ঢাকা : মিশরে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি সমর্থকদের ওপর সেনা অভিযানে কমপক্ষে ৫২৫ জনের মৃত্যুর পর কায়রোতে আবারও বিক্ষোভের আহবান জানিয়েছে মুসলিম ব্রাদারহুড। তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিশরের সামরিক অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হাজেম এল বেবলায়ি দাবি করেছেন, ‘নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত’ করতেই কায়রোয় মুরসি সমর্থকদের ওপর দমনাভিযান চালানো হয়েছে। বুধবারের সেনা অভিযানে কায়রোসহ বিভিন্ন শহরে মুরসি সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে অন্তত ৪২১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানা গেছে। তবে স্কাই নিউজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, সামরিক অভিযানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছে শত শত মানুষ। এদিকে মুসলিম ব্রাদারহুড দাবি করেছে, বুধবারের অভিযানে ২৫০০ জনের বেশি মুরসি সমর্থক নিহত হয়েছেন। অভিযানের পর দেশব্যাপী এক মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ব্যাপক প্রাণহানির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারই কায়রোতে আবার বিক্ষোভ মিছিল ডেকেছিল মুসলিম ব্রাদারহুড। ব্রাদারহুডের মুখপাত্র জেহাদ এল-হাদ্দাদ টুইটার বার্তায় লিখেছেন, আমরা সবসময়ই অহিংস এবং শান্তিপূর্ণ থাকবো। অবিচল থাকবো। সেনা অভ্যুত্থানের পতন না ঘটানো পর্যন্ত আমরা সামনে এগিয়ে যাবো। বুধবার ভয়াবহ সহিংসতার পর রাজধানীসহ অন্য ১০টি প্রদেশে জারি হওয়া জরুরি অবস্থা এবং সকাল-সন্ধ্যা কারফিউতে পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত হয়ে এসেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক রক্তক্ষয়ী অভিযানের নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বৃটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, তুরস্ক মিশরে সহিংসতার ঘটনায় তীত্র নিন্দা জানিয়েছে। তবে নিন্দার এ ঝড়ের মুখেও মিশরের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হাজেম বেবলাওয়ি দমনাভিযানের সাফাই গেয়ে বলেছেন, নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার স্বার্থেই মিশরের নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভ শিবির ভেঙে ফেলতে হয়েছে। বুধবার রাতে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি হতাহতের ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং জরুরি অবস্থা শিগগিরই তুলে নেয়া হবে বলে জানান। তিনি বলেন সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ মোটেও সহজ ছিল না। তাদেরকে যথেষ্ট সুযোগ দেযার পরই সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, আত্মসম্মান সম্পন্ন কোন দেশের পক্ষে আর সেটা মেনে নেয়া সম্ভব ছিল না। বিক্ষোভকারীরা হাসপাতাল এবং পুলিশ স্টেশনে হামলার মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা ছড়াচ্ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। তারা সরকারি এবং বেসরকারি ভবনে হামলার মাধ্যমে জনমনে ত্রাসের সৃষ্টি করছিল। মিশরের জনগণের শান্তি এবং নিরাপত্তা পুনঃস্থাপনের লক্ষ্যেই রাষ্ট্র এতে হস্তক্ষেপ করেছিল বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কোন গণতান্ত্রিক দেশই জরুরি অবস্থা জারি করে না। এছাড়া, বুধবারের সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৩ সদস্য নিহত হয়েছে দাবি করে মুরসি সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করায় নিরাপত্তা বাহিনীকে ধন্যবাদও জানান তিনি। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইবরাহীম দাবি করেছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পেশাদার আচরণই করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। মুরসি সমর্থকরাই সহিংসতার জন্য দায়ী বলে দাবি করেন তিনি।---ডিনিউজ
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়