Tuesday, May 28

রংপুরের হারাগাছে গ্রামবাসীরা নির্মাণ করলো আড়াইশ ফুট বাঁশের সাঁকো


রংপুরের হারাগাছ পৌর এলাকার মেনাজবাজার গোল্ডেনঘাট গ্রামে তিস্তার শাখা নদীর উপর একটি পাকা সেতুর অভাবে চরাঞ্চলের প্রায় দশ গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষদের বর্ষার মৌসুমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
চরাঞ্চলের মানুষরা দীর্ঘদিন ধরে একটি পাকা সেতুর দাবী জানিয়ে অবশেষে তারা সকলে মিলে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে চাঁদা উঠিয়ে নদীর উপর প্রায় সাড়ে ৪শ ফুট দৈর্ঘ্য একটি বাশের সাঁকো নির্মাণ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা নদী বেষ্ঠিত হারাগাছ পৌরসভার মেনাজবাজার গ্রামে তিস্তার শাখা নদীর উপর পাকা সেতু না থাকায় বর্ষা মৌসুমে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়। আর সেতুর অভাবে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে দু’পাড়ের গ্রামের মানুষগুলো।
ডাঙ্গা পাড়ের লোকজন চরাঞ্চল গ্রামের লোকজনের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতে পারতো না। শুকনো মৌসুমে নদীর উপর দিয়ে চরঘড়িয়াল, চরচতুরা, চরপল্লীমারী, চরচারমাথা, চরমিলনবাজার, চরকলমদার টারী, চরচিনাতুলী, চরকাউয়াটারী, চরহরিণচড়া, চরটাংরী গ্রামের লোকজন চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মোসুমে প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট গভীর পানি থাকায় কলাগাছের ভেলা ও ছোট নৌকায় দু’পাড়ের লোকজন পারাপার হতো।
লোকজনের পারাপার বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের মানুষেরা স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছে তিস্তার শাখা নদীর একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবী জানায়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। বরঞ্চ হারাগাছ পৌর কর্তৃপক্ষ সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা না নিয়ে নদীর শাখাটি গোল্ডেন ঘাট হিসেবে ইজারা দেয়। এতেকরে চরাঞ্চলের মানুষের পারাপারে আরো দুর্ভোগ বাড়ে।
নদী পারাপারে দশ গ্রামের মানুষদের গুনতে হয় টোলের টাকা। আবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধা নামার সাথে সাথে নদীতে নৌকা মেলেনা। অবশেষে সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতার অপেক্ষা না করে দীর্ঘ দুইমাস ধরে চরচতুরা গ্রামের তাজুল ইসলাম, পাইলট, ছাবেদ আলী ও নজরুল ইসলামসহ দুইপাড়ের গ্রামের মানুষেরা একত্রিত হয়ে, সারাদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাঁশ ও চাঁদা করে টাকা তুলে নারী-পুরুষরা সকলে মিলে নদীর উপর বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করে এবং শুক্রবার তা চলাচলের জন্য উন্মোক্ত করা হয়।
চরাঞ্চল গ্রামের মানুষেরা জানান, তিস্তার শাখা নদীর উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য অনেকবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বরঞ্চ চরাঞ্চলের মানুষদের জিম্মি করে ঘাট হিসেবে ইজারা দেয়া হয়েছিল।
আমরা নিজেরাই বাঁশের সাঁকো নিমার্ণ করার ফলে ডাঙ্গা ও চরাঞ্চল গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগের লাঘব হবে। চরাঞ্চলের মানুষের দাবী, জরুরী ভিত্তিতে তিস্তার শাখা নদীতে পাকা সেতু নির্মাণ করে অবহেলিত এলাকার বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীকে যোগাযোগ ক্ষেত্রে স¤পৃক্ত করে উন্নয়ন সাধন করবে।

আব্দুর রহমান মিন্টু :

বাংলাপোষ্ট২৪


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়