:: যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ :: পরিবর্তন ডটকম
: ভাই আমাকে এখান থেকে বের করেন, আমার একটা দুই বছরের ছেলে আছে। ওর জন্য আমাকে বাঁচান, ওরে দুধ খাওয়াতে হবে।
: ভাই আমাকে এখান থেকে বের করেন, আমার একটা দুই বছরের ছেলে আছে। ওর জন্য আমাকে বাঁচান, ওরে দুধ খাওয়াতে হবে।
: শাহীনা ! বইন আমার। আমি তোমার মায়ের পেটের ভাই লাগি। তুমি তোমার জামাটা খোলো। তোমার জামাটার জন্যে তোমার হাত আটকায় আছে। রডটাও কাটা যাচ্ছে না।
: যেইভাবে পারেন, আমারে বাঁচান ভাই। যদি না পারেন, আমার ছেলেডারে দেইখেন আপনেরা। ওরে দেখার আর কেউ নাই। মরার আগে ওরে একটু আইনা দিবেন? না পারলে দেশে একটু খবর পৌছায় দিবেন।
........ শাহীনাকে বাঁচানো যায়নি। উদ্ধারকারী মহান হৃদয়ের মানুষেরা জীবন বাজি রেখেছিলেন। দেশবাসী প্রার্থনায় বসেছিলেন। অভিমানী শাহীনা ফেরেননি।
..... সাভারে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভবন ধসে কংক্রিটের নিচে চাঁপা পড়েছিলেন হাজারো শ্রমিক। শাহীনাও তাদের একজন। রবিবার সকালে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিত শাহীনার সন্ধান পান উদ্ধারকর্মীরা। দীর্ঘ সময় ধরে আপ্রাণ চেষ্টার পর রাতে এক পর্যায়ে তাকে অক্সিজেন ও গ্লুকোজও দেয়া হয়েছিলো।
পৃথিবীর আলো বাতাসে শাহীনাকে তার ছেলে সন্তানের কাছে ফিরিয়ে দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। কিন্তু শাহীনাকে বের আনতে গিয়ে এমন অবস্থা হয়েছিলো যে জীবন স্পন্দনকে বাঁচিয়ে রাখতে শাহীনার বুক কেটে ফেলতে হবে। তখন শাহীনা মৃত্যুকূপের ভেতর থেকেই কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, ''আমার নাম শাহীনা। আমার বাড়ি কুষ্টিয়া, আমার দুই বছরের একটা পোলা আছে। তারে আপনেরা দেইখেন।''
নিজের পুত্র সন্তানের জন্য আহাজারি করে তিনি বলেছিলেন, “ভাইরে আমারে বাঁচান। আমার পোলাডার লাইগা বাঁচতে চাই।”
বুক কেটে তাকে উদ্ধারের কথা বললে তিনি বলেন, 'আমার বাচ্চারে দুধ দিমু ক্যামনে তাইলে'।
শাহীনার এমন হৃদয়গ্রাহী আবেদন শুনে ডুকরে কেঁদে উঠেছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে শাহীনা শেষ পর্যন্ত বাঁচেননি। তাকে উদ্ধার চেষ্টার চূড়ান্ত পর্যায়ে কাঁটার দিয়ে রড কেটে ফেলার সময় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে বেশকিছু উদ্ধারকর্মী আহত হয় এবং উদ্ধার তৎপরতা থেমে যায়। দীর্ঘ ৩০ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়েও বাঁচানো যায়নি কুষ্টিয়ার শাহীনাকে। সোমবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে রানা প্লাজা ধ্বংস স্তুপের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় তার মৃতদেহ। সাভারেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
শাহীনার এমন হৃদয়গ্রাহী আবেদন শুনে ডুকরে কেঁদে উঠেছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। তবে শাহীনা শেষ পর্যন্ত বাঁচেননি। তাকে উদ্ধার চেষ্টার চূড়ান্ত পর্যায়ে কাঁটার দিয়ে রড কেটে ফেলার সময় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে বেশকিছু উদ্ধারকর্মী আহত হয় এবং উদ্ধার তৎপরতা থেমে যায়। দীর্ঘ ৩০ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়েও বাঁচানো যায়নি কুষ্টিয়ার শাহীনাকে। সোমবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে রানা প্লাজা ধ্বংস স্তুপের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় তার মৃতদেহ। সাভারেই তাকে দাফন করা হয়েছে।
শাহীনা মরে গেলেও বেঁচে আছে তার অদেখা শিশুপুত্র। শাহীনার মৃত্যুর পর সকল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে সেই শিশুপুত্রটি। অনেকেই এই শিশুটির দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেন।
রানা প্লাজার এ ধ্বংসস্তূপের নিচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পোশাক কারখানার অনেক যন্ত্রপাতি। আর এসবের ফাঁকে ছড়িয়ে আছে গার্মেন্টস কর্মীদের নিত্যসঙ্গি টিফিন ক্যারিয়ারও। রানা প্লাজার ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি হিসেবে প্রায় ৪শত জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ভবনের ধ্বংসস্তুপ থেকে এ পর্যন্ত মোট জীবিত মানুষ উদ্ধারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়