় মনে হতে পারে তিনি বেঁচে আছেন। পরে এ তাপ চার ঘণ্টা স্থায়ী থাকার পর ধীরে ধীরে নেমে আসে। সূর্যকান্তের বেলায় এমনটি ঘটেছিলো।----পরিবর্তন

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়