Thursday, August 29

রাজাপুরের ফয়েজ মাষ্টারের অপকর্মের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ফেনী: ঢাকার ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক পরিমলের মত দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজে ফকির আহম্মদ ফয়েজ নামের আরেক পরিমলের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার নানা অপকর্মের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে প্রাক্তণ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভকালে ফয়েজ মাষ্টার সমর্থকদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র, এলাকাবাসী ও অভিযোগের আলোকে জানা গেছে, আমুভূঞার হাট মাদরাসার কৃষি শিক্ষক থাকাকালীন যৌন হয়রানির দায়ে বহিস্কৃত ফয়েজ বিগত সরকার আমলে রাজাপুর স্কুলে নিয়মনীতি বহির্ভূতভাবে শিক্ষক পদে যোগদান করেন। এর আগে আমুভূঞার হাট ফোরকানিয়া মাদরাসার শিক্ষক থাকাবস্থায় এক শিক্ষার্থীর সাথে অবৈধ মেলামেশা করে ফয়েজ। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেয়ে তাকে জুতা পেটা করে ঝাড়– মিছিল বের করে। একইভাবে প্রতিবেশী আবুল হায়াতের মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুললে এলাকা ছাড়া করা হয় তাকে। সেখান থেকে চট্টগ্রাম পূর্ব মাদার বাড়ী মাঝির ঘাট রোডে গৃহ পরিচারিকাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে শারিরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি চাইলে তাকে অস্বীকার করায় ওই গৃহপরিচারিকা শালিস বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করলে সেখান থেকে রাতের আধারে পালিয়ে যায়। এরপর ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মহিপাল হোটেল নাইট হোল্ডে নিয়ে আসে। এখানে অপকর্ম অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এভাবে প্রাইভেট পড়ানোর নামে শিক্ষার্থীদের প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। পরে একপর্যায়ে নিজ বাসায় ছাত্রীদের অসামাজিক কাজে বাধ্য করে। কয়েকজন বন্ধু নিয়ে রাজাপুর বাজারে কোচিং সেন্টার চালু করে। ওই সেন্টারে পতিতা এনেও অসামাজিক কার্যক্রম চালানোর সময় ওই ভবনের ভাড়াটিয়া ব্যংক কর্মকর্তার স্ত্রীর হাতে ধরা পড়ে। পরে শালিসি বৈঠকে তা মিমাংসা হয়। ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী অধ্যক্ষের নিকট মৌখিক অভিযোগ করলে তিনি এক সপ্তাহ সময় নেন। এর কোন সমাধান না হওয়ায় ২২ আগস্ট ফয়েজের নানা অপকর্মের সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখিতভাবে অধ্যক্ষকে প্রদান করা হয়। অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের সম্মানার্থে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ফয়েজ আগবাড়িয়ে অন্য শিক্ষকদের নিয়ে লিফলেট প্রচার করে। তার বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় স্কুলের অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দেয় ফয়েজ। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে দাগনভূঞা থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
ফয়েজ মাষ্টারের নানা অপকর্মের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ও রাজাপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তণ ছাত্র পরিষদের ব্যানারে বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। বাজার থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি কিছুদূর এগিয়ে গেলে সংঘাতের আশংকায় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ফের তারা সংগঠিত হয়ে মিছিল নিয়ে কলেজ অঙ্গিনায় প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দিতে চাইলে বিক্ষুদ্ধরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। পরে পুলিশের সাথে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে রুদ্ধদার বৈঠকে স্বল্প সময়ের জন্য মানববন্ধনের অনুমতি দেয়া হয়। খবর পেয়ে ফয়েজ মাষ্টার সমর্থকরা মিছিল নিয়ে মানববন্ধনের দিকে এগিয়ে যেতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী আরও জানায়, ফয়েজ মাষ্টার শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে বহিরাগত বখাটেদের নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চালায়। স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটে। এছাড়া একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকায় ফয়েজ মাষ্টার নির্বিঘেœ অপকর্ম চালিয়ে আসছে।
উল্লেখিত অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন ফকির আহম্মদ ফয়েজ। তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের যে কোনটি সত্য প্রমানিত হলে তিনি স্বেচ্ছায় চাকরী ছেড়ে দিবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

দাগনভূঞা থানার এস আই বদরুল জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিক্ষুদ্ধদের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসনে স্মারক লিপি প্রদানের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।----ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়