Monday, June 17

বিমান বাহিনী ইউনিটে ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের অভিযোগ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর বাজার থেকে একজন ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে বিমান বাহিনী ইউনিটে আটকিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিমান বাহিনীর সদস্যদের আচরণে সোমবার শমশেরনগর বাজারে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যান বিমান বাহিনী ইউনিট থেকে আহত ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে আনেন। মঙ্গলবার সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে সমস্যার সমাধানে সামাজিক বৈঠকের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১২ জুন শমমেরনগর ইউনিয়নের পূর্ব ভাদাইর দেউল গ্রাম সংলগ্ন  বিমান বাহিনীর একটি খেলার মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বিমান বাহিনীর চতুত্য শ্রেণীর কর্মচারী এমওডিসির সাথে গ্রামের ছেলেদের বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল। এ বিরোধে উব পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দিলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ১৩ জুন সকাল ১০ টায় সামাজিক বৈঠকের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। অন্যদিকে সামাজিক বৈঠকের কথা বলে ১২ জুন রাতেই বিমান বাহিনীর পক্ষে পূর্ব ভাদাইর দেউল গ্রামের ৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে  কমলগঞ্জ থানায় হয়রানি মূলক মামলা করা হয়। এ রাতেই মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আকবর হোসেন লিটন নামে একজন ফুটবল খেলোয়াড় ও তার মামা তছবির আরীকে পুলিশ আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। 
সোমবার সকাল ৯ টায় কারাগারে আটক ফুটবলার আকবর হোসেনের চাচাতো ভাই মুক্তিযোদ্ধা সন্তান শরিফ আহমদকে শমশেরনগর বাজার থেকে ধরে বিমান বাহিনী ইউনিটে নিয়ে যায় বিমান সেনারা। বিমান সেনারা শরিফকে ইউনিটের ভিতরে একটি নির্যাতন কক্ষে আটকিয়ে হাত, চোখ বেধে ও মুখে কাপড় গুজে অমানসিকভাবে নির্যাতন চালায়।
বিমান বাহিনীর শমশেরনগর ইউনিটের পক্ষ থেকে আটক ব্যবসায়ীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করতে চাইলে, বিমান সেনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ায় পুলিশ বিমান বাহিনী ইউনিট থেকে আটক ব্যবসায়ীকে আনতে যায়নি। এ ঘটনাটি সর্বত্র জানাজানি হলে মৌলভীবাজার- ২  কুলাউড়া কমলগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাছ খাঁন এ ঘটনা নিয়ে বিমান বাহিনী শমশেরনগর ইউনিট অধিনায়ংক গ্রুপ ক্যাঃ আসিফ আহমদ আতিক একজন জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে আটক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে রাজি হন।
 অবশেষে সোমবার বেলা ১ টায় শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বিমান বাহিনী ইউনিটে গিয়ে আটক ব্যবসায়ী শরিফকে গ্রহন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন আক্তার ও ইউপি সদস্য হাফিজুল হক স্বপন।
শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বিমান বাহিনী সদস্য কর্তৃক ব্যবসায়ীকে ধরে নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে সংসদ সদস্যের নির্দেশে তিনি বিমান বাহিনী ইউনিটে গিয়ে আটক ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে আনেন। তবে বিমান বাহিনীর পক্ষে ইউনিট অধিনায়ক একটি মুচলেখা গ্রহন করেছেন। নির্যাতিত ব্যবসায়ী শরিফ আহমদ বলেন, তাকে অতর্কিতভাবে বিমান সেনারা ধরে নিয়ে অমানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কমলগঞ্জ থানার ওসি নীহার রঞ্জন নাথ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মঙ্গলবার সকালে যেহেতু সাংসদের উপস্থিতিতে সামাজিক বৈঠক বসবে তাই এ নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নন। তবে একটি কথা তিনি বলেন, বিমান বাহিনীর সাথে গ্রামবাসীর মামলা চলছে। এখানে বিমান বাহিনী নিজেরা পুলিশি ভূমিকায় যাওয়া ঠিক হয়নি। মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাছ খাঁন বলেন, ব্যবসায়ীকে আটকের খবর শুনে তিনি নিজে শমশেরনগর বিমান বাহিনী অধিনায়ককে ফোন করে আটক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে বলেছেন। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সামাজিক বৈঠক বসবে।(ডিনিউজ)

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়