Wednesday, July 31

কানাইঘাটে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ১৪০ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
 কানাইঘাটের  ৫নং বড়চতুল ইউপির বড়চতুল গ্রামে আজ বুধবার ভোরে বিরোধপূর্ণ ফসলী জমির দখল ও পাল্টা দখল নিয়ে গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে রক্তয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৪০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ২৪ জনকে সিলেট ওমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন বড়চতুল গ্রামের মাখই মিয়া, নূরুল হক, জয়নাল আবেদীন, সায়ফুল আলম, হারুন আহমদ, হাবিব, হেলাল, এবাদুর রহমান, মখরব আলী, নূরুল হক, রইছ উদ্দিন, জলাল উদ্দিন, আইয়ুব আলী, হারুন রশিদ, শরীফ উদ্দিন, আব্দুস সাত্তার, হাসান, ইমাম উদ্দিন, মঈন উদ্দিন, মামুন, রুবেল, জলাল, রুবেল আহমদসহ অন্যান্য আহতদের কানাইঘাট ও পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, বড়চতুল গ্রামের ইউপি সদস্য আলমাছ উদ্দিন চৌধুরীর সাথে একই গ্রামের মীর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ গংদের সাথে ফসলী জমির উত্তরাধিকারী মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। উত্তরাধিকারী সূত্রে প্রাপ্ত আব্দুল্লাহ গংদের বিভিন্ন দাগের জমি দীর্ঘদিন ধরে আলমাছ উদ্দিন গংদের ভোগ দখলে থাকায় আব্দুল্লাহ গংরা পূর্বে বেশ কয়েকবার জমির দখল নিতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ নিয়ে থানায় ও আদালতে উভয় পক্ষের মধ্যে বর্তমানে মামলা চলছে। গত রবিবার আলমাছ উদ্দিন গংরা বিরোধপূর্ণ এক খন্ড জমিতে ধানের চারা রোপন করলে আব্দুল্লাহ গংরা পাল্টা একই জমিতে ধানের চারা রোপন করে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জের ধরে আব্দুল্লাহ পক্ষের লোকজন কানাইঘাট-দরবস্ত রাস্তার নাপিত খালের পাশে অবস্থিত একখন্ড ফসলি জমি গতকাল দখল করবে মর্মে ঘোষণা দিয়ে ব্যাপক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করলে আলমাছ পক্ষের লোকজনও দখল প্রতিরোধে পাল্টা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। উত্তেজনার প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার রাতে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরী উভয় পক্ষকে জমি দখল ও পাল্টা দখল থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিলে দু’পক্ষই তার শান্তি প্রস্তাব মেনে নেন। কিন্তু আজ বুধবার সেহরির পর ভোর অনুমান ৫টার দিকে আব্দুল্লাহ পক্ষের কয়েকশত লোকজন লাঠিসটা, সেল, সুলফি ও ইট পাটকেল নিয়ে আলমাছ উদ্দিনের দখলে থাকা বিরোধপূর্ণ ফসলি জমির দখল নেয়। খবর পেয়ে ভোর ৬টার দিকে আলমাছ পক্ষের লোকজন জমি পুনঃদখলের চেষ্টা করলে দু’পক্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। রক্তক্ষয়ী  প্রায় আধ ঘন্টা ব্যাপী  সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৪০ জন রক্তাক্ত জখম হন। এসময় বিভিন্ন পরগণার মুরব্বিয়ানরা পক্ষদ্বয়কে সংঘর্ষ থেকে নির্লিপ্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আলমাছ পক্ষের লোকজন পিছু হটে নিরাপদ অবস্থানে চলে যায়। এ সময় আলমাছ পক্ষের জনৈক ওলিউর রহমানের বসত বাড়ীতে আব্দুল্লাহ পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙ্গচুর করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করে। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন, উভয় পক্ষের অবশ্যম্ভাবী সংঘর্ষের বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে বার বার ফোন করে জানানো সত্ত্বেও পুলিশ যথা সময়ে ঘটনাস্থলে না আসায় পবিত্র রমজান মাসে এতবড় রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়