Tuesday, August 13

বিত্তশালী প্রার্থীর খোঁজে জাতীয় পার্টি


ঢাকা : মহাজোটের প্রধান শরীক দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একক নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনের জন্য যোগ্য প্রার্থী খুঁজছেন। আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীরা যেন বিজয়ী হতে পারেন সেজন্য সামাজিকভাবে সুখ্যাতি থাকার পাশাপাশি বিত্তশালী প্রার্থী খুঁজছে জাতীয় পার্টি।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে অন্তত একশ’ আসনে শিল্পপতিদের দিয়ে নির্বাচন করাতে চায় জাতীয় পার্টি। সেজন্য সারা দেশে বিত্তশালীদের পার্টিতে ভেড়ানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু বাধ সেধেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের নতুন আইন অনুযায়ী কমপক্ষে তিন বছর দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলে কেউ ওই দল থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। সেজন্য গোপনে জাতীয় পার্টিতে শিল্পপতি ব্যবসায়ীদের যোগদানের হিড়িক চলছে। বিত্তশালীদের যোগদানের বিষয়চি সম্পূর্ণ গোপন রাখছে দলটি। সময় সুযোগমত জানিয়ে দেওয়া হবে বিত্তশালী ওই নেতা তিন বছর আগেই পার্টিতে যোগদান করেছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে এস এ টেলিভিশনের স্বত্বাধিকারি সালাউদ্দিন আহমেদ, মাই টিভির স্বত্বাধিকারি নাসির উদ্দিন সাথী, আইসিএল গ্রুপের এমডি শফিকুর রহমান, টাঙ্গাইলের সৈয়দ ইউসুফ আবদুল্লাহ তুহিনসহ অনেকে ইতোমধ্যে পার্টিতে যোগদান করেছেন। এছাড়া যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বাবুল, এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীসহ বহু শিল্পপতির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে জাতীয় পার্টি। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জাতীয় পার্টি মানিকগঞ্জে এস এম মান্নান, নাটোরের এম এ তালহা, জাফর ইকবাল সিদ্দিকীসহ অনেক শিল্পপতিকে জাতীয় পার্টিতে ভিড়িয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করিয়েছিলেন। এমনিভাবে আগামী নির্বাচনকে ঘিরেও সারাদেশ বিত্তশালী প্রার্থীর সন্ধান করছে জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, জাতীয় পার্টি এখন খুবই শক্তিশালী। প্রতিটি জেলা ও উপজেলাসহ ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত পার্টির কমিটি রয়েছে। অনেক আসনে ৩ থেকে ৪ জন যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন। তিনি বলেন, দুটি দলের শাসনামল দেখে ব্যবসায়ী শিল্পপতি সমাজসেবকসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ জাপায় যোগদানের জন্য যোগাযোগ করছেন।
জানা যায়, দল থেকে যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছেন না এরশাদ। দুই শতাধিক আসনে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষনা করা হলেও অনেকের কাজে সন্তুষ্ট নয় পার্টি। সেজন্য তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করা হচ্ছে না। ঘোষিত সম্ভাব্য অধিকাংশ প্রার্থীর আসনে নতুন করে বিত্তশালী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। সূত্র জানায়, জেলা নেতাদের একাধিকবার গোপন নির্দেশনা দেওয়া হয় আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রাথীদের তালিকা জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু এতে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। আর বেশ কিছু এলাকায় এমন কিছু নাম আসছে যাদের প্রার্থী দিলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে না। যেজন্য বিত্তশালীদের দিকে ঝুকছে পার্টি। একাধিকবার বলার পরেও কোনোভাবেই ১৫০টির বেশি আসনের নামের তালিকা পাচ্ছে না। ঘুরে ফিরে বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, নওগাঁ, নাটোর, রাজশাহী, সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ময়মনসিংহ, ফেনী, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল ও ঢাকার আসনে প্রার্থীর তালিকাই জমা হচ্ছে।

জাপার এক যুগ্ম মহাসচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ বিএনপিতে থাকা জাপার বিত্তশালী সাবেক নেতারা ঘরে ফিরতে যোগাযোগ করছেন। তবে তাদের জন্য আরপিও’র ধারাটি (দল পরিবর্তনের তিন বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত সেই দল থেকে নির্বাচন করতে না পারা) অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরপিও ওই ধারাটি শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন না হলে জাপা একটি জোট গঠন করবে সেখানে বিএনপি আওয়ামী লীগে থাকা নেতারা দল গঠন করে যোগদান করবে বলেও জানান জাপার ওই যুগ্ম মহাসচিব। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এম এম এম আলম জানান, শিল্পপতি ব্যবসায়ী, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সঙ্গে কথা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের আইন নিয়ে। এমন আইনের কারণে অনেক বিত্তশালীর প্রার্থীতার ব্যাপারে পার্টিকে কৌশলের আশ্রয় নিতে হচ্ছে। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়