জাবেদ রহিম বিজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে: বহুরূপী তানিয়া। পরিচয় কখনও বিত্তশালী পরিবারের আদরের দুলারি। কখনও ব্যবসায়ী পিতার একমাত্র কলেজপড়ুয়া কন্যা। পোশাক-আশাক একেবারেই আধুনিক। সাজগোজ তার আকাশচুম্বী। টার্গেট ধনাঢ্য পরিবারের যুবক। বড় ব্যবসায়ী হলেও আপত্তি নেই। তার পাতানো ফাঁদে পড়ে অনেক যুবক হারিয়েছেন সর্বস্ব। অনেকে হয়েছেন নিঃস্ব। সম্মান হারিয়ে অনেকে হয়েছেন হতবিহ্বল। পরিচিত জন তার নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন। ধনী পিতার ছেলেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া তার পেশা ও নেশা। তার খপ্পরে পড়ে ধনাঢ্য পরিবারের অনেক যুবক বিপথগামী হয়েছেন। কৌশলে আইনের মারপ্যাঁচ দিয়ে এসব যুবকের পরিবার থেকে আদায় করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের রিকশাচালকের মেয়ে তানিয়া। মা চা-দোকানি। তার উচ্চাভিলাষী পোশাক ও চলাফেরায় কেউ তার আসল পরিচয় বোঝার উপায় নেই। হাতে দামি মোবাইল। টাইট জিন্সের প্যান্ট। বাহারি মেকআপ। দামি পারফিউম। যে কোন পুরুষকে কাছে টানে খুব সহজে। তানিয়ার এসব অপকর্মে মদদ দিয়ে যাচ্ছে তার অর্থলোভী পরিবারের সদস্যরা। এদিকে তানিয়া ও তার পরিবারের অসামাজিক কার্যকলাপে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। তাদের অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করতে সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন। বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও জানিয়েছেন তারা। এলাকাবাসী জানান, তানিয়ার অপকর্ম বন্ধ করার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে এলাকার কয়েকজন মিথ্যা সাজানো নারী নির্যাতন মামলার আসামি হন। তার সাজানো প্রেমের ফাঁদে পড়ে এলাকার বহু যুবকের জীবনে অন্ধকারে নেমে এসেছে। সম্প্রতি রুবেল মিয়া নামের এক যুবককে ফাঁদে ফেলে চার লাখ টাকা দাবি করে সে। টাকা না দেয়ায় ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে ৬ই মার্চ তানিয়া বাদী হয়ে রুবেলকে আসামি করে সরাইল থানায় মামলা দেয়া হয়। এ ঘটনায় ৭ই মার্চ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সালিশ বসে। সালিশে তানিয়ার সব অপকর্ম এলাকার লোকরা তুলে ধরেন। তারা এসব জঘন্য অপকর্ম বন্ধের প্রতিবাদ জানান। মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে এলাকার যুবকদের ফাঁসিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া তানিয়া ও তার পরিবারের পেশা ও নেশায় পরিণত হয়েছে বলে সালিশে প্রমাণিত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তানিয়ার বড়বোন সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে থানায় ১৭ই এপ্রিল সরাইল গ্রামের সৈয়দ বাড়ির কয়েক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করে। তাদের অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায় ২০১০ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর তানিয়ার মা বেগম বাদী হয়ে সরাইল থানায় এলাকার আট ব্যক্তির বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক নারী নির্যাতন মামলা করেছিল। এ ব্যাপারে জানতে বাড়িতে গিয়ে তানিয়াকে পাওয়া যায়নি। তার মা বলেন, এলাকার লোকজন আমার মেয়ের পেছনে লেগেছে। তাই তারা এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে। সরাইল সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. কাজল মিয়া জানান, তানিয়ার ব্যাপারে এলাকার লোকদের নিয়ে সালিশ করা হয়। সালিশে প্রমাণ হয় পারিবারিক মর্যাদা ও আর্থিক সচ্ছলতার প্রতি প্রলুব্ধ হয়ে তানিয়া রুবেল নামের যুবককে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এতে ব্যর্থ হয়ে কল্পকাহিনী সৃষ্টি করে মিথ্যা অভিযোগ এনে থানায় মামলা করে।--মানবজমিন
খবর বিভাগঃ
বিশেষ খবর
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়