ঘরের আগুনে জ্বলছে মীরসরাই উপজেলা বিএনপি। নেতাদের আধিপত্য বিস্তার, দ্বন্ধ এবং মনস্তাতিক লড়াইয়ে বিএনপি এ আসনে দ্বিখন্ডিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতারা একে অপরকে দোষারোপ করে পাল্টাপাল্টি নালিশ করছেন দলের হাই কমান্ডের কাছে।
এ মুর্হুর্তে বিরোধ নিরসন না করা গেলে আগামী নির্বাচনে আসনটি নিশ্চিত হাতছাড়া হওয়ার আশংকা প্রকাশ করছেন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বর্তমানে প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি অংশ এবং জাসাস নেতা শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী ও নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের নের্তৃত্বে একটি অংশের মধ্যে এই লড়াই চরম আকার ধারণ করেছে।
গত ৩ ই আগষ্ট একই স্থানে একই সময়ে দুই গ্রুপ ইফতার পার্টির আয়োজন করলে প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে। এরপর প্রফেসর কামাল গ্রুপ স্থান পরিবর্তন করে মীরসরাই কলেজে আয়োজন করার সময় শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী ও নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীরা হামলা চালায়।
এতে করে প্রফেসর কামাল গ্রুপের সাবেক উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি এডভোকেট অলিউল কবির ইকবাল, বারইয়ারহাট পৌরসভার কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন, ৬ নং ইছাখালী চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, পৌর বিএনপি সেক্রেটারী নাছির উদ্দিন,যুবদল নেতা মাঈন উদ্দিন, ডা. শাহ আলম, পারভেজসহ ১০ জন আহত হয়।
এরপর থেকে বিএনপির দুই গ্রুপের অবস্থান চরম আকারে পৌঁছেছে।অপরদিকে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা করার প্রত্যয় নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সমন্বয়ে গঠিত চারদলীয় জোটকে সম্প্রসারণ করে ১৮ দলীয় জোটে পরিণত করা হলেও মীরসরাই উপজেলায় জোটভূক্ত ১৬ দলেরই কোনো অস্তিত্ব নেই। গত এপ্রিল মাসে যেসব সংগঠনের সমন্বয়ে ১৮ দলীয় জোট গঠন করা হয়েছে সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে ১.বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), ২.জামায়াতে ইসলামী, ৩.বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ৪ ইসলামী ঐক্য জোট (আমিনী), ৫.খেলাপত মজলিস, ৬.লিবারেল ডেমোক্রেটিভ পার্টি (এলডিপি), ৭. জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ৮. ন্যাশনাল পিপল্স পার্টি (এনপিপি), ৯. কল্যান পার্টি, ১০. মুসলিম লীগ, ১১. বাংলাদেশ ন্যাপ, ১২. লেবার পার্টি, ১৩. ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিভ পার্টি (এনডিপি), ১৪. ইসলামিক পার্র্র্টি, ১৫. ডেমোক্রেটিভ লীগ, ১৬. ন্যাপ (ভাসানী), ১৭. পিপল্স লীগ এবং ১৮. জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতের কমিটি রয়েছে।
এছাড়াও অন্য ১৬ দলের কোনো অস্তিত্ব নেই। আবার বিএনপিতে নেতৃত্ব কোন্দলের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলা বিএনপি দু’গ্রুপে বিভক্ত। উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর কামাল উদ্দিন গ্রুপে নেত্বত্ব দিচ্ছেন বিএনপির উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন।
অন্য গ্রুপে নেত্বত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান। তার দলে রয়েছেন উত্তর জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী। দু’গ্রুপের অন্তঃদ্বন্দে ইউনিয়ন এমনকি গ্রাম পর্যায়েও নেতাকর্মীদের সাথে বিভক্তি রয়েছে। এই দ্বদ্বে মীরসরাই থেকে সরকার বিরোধী কর্মসূচী পালন করা হয় না।
দু’একটা বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হলেও দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া তা পন্ড হয়ে যায়। এদিকে, মীরসরাই উপজেলায় জামায়াতের কমিটি থাকলেও তা চোখে পড়ার মত নয়। ১৮ জোটের শরীক দল হলেও গত ৩ বছরের বিএনপির কোনো আন্দোলন কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন করেনি। যুদ্ধাপরাধীদের অপবাদে সংগঠনের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে পড়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল করিম বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মাঠের রাজনীতি থেকে জামায়াত একটু পিছিয়ে আছে। তবে অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমগুলো স্বাভাবিক চলছে বলেও তিনি জানান।
উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন বলেন, বিএনপিতে কোনো গ্রুপিং নেই তবে আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের বিএনপি প্রপেসার কামাল উদ্দিনের উদ্দ্যেগে সৎ এবং নিষ্ঠাবান রাজনৈতিতে আমরা মাঠে থাকব তবে আমাদের মাঝে কোন গ্রুপিং নেই।
সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেদিন ভুল বুঝাবুঝির কারণে ঘটনাটি ঘটে তবে মাঠ পর্যায়ে বিএনপির জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে বেড়েছে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাবে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।(বাংলাপোষ্ট২৪ )
খবর বিভাগঃ
বিশেষ খবর
রাজনীতি
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়