Friday, July 5

ঢাকা সাজাতে নতুন পরিকল্পনা রাজউকের

ঢাকা : রাজধানী ঢাকাকে সাজাতে নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজধানীর অপরিকল্পিত আবাসিক এলাকাগুলোর উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে নতুন এ প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে।

প্রকল্পটির মাধ্যমে বিশেষ করে পুরান ঢাকার যেসব এলাকায় গাড়ি চলাচলের মতো রাস্তা নেই সেসব এলাকার ভবন ভেঙ্গে রাস্তা বড় করা বা স্কুল-কলেজ না থাকলে তা স্থাপন করা হবে। তবে এক্ষেত্রে ঐতিহাসিক কোনো স্থাপনা থাকলে তা রেখেই প্রকল্পের কাজ করা হবে।

এ নিয়ে ইতোমধ্যে পুরান ঢাকার একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে রাজউকের একটি টিম প্রাথমিক আলোচনা করেছে। এতে তাদের সম্মতি পাওয়া গেছে।

পর্যায়ক্রমে নগরীর অন্যান্য অপরিকল্পিত আবাসিক এলাকাগুলোতে এ প্রকল্পের কাজ চলবে। তবে প্রকল্পটি কতদিনে বাস্তবায়িত হবে সে বিষয়ে রাজউক নির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বসবাস অযোগ্য এলাকা বাসযোগ্য করাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এক্ষেত্রে পুরান ঢাকা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থাকায় প্রথমে সে এলাকায় কার্যক্রম শুরু করা হবে।

এছাড়া এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে যেসব এলাকায় স্কুল-কলেজ নেই বা যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনমতো রাস্তা নই সেসব এলাকায় নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ করা ও স্কুল-কলেজ স্থাপন করা। এছাড়া দুর্যোগ থেকে উদ্ধার করার যথাযথ সুযোগ করাও প্রকল্পের লক্ষ্যে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ১০০ বছরের পুরাতন ভবনগুলোও রাজউকের আওতায় চলে আসবে। যা এর আগে কর্তৃপক্ষের আওতায় ছিল না। যখন এগুলো করা হয়েছিল তখন দীর্ঘমেয়াদি পারিকল্পনা না করেই করা হয়েছিল।

বর্তমানে বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এটা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। এর মাধ্যমে নগর সেবার মান বাড়ানো হবে বলে জানায় রাজউক।

জানা গেছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পুরান ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ ও ঘিঞ্জি এলাকায় অধিক পুরান ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা ইতোমধ্যেই তৈরি করেছে কর্তৃপক্ষ। এসব এলাকার ঝুঁকি নিরসন ও আধুনিকায়নের জন্য নতুন পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি করা করা হয়েছে।

রাজউকের তত্ত্বাবধায়নে পুরো কাজটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় বাসিন্দারা। নগর কমিটি, পুরান ঢাকার পঞ্চায়েত কমিটি, নগর পরিকল্পনাবিদ ও পরিবেশবিদদের সমন্বয়ে গঠিত টিমের মতামতের ভিত্তিতে ভবন নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলে রাজউক জানায়।

রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী মো. এমদাদুল ইসলাম জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য রাজউক অনেক দিন আগেই প্ল্যান করে রেখেছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে এটি বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।

তিনি জানান, আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এ কাজে রাজউক তদারকি ও নির্দেশনা দেবে। বাকি ওই জায়গার মালিক বা ভবন মালিককে করতে হবে। এক্ষেত্রে জায়গার মালিক বা স্থানীয়দের জন্য রাজউকের জন্য বিশেষ ছাড় দেয়া হবে।

কেউ যদি এর আওতায় আসে তাহলে তাকে ছয়তলা ভবনের জায়গায় দশতলা বা বেশি অনুমোদন দেয়া হবে। এতে করে ওই ব্যক্তি যে দুটি অতিরিক্ত ফ্ল্যাট পাবে তাতে তার অতিরিক্ত আয়ও হবে।

ফলে অনেকেই এর আওতায় আসতে চাইবে বলে মনে করেন তিনি। এ প্রকল্পটি পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকার কথা মাথায়  রেখে এর একটি খসড়া নকশা তৈরি করা হয়েছে।

এ নকশাটি নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশবিদ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে বসে রাজধানীবাসীকে অবহিত করা হবে। পর্যায়ক্রমে নগরীর যেসব এলাকায় অপরিকল্পিত সেসব এলাকায় এ প্রকল্পের কাজ চলবে।

এ বিষয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, এ প্রকল্পটি ড্যাপের মধ্যেই বিদ্যমান আছে। ড্যাপ বাস্তবায়িত হলে এটি আপনা-আপনিই হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, সরকার ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে না পেরে হয়তো নতুন ফর্মুলা তৈরি করছে। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে রাজউককে ক্ষমতায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে এর জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে। এর কোনোটিই না করে এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া বোধগম্য নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।--ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়