ঢাকার সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ডের কাছে নয় তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে এ পর্যন্ত ১০১ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের ৭০ জন নিহত হওয়ার কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক। তার এ কথার পর আরও ৩১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
এর মধ্যে নিহত ৫৩ জনের লাশ সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ ও স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে একজনের মৃত্যু হয়। সেই সঙ্গে সাভার থানায় ১০ জনের লাশ রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ সংখ্যা আরও কয়েক গুণ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে এ ভবন ধসের ঘটনা ঘটে।
ইতোমধ্যে অনেকের লাশ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান এনামুল রহমান এনাম বাংলামেইলকে বলেন, ‘সাড়ে ৪শ’ রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্টোরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ, স্যালাইন থাকায় বাইরে থেকে ওষুধ আনতে হচ্ছে না। আমাদের এ মূহূর্তে চ্যালেঞ্জ রোগীদের সারিয়ে তোলা।’
ভবনটি ধসে পাশের একটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ভবনটিতে পাঁচটি পোশাক কারখানায় কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। উদ্ধারকাজে জরুরিভিত্তিতে সেনা বাহিনীকে তলব করার পর তারা উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন। জামতলা এলাকায় হাজারো মানুষ ভিড় করেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খবর পেয়ে উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ করছে। উদ্ধার করা হয়েছে সহস্রাধিক ব্যক্তিকে।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ইস্রাফিল আলম এমপি বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৫০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ভবনের ভেতরে পোশাক কারখানার শ্রমিক ছাড়াও কর্মকর্তারা আটকা পড়েছেন।’ উদ্ধার তৎপরতায় সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
জামতলায় অবস্থিত রানা প্লাজা নামের ওই ভবনে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জি। তিনি আরও জানান, বহু মানুষ ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছেন।
ভবনের নিচের দু’ তলা মার্কেট হলেও বাকি তলায় পোশাক কারখানা ছিল বলে স্থানীয়রা জানান।
সাভার মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, বুধবার সকালে নয়তলা ভবনটির পেছনের অংশ হঠাৎ ধসে পড়তে শুরু করে। এ সময় সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার ফাটল দেখা দেয়ার পরপর ওই ভবনে থাকা চারটি গার্মেন্টস কারখানা ও ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তবে বুধবার সকালে শ্রমিকরা আবারও কারখানায় গিয়েছিলেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।
সেনাবাহিনীর ফিল্ড অধিনাক লে. কর্নেল সোলাইমান বলেন, ‘আমাদের সাভার ক্যাম্প থেকে দুটি ইউনিট অর্ডারের সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসে। এরমধ্যে একটি রেসকিউ ইউনিট ও একটি মেডিকেল ইউনিট রয়েছে। রেসকিউ উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে, অন্যদিকে মেডিকেল ইউনিট উদ্ধার করা আহতদের ঘটনাস্থলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ঢাকা থেকে চারটি টিম ঘটনাস্থলে এসেছে।’
সেনাবাহিনীর ৯টি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
খবর বিভাগঃ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়