Wednesday, May 22

দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ সড়ক।সংস্কার কাজ শেষ হবে কবে?

আব্দুল্লাহ আল নোমান,নিজস্ব প্রতিবেদক:

কানাইঘাট উপজেলাবাসীর দুঃখ দরবস্ত-কানাইঘাট-শাহবাগ সড়ক। জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলার অধিকাংশ মানুষের যাতায়াতের প্রধানতম মাধ্যম হচ্ছে এটি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই সড়কটির উন্নয়ন ছিলো প্রার্থীদের সবচেয়ে বড় প্রতিশ্রুতি।

গত প্রায় এক বছর ধরেই রাস্তাটির সংস্কার কাজ চলছে। কিন্তু এখনও শেষ হয়নি। কবে শেষ হবে তার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না কেউ।

কাজের ধীরগতির কারণে শুকনো মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারীদের অভ্যর্থনা জানায় ধুলা-বালি আর বর্ষা মৌসুমে কাদা-মাটি। এছাড়া রাস্তার কংক্রিট সরে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। বিকল হচ্ছে যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ি।

এদিকে কয়েক মাস আগে রাস্তাটির কানাইঘাট অংশের সংস্কার করা হলেও দুই মাসের মাথায় তা আবারো ভেঙ্গে যাচ্ছে। এই অংশের সংস্কার কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় রাস্তাটি পুনরায় আগের মতো হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন স্থানীয়রা।

জৈন্তিয়া ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র সেলিম আহমদ বলেন, এই রাস্তার ভগ্নদশার কারণে কলেজে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আগে যেখানে সকাল ৯টায় বাড়ি থেকে বের হলে কলেজে গিয়ে সময়মতো পৌঁছা যেত, সেখানে এখন আরো আগে বাড়ি থেকে বের হতে হয়।

এদিকে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মহিলা ও স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মেয়েদের। জৈন্তা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রাজিয়া, লিজাসহ আরো কয়েকজন জানান তাদের এ দুর্ভোগের কথা।

চতুল বাজারের ব্যবসায়ী রুবেল চৌধুরী বলেন, সিলেট থেকে মালামাল পরিবহনে আগে যে ভাড়া দিতে হতো, এখন রাস্তার কারণে ভাড়াও বেড়ে গেছে।

গত বছর রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে কয়েকবার হরতালসহ কঠোর কর্মসূচির ডাক দেয় এলাকাবাসী। কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কয়েক দফা আন্দোলনের ফলাফল শূন্য।

এদিকে, রাস্তাটি যথাসময়ে সংস্কার না হওয়ায় আগামী সংসদ নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন কানাইঘাট উপজেলার সাধারণ নাগরিকরা।

তারা বলছেন, গত সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে এই রাস্তার সংস্কার ছিলো অন্যতম। কিন্তু নির্বাচনের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এই রাস্তার উন্নয়নে তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি। এমনকি রাস্তাটির সংস্কারে উদ্যোগ না নেওয়ার তার দলের নেতাদেরও তোপের মুখে পড়েন তিনি।

পরবর্তীতে এলাকাবাসীর আন্দোলনের ফলে নির্বাচনের শেষ বছরে এসে রাস্তার উন্নয়নে একটি প্রকল্প নেন তিনি। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে কিছু কাজ হলে তাও চলছে ধীরগতিতে এবং নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে।

অপরদিকে উপজেলার এক প্রান্তের সঙ্গে অপর প্রান্তের যোগাযোগের মাধ্যমে গাজী বোরহান উদ্দিন সড়কটি সিলেট শহর থেকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা হয়ে কানাইঘাটে প্রবেশ করেছে। গত ২০১১ সালে রাস্তাটি মেরামত করা হলেও ওই বছরেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যায়। ফলে দুই উপজেলার মানুষের ভোগান্তির আরো বেড়ে গেছে।

কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান ইকবাল বলেন, “এ নিয়ে আমরা বারবার আলোচনা করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের গতি থেমে যায়। এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় আল্টিমেটাম দিয়েছে, এমনকি হরতালও ডেকেছিলো। ইঞ্জিনিয়াররা কেন যেন ধীরে ধীরে কাজ করছেন।”




শেয়ার করুন

1 comment:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়