Friday, August 23

দাকোপে মানুষ বেচাকেনার হাট

দাকোপ(খুলনা): দাকোপ উপজেলা সদর চালনা বাজার লেকের পাড়ে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে কাজের সন্ধানে আসা অভাবী মানুষের শ্রম বেচাকেনার হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে। 
জানা গেছে উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী চালনা বাজারে বুধবার সাপ্তাহিক হাট বসে। আর এ হাটে শ্রাবণ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ভোর ভাদ্র মাস ধরে চলে মানুষের শ্রম বেচাকেনা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিভিন্ন উপজেলা থেকে কাজের সন্ধানে আসা অভাবী মানুষের কেনাবেচা। আবার আরেক শ্রেনীর মানুষ (মহাজন) আসে তাদের কিনতে। চলতে থাকে অন্যান্য পন্যের মত দরকষাকষি। কখনও দর বাড়ে আবার কখন কমে। এক পর্যায়ে বিভিন্ন পন্যের মতোই বিক্রয় হয় তারা। এখানকার স্থানীয় ভাষায় বলে কিষেন বা জন। এ মৌসুমে শ্রমজীবিদের বাড়িতে কোন কাজ না থাকায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের শ্রমজীবী মানুষ দলে দলে কাজের সন্ধানে ছুটে আসে এ অঞ্চলে। দাকোপ উপজেলাসহ আশ পাশ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মহাজন বা কৃষকরা ধানের আবাদ ও ধান কাটার জন্য কিষেন কিনে বাড়িতে নিয়ে যায়। চালনা বাজার ছাড়াও উপজেলার বাজুয়া ও কালিনগর হাটে শ্রমজীবী মানুষ বিক্রি হয়। এরা কেউ কেউ এক সপ্তাহ আবার কেউ কেউ এক মাসের জন্য বিক্রি হয়। এই অঞ্চলের মানুষ বেশিরভাগ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এই জন্য বর্ষা মৌসুমে এই অঞ্চলে কিষেনের বড়ই অভাব। তাই বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আসা অভাব অনটনে থাকা মানুষেরা এ অঞ্চলে আসলে তাদের কাজের অভাব হয় না। কথা হয় হাটে বিক্রি হতে আসা সাতক্ষিরার পদ্মপুকুর এলাকার লুৎফর মোড়ল, ওবাইদুল সানা, আজাহার আলী, কয়রা উপজেলার মহাব্বত আলী গাজী, দিনবন্ধু রায়, পরিতোষ রায়, মহিবুল হাওলাদার, পীর আলী সরদার, শাহাদাৎ মিয়া, গফুর মোড়ল, জয়দেব মন্ডল, আব্বাস আলী গাজী, ফারুক গাজী, প্রফুল¬ সরদারসহ অনেকের সাথে। তারা বলেন, এ অঞ্চলে প্রতিবছর কাজের সন্ধানে আমরা ছুটে আসি। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বাড়িতে কাজ করলে যা মুজরী পাই তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। তাছাড়া সব সময় কাজও মেলে না। হাটে এসেছি বিক্রি হতে, যদি বিক্রি হতে পারি তাহলে ভাগ্য ভাল, না হলে যেতে হবে অন্য হাটে বিক্রি হতে। এবছর কিষেনের বেশী চাহিদা থাকার কারনে অন্যান্য বছরের তুলনা দাম মোটামুটি ভাল। চালনার হাটে কিষেন বিক্রি হচ্ছে ১৩শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। কথা হয় কিষেন কিনতে আসা মহাজন খোনা এলাকার শশধর মন্ডলের সাথে, তিনি জানান অন্যান্য হাটের তুুলনায় চালনার হাটে কিষেন বেশী ওঠে। তাছাড়া কিষেনের দামও তুলনা মূলকভাবে কম। তাই এখানে কিসেন কিনতে এসেছি। আমি জনপ্রতি সপ্তাহে সাড়ে ১৪শ টাকা করে ৩ জন নিয়েছি। --ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়