:: আকিদুজ্জামান আকিব ::
সামান্য বৃষ্টির পানিতেই প্লাবিত হচ্ছে সিলেট নগরীর রাস্তাঘাট। আর এই জলাবদ্ধতাতেই ‘কুপোকাৎ’ হয়ে পড়ছেন ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
সামান্য বৃষ্টির পানিতেই প্লাবিত হচ্ছে সিলেট নগরীর রাস্তাঘাট। আর এই জলাবদ্ধতাতেই ‘কুপোকাৎ’ হয়ে পড়ছেন ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমে যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার জন্য প্রতিদিনই জনগণের নানাবিধ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাবেক এই মেয়রকে। কোথাও মাথা নিচু করে, আবার কোথাও বা ভুল স্বীকার করে গণসংযোগ কাজ চালাচ্ছেন তিনি।
নগরীর শেখঘাট এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রশিদ বলেন, "আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র প্রার্থী কামরান ভারী বর্ষণ হলে এখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকেন। ১৫ জুনের আগে ভারী বর্ষণ হলে মেয়র প্রার্থী কামরানের ব্যর্থতার চিত্র ফুটে ওঠার সম্ভবনাই বেশি।"
সিলেটের মজুমদারপাড়া এলাকার সাব্বির আহমদ বলেন, "নগর পিতা কামরান সাহেবের চরম ব্যর্থতা হলো জলাবদ্ধতা ও অস্বস্তিকর যানজট।"
বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, নগরীর নালা বা খাল স্থানীয়ভাবে ‘ছড়া’ বলে পরিচিত। নির্বাচনকে সামনে রেখে নগরীর অলিগলিতে তড়িঘড়ি করে ড্রেন পরিষ্কারের কাজ চলছে এখন। এভাবেই ভোটারদের ইতিবাচক সাড়া পাবার চেষ্টা করছেন সাবেক মেয়র কামরান।
এলাকাবাসীরা আরো জানায়, অল্প বৃষ্টিতেই নগরীর শেখঘাট, কুয়ারপার, কুমারপাড়া, দাড়িয়াপাড়া, ইলেকট্রিক সাপ্লাই, সোবহানীঘাট, ধোপাদিঘীরপাড়, মাছিমপুর, কামরানের বাসা সংলগ্ন ছড়ারপার, কামালগড়, চালিবন্দর, মেন্দিবাগ, দেওয়ানবাগ, নোয়াগাঁও, কুশিঘাট, গোটাটিকর মাদরাসার সম্মুখের রাস্তা, আলমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদে। যা নগরবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে আধ্যাত্মিক নগরী সিলেট।
আওয়ামী লীগসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এ ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের ওপর।
অন্যদিকে, ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী সুযোগ নিচ্ছেন কামরানের এই দুর্বলতার। আরিফুল হক তার গণসংযোগে জলাবদ্ধতা নিরসনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তিনি মানুষকে যেমন জলাবদ্ধতা অবসানের কথা বলছেন, ঠিক একইভাবে মানুষও তাকে ভোট দেওয়ার শর্ত হিসেবে জলাবদ্ধতার নিরসন চাচ্ছেন।
মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলছেন, "নগর পিতা হতে চাই না, নগরবাসীর সেবক হতে চাই।"
সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, নগরীর উন্নয়নে বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ১১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসনে।
সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, "এটা ঠিক যে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে এবং একটু পানিও জমছে। কিন্তু আমার প্রতিদ্বন্দ্বি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট কথা বলছেন। যা মোটেও সত্য নয়।"
আরিফুল হক তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, “নগরীর উন্নয়নে বরাদ্দ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। আমার বিরোধী প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলছেন মাত্র ১১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসনে। কিন্তু আমি বলছি দু'একটি জায়গা ছাড়া কোথাও জলাবদ্ধতার চিহ্ন নেই।”
ভোটের প্রচারাভিযান চালানোর আগে আপনি জনগণকে দেখানোর জন্য কিছু এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, সাম্প্রতিক এ সংক্রান্ত কিছু কাজ করেছি। বেশ কিছুদিন আগে জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত নির্দিষ্ট কিছু প্রকল্প অনুমোদন হয়েছিল তা বাস্তবায়নে এখনও কাজ চলছে। এ নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তি করার কোনো মানে নেই।"
তিনি বলেন, "যতই বিভ্রান্তি ছড়ানো হোক না কেন আমি নির্বাচিত হব এবং সিলেটকে আধুনিক ও সন্ত্রাসমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো।”
অপরদিকে, ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে তার সহযোগী ও বিএনপি সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক আলতাফ হোসেন চৌধুরি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, "বৃষ্টি হলে ১৫-২০ মিনিটেই পুরো সিলেট শহরের রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। বিষয়টি এ নগরের মানুষই বলবে।"
প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, "আমরা সিলেট শহরের জন্য একজন কাউন্সিলর হিসেবে যা করেছি তা এখন মানুষ তাদের ভোটের মাধ্যমেই বলবে। সাবেক মেয়র কামরান শহরের জন্য যে কাজ করেছেন তার চেয়ে নিজের জন্য বেশি কাজ করেছেন। আর জলাবদ্ধতা নিরসনে তার ভূমিকা তিনি নিজেই বুঝতে পারছেন। যখন জলাবদ্ধতা নিয়ে তিনি মানুষের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন।”
আগামী ১৫ জুন সিলেটসহ ৪ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।(পরিবর্তন ডটকম)
খবর বিভাগঃ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়