Sunday, August 18

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি কমিটি হচ্ছে না!

নারায়ণগঞ্জ: বহুল আলোচিত বিএনপির নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটি ঘোষণা আবারো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যদিও অনুমোদন চেয়ে কমিটির একটি খসড়া চূড়ান্ত করে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কাছে জমা দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকা বিভাগীয় সম্পাদক ফজলুল হক মিলন। এদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. আবুল কালামও অপর একটি কমিটি কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছে। কমিটি দু’টি জমা দেয়ার পর দীর্ঘ কয়েক মাস কেটে গেলেও কোনটিই চূড়ান্ত করতে পারেনি।
এ নিয়ে বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, এ কমিটি গঠনে দায়িত্ব প্রাপ্ত ঢাকা বিভাগীয় সম্পাদক ফজলুল হক মিলন যথাযথ নিরপেক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। বন্দরে যেহেতু তার শ্বশুর বাড়ি, সেহেতু তিনি একটি পক্ষের হয়ে কাজ করেছেন বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। বহুল আলোচিত বিএনপির নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটি না হওয়ার পেছনে অন্য একটি প্রধান কারন হচ্ছে নাটের গুরু জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকারের অনীহা।
কমিটি গঠনের প্রথম দিকে সাবেক এমপি আবুল কালাম এগিয়ে থাকলেও শেষ খেলায় জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাড. তৈমূর আলম খন্দকার এখন পর্যন্ত সফল। তৈমূর খন্দকারের রাজনৈতিক অভিলাসের লুকায়িত খেলায় কমিটি এখন আটকে আছে এটাই এখন জোর রটনা। বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্রে জানিয়েছে, ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা করার পর বিলুপ্ত মহানগর কমিটি আবার গঠন করতে দলের গঠণতন্ত্র সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। গঠণতন্ত্র সংশোধন করতে জাতীয় কাউন্সিল করতে হবে। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপি গঠণতন্ত্র সংশোধন ছাড়াই দলের চেয়ারপার্সনের নির্দেশে চলতি বছরের প্রথম থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির একটি প্রস্তাবনা তৈরির কাজ শুরু করে। প্রথম দিকে ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনকে এ প্রস্তাবনা তৈরির দায়িত্ব দেয়া হলেও পরবর্তীতে ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকনকে এর সাথে যুক্ত করা হয়।
এরপর সাবেক এমপি আবুল কালাম ও মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন তাদের সাথে দেখা করেন। তারা পৃথক কমিটিও জমা দেন। আবার মাঝপথে কালাম-গিয়াসের মধ্যে দূরত্বও সৃষ্টি হয়। কালাম ও গিয়াসের দৌঁড়-ঝাঁপ দেখে তৎপর হয়ে ওঠেন জেলার অপরাপর শীর্ষ নেতারাও। জেলার বিভিন্ন থানার কোন্দল নিরসনের পরিকল্পনা নিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান, সহ-সভাপতি শাহ্ আলম, বদরুজ্জামান খসরুসহ অন্য নেতারা তৈমূর রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় এবং তাকে মহানগরের দায়িত্ব দিলে আন্দোলন আরো বেগবান হবে বলে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে প্রস্তাব দেন। এরপরই গণেশ উল্টে যায় বলে সূত্রটি জানায়। ওই বৈঠকের পর খালেদা জিয়া তার কাছে পেশ করা খসড়া প্রস্তাবনা ও জেলার নেতাদের মতামত নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন। এ অবস্থায় মহানগর কমিটি এখনও ঝুলে আছে।
ওদিকে, জেলার কয়েকজন শীর্ষ নেতা মনে করছেন, পুরো জেলার কর্তৃত্ব ধরে রাখতেই জেলা বিএনপি সভাপতি তৈমূর আলম খন্দকার চাইছেন, মহানগর কমিটি যেনো এখনই গঠন করা না হয়। তৈমূর আলমকে মহানগরের দায়িত্ব দেয়া হলে তার ক্ষমতার পরিধি কমে আসবে, এ ধারণায় মহানগর কমিটি গঠন নিয়ে তার অনীহা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন। তৈমূর আলম নিজেও যে কমিটি হোক তা চান না, তার কথায়ই তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তৈমূর আলম খন্দকার জানান, , এখন আন্দোলনের সময়, তাই এখনই মহানগর কমিটি গঠন করা হচ্ছে না।
অপরদিকে সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন একাধিকবার চেষ্টা করেও খালেদা জিয়ার সাক্ষাত পাননি বলে জানা গেছে। তবে তিনি ফজলুল হক মিলন, আমানউল্লাহ আমানসহ বেশ কয়েকজন নেতার সাথে দেখা করে তাদের ‘খুশি’ করেছেন বলে জানা গেছে। লাখ লাখ টাকার মিশন নিয়ে এখনও দৌঁড়-ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছে তার অনুগতরা। তবে যখনই মহানগর কমিটি গঠন হোক, সেখানে গিয়াস উদ্দিনের অবস্থান তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ হবে না বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। তবে যখনই এ কমিটি হোক না কেন, সে কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে নতুন চমক আসতে পারে এমনটি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক নেতা।---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়