Sunday, May 19

ধ্বংস হতে চলেছে কর্ণফুলীর জীব বৈচিত্র

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সংস্কৃতি একাডেমীর উদ্যোগে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যান সমিতি ফেডারেশনের সহায়তায় বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ঐতিহ্যবাহী অভয়মিত্র ঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাট পর্যন্ত সাম্পান র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিতে ২৩ সাম্পান সমিতির তিন শতাধিক সাম্পান অংশগ্রহণ করেন।
ডায়মন্ড সিমেন্ট লি: এর সৌজন্যে আয়োজিত র‌্যালিতে কর্ণফুলী গবেষক ইদ্রিস আলী বলেন, ক্যাপিট্যাল ড্রেজিং এর নামে কর্ণফুলীকে ৮শত  ফিট চওড়া থেকে ছোট করে ৬শত ফিট করা হচ্ছে। একটি মহল নিজেদের ব্যবসায়ীক স্বার্থে কর্ণফুলীকে ধ্বংসের পায়তারা করছে। কর্ণফুলীতে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৫০ হাজার টন মানুষ্য সৃষ্ট বর্জ্য ফেলছে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ যা কর্ণফুলীর জলজ সম্পদ ও প্রাণী বৈচিত্র ধ্বংস করছে। চট্টগ্রামবাসীকে একত্রিত হয়ে কর্ণফুলী দূষণ প্রতিরোধ করতে হবে। কর্ণফুলী হালদা গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, কর্ণফুলী শুধু আর্থিক দিক থেকে নয় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগত কারণে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর নদীগুলোর একটি। কিন্তু অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত ব্যবহারের কারণে কর্ণফুলীর জীব বৈচিত্র আজ ধ্বংস হতে চলেছে। কর্ণফুলীর পানিতে লবনাক্ততা বেড়ে গেলে আমরা চির জীবনের জন্য হালদার যে কাতলা জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র তা হারাবো। কর্ণফুলী রক্ষার পাশাপাশি অবশ্যই কর্ণফুলীর সাম্পান মাঝিদের বাচিয়ে রাখতে হবে। চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যাপক ইউনুস হাসান বলেন, কর্ণফুলী চট্টগ্রামবাসীর জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ। এ নদীকে নিয়ে রচিত হয়েছে শত শত গান সিনেমা। কর্ণফুলীর উভয় তীরের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে একে পৃথিবীর অন্যতম একটি পর্যটন হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। শুধু কর্ণফুলী দিয়ে বাণিজ্য দেখলে হবে না। কর্ণফুলীর সৌর্ন্দর্য্যও আমাদের রক্ষা করতে হবে।
বক্তারা নগরীর ঐতিহ্যবাহী অভয়মিত্র ঘাট, বাংলাবাজার ঘাট রক্ষার দাবী জানান। মাঝিদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবীতে বলা, হয় সিটি কর্পোরেশনের দশ নম্বর ধারায় উল্লেখ্যিত ইজারাদার ঘাট পরিচালনা করে যাত্রী পারাপার করবে এর পরিবর্তে বৈঠা যার ঘাট তার নীতি প্রবর্তন করতে হবে। ঐতিহ্যবাহী অভয়মিত্র ঘাট ও বাংলাবাজার ঘাট রক্ষা করতে হবে। প্রভাবশালীদের ঘাট ইজারা দিয়ে মাঝিদের রুটি রুজি কেড়ে নেয়া চলবে না ইত্যাদি।
র‌্যালীতে অংশগ্রহণকারী সাম্পানগুলো সকাল থেকে নগরীর ঐতিহ্যবাহী অভয়মিত্র ঘাটে এসে জড়ো হতে থাকে। এগারটায় সারীবন্ধ ভাবে মনোরম দৃশ্যের অবতারনা করে সাম্পান র‌্যালী বন্দরের দিকে এগিয়ে যায়। প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ র‌্যালীর সাম্পান যেন কর্ণফুলীর বুকে বিনি সুতার মালার গেথে দেয়।
সাম্পান মাঝি কল্যান সমিতি ফেডারেশনর সভাপতি এস এম পেয়ার আলীর সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সংস্কৃতি একাডেমীর পরিচালক আলীউর রহমানের পরিচালনায় সাম্পান র‌্যালী উদ্বোধন করেন ডায়মন্ড সিমেন্টের পরিচালক আলহাজ্ব হাকিম আলী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সাম্পান খেলা ও চাঁটগাইয়া সংস্কৃতি মেলার প্রধান সমন্বযক চৌধুরী ফরিদ, স্থানীয় চর পাথরঘাটার প্রাক্ত চেয়ারম্যান, এস এম মাঈনুদ্দিন, মেলার যুগ্ম আহব্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার হারুন ও জাহাঙ্গীর আলম ওয়াহিদ। সাম্পান সমিতি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন জাফর আহমদ, শাহ আলম প্রমুখ। শুক্রবার বিকাল আড়াইটায় ঐতিহ্যবাহী সাম্পান খেলা অনুষ্ঠিত হবে।(ডিনিউজ)

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়