ঢাকা : মৃত্যুঞ্জয়ী রেশমার জন্য আসছে লোভনীয় চাকরির সব অফার। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে অফার আসছে বিদেশ থেকেও। রেশমা এখন দিনে দিনে সুস্থতার পথে এগোচ্ছেন। উদ্ধারকারী কর্মকর্তা ও রেশমার পারিবারিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, বেসরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন নামী-দামি প্রতিষ্ঠান রেশমাকে চাকরি দেয়ার প্রস্তাব করেছেন সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর কাছে। উদ্ধার অভিযান সমাপ্তি ঘোষণার রাতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, অনেক প্রতিষ্ঠানই রেশমার চাকরির জন্য প্রস্তাব দিচ্ছেন। তাদের প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি রেশমার ওপর নির্ভর করছে। তিনি পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেবেন কোথায় তিনি কাজ করতে আগ্রহী। গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সময় রেশমা বলেছিলেন- তিনি আর গার্মেন্টে চাকরি করবেন না। রেশমার পারিবারিক সূত্রমতে, রেশমার চাকরির প্রস্তাব দিয়েছেন জার্মানির একটি বেসরকারি টেলিভিশন। ইতিমধ্যে তারা সরাসরি রেশমার সঙ্গে কথা বলার জন্য সেনা কর্তৃপক্ষের অনুমতি চেয়েছেন। এছাড়া, ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষ অনানুষ্ঠানিকভাবে তাকে ওয়েস্ট্রেস পদে চাকরি দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। এর বাইরে বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী সংস্থা ছাড়াও ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেকেই চাকরির প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন। রেশমার চাচী হাজেরা বেগম বলেন, গতকালও একটি কোম্পানির কর্মকর্তারা রেশমার চাকরির প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু রেশমার মা জোবেদা খাতুন রেশমাকে নিজের কাছে নিয়ে যেতে চাইছেন। গ্রামের বাড়িতে নিয়ে বিয়ে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন। হাজেরা বেগম বলেন, এতে সম্মতি দেয়নি রেশমা। রেশমা বলেছে, এতদিন তোমরা খোঁজ-খবর রাখোনি। ভবন ধসের আগে আন্টির আশ্রয়ে ছিলাম। এখন সুস্থ হয়ে তার কাছেই ফিরে যাবো। আন্টির বাসায় গিয়েই সিদ্ধান্ত নেবো- কোথায় থাকবো। প্রায় আড়াই বছর আগে থেকে রেশমা সাভার বাজার রোডের বি-১৩৮ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই বাড়ির মালিক মনছুর আহমেদ নুরু। তিনি বলেন, আমার বাসাতেই রেশমা ভাড়া থাকতেন। তার স্বামী আবদুর রাজ্জাক ওরফে সবুজ ছিলেন বিকৃতমনের। চাকরির টাকার জন্য মাঝেমধ্যেই মারধর করতেন। একপর্যায়ে প্রায় বছরখানেক আগে রেশমাকে ছেড়ে স্বামী চলে যান। যাওয়ার আগে ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে দেন। এরপর থেকেই আমার স্ত্রী হাজেরা বেগম তাকে দেখাশোনা করতেন। মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছিলেন। এমনকি ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়ার পর রেশমা প্রথম ফোন করেছিলেন আমার স্ত্রীকে। তাকেই প্রথম দেখতে চেয়েছিলেন। হাজেরা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, এতদিন মেয়েকে আগলে রেখেছি। নিখোঁজ হওয়ার পর নিজে নিজেই বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেছি। তখনও পরিবারের কেউ আসেনি। রেশমার স্বামী সবুজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সে-ও মিথ্যাচার করেছে। দেশে থেকেও বলেছে, ভারতের তামিলনাড়ুতে চাকরি করছে। অথচ উদ্ধার হওয়ার পর এখন সবাই এসেছে। রেশমার ভাই জাহেদুল বলেন, তারা গরিব ঘরের সন্তান। তিনি দিনমজুর। বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। অন্য তিন ভাইবোনও অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতেন। এ কারণে ছোট বোন রেশমার খবর নিতে পারেননি কেউ-ই। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রেশমা প্রাণে রক্ষা পেয়েছে, এটিই তার কাছে বড় খবর। সুস্থ হওয়ার পর সে কি করবে একান্তই তার ব্যাপার।
মেজরের চিঠি: রেশমা উদ্ধারকারী সেনা কর্মকর্তা মেজর এম এম মোয়াজ্জেম হোসেন রেশমার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে লিখেছেন, ‘প্রিয় রেশমা। আসসালামু আলাইকুম। আপনার উদ্ধারকাজে আমি একজন কর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলাম। হয়তো সে কারণে একটি টিভি চ্যানেল আমাকে টকশো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়। টকশোতে প্রাপ্ত সম্মানী আমার নয়, এটি আপনারই জন্য, আপনারই প্রাপ্ত, একটু নয়- সবটুকুই। আমি, আমার পরিবার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আপনার সঙ্গে আছে।’(ডিনিউজ)
মেজরের চিঠি: রেশমা উদ্ধারকারী সেনা কর্মকর্তা মেজর এম এম মোয়াজ্জেম হোসেন রেশমার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে লিখেছেন, ‘প্রিয় রেশমা। আসসালামু আলাইকুম। আপনার উদ্ধারকাজে আমি একজন কর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলাম। হয়তো সে কারণে একটি টিভি চ্যানেল আমাকে টকশো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায়। টকশোতে প্রাপ্ত সম্মানী আমার নয়, এটি আপনারই জন্য, আপনারই প্রাপ্ত, একটু নয়- সবটুকুই। আমি, আমার পরিবার ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আপনার সঙ্গে আছে।’(ডিনিউজ)
খবর বিভাগঃ
বিশেষ খবর
সর্বশেষ সংবাদ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়