Wednesday, August 14

জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করতে হবে : রাষ্ট্রপতির

ঢাকা : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুধবার এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ আহবান জানান।
রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, ‘আজ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির শোকাবহ দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৮তম শাহাদৎ বার্ষিকী আজ। তিনি বাণীতে এ দিনে শোকাহত চিত্তে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ।’
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। দেশের স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘাতকচক্রের হাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ হন। একই সাথে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, সহোদর শেখ নাসের, কৃষকনেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত, যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মনি ও তাঁর অন্তসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বেবী সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আরিফ, আব্দুল নঈম খান রিন্টুকে। এ ঘটনা কেবল বাঙালির ইতিহাসে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেও বিরল।
জাতীয় শোক দিবসে রাষ্ট্রপতি পরম করুণাময় আল্ল¬াহর দরবারে সেদিনের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের জাতীয় ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর অবদান অপরিসীম। তাঁরই নেতৃত্বে বাঙালি জাতি বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ‘৭০ এর সাধারণ নির্বাচনসহ এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি এই জাতিকে নেতৃত্ব দেন। এ জন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণসহ অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে এদেশের জনগণকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে এই মহান নেতা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । এ জন্য পুনরায় তাঁকে কারাবরণ করতে হয়, ফাঁসির মঞ্চে যেতে হয়। তবুও তিনি শত্র“র সাথে আপোশ করেননি। দেশ ও জনগণের স্বার্থকে সারাজীবন সমুন্নত রেখেছেন। দুঃখী মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তাই ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শ ও নীতিকে ধ্বংস করতে পারেনি। এ দেশ ও জনগণ যতদিন থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এদেশের লাখো-কোটি বাঙালির অন্তরে চির অক্ষয় হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পরে হলেও জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারী ঘাতকদের বিচার বাংলার মাটিতে সম্পন্ন হয়েছে। জাতি আজ অনেকটা কলঙ্কমুক্ত। যেসব মৃত্যুদন্ড-প্রাপ্ত ঘাতক আজো বিদেশে পালিয়ে রয়েছে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করতে সর্বোচ্চ তৎপরতা চালাতে হবে। জাতি জানবে হত্যাকারীদের ঠাঁই পৃথিবীর কোথাও নেই।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতির পিতা ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন। আমাদের দায়িত্ব হবে দেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে জাতির পিতার সেই স্বপ্ন পূরণ করা। তাহলেই তাঁর আত্মা শান্তি পাবে এবং আমরা এই মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারব।’---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়