এদেশে শক্তিশালী ঘাঁটি গেড়েছে আন্তর্জাতিক একাধিক জঙ্গি সংগঠন। তার সাথে যোগ দিয়েছে দেশীয় একাধিক জঙ্গি সংগঠনও। যে কোনো সময় এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে বড় ধরনের নাশকতার ঘটানোর আশঙ্কা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। ওসব জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা এখনো এদেশে বড় কোনো নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করলেও ইসলামী দাওয়াতের আড়ালে জঙ্গিবাদী ও মৌলবাদী চেতনা বিকাশে সক্রিয় রয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে জঙ্গি সংগঠনের বেশ কিছু শীর্ষপর্যায়ের নেতাকর্মী সরকারের হাতে আটক হয়েছে। কিন্তু বাইরে থাকা জঙ্গি সংগঠনের নেতাকর্মীরা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তাছাড়া সরকার পাকিস্তানভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদের একজন উচ্চপর্যায়ের নেতাকেও আটক করেছে। তার কাছ থেকে গোয়েন্দারা এদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। এ প্রেক্ষিতেই সরকার জঙ্গিদের নাশকতা রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী এখনো নিষিদ্ধ ঘোষিত দেশীয় ইসলামী জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীর প্রায় ৮ হাজার সদস্য দেশজুড়্রে সক্রিয় রয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর একটি অংশও গোপন যোগাযোগ রক্ষা করছে জেএমবি, হিযবুত তাহরীর এবং হরকাতুল জিহাদের সাথে। তাছাড়া এসব জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারাও জড়িত থাকার আশঙ্কা করছে সরকারি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। একই সাথে ভারতের আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন দ্বিধা-বিভক্ত উলফার একটি অংশও বাংলাদেশে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারাও বাংলাদেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
সূত্র জানায়, এদেশে গেঁড়ে বসা জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গারা জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা নানা কৌশলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু কী পরিমাণ রোহিঙ্গা বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পেয়েছে সরকারের কাছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তারা আসল কিংবা ভুয়া ভোটার পরিচয়পত্র বানিয়ে দেশের বেশিরভাগ প্রাইভেট সিকিউরিটি এজেন্সিতে চাকরি নিয়েছে। তাদেও অনেকেই আবার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকছে। দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নাশকতার ক্ষেত্রে এদেরকে হুমকি মনে করছে। তাছাড়া জেএমবি, হিযবুত তাহরীর এবং হরকাতুল জিহাদের সদস্যরা যাতে কোনোভাবে সংগঠিত না হতে পারে সে ব্যাপাওে কঠোর সতর্ক রয়েছে এদেশীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। পাশাপাশি বিদেশী জঙ্গিরা যাতে ছদ্মবেশে এদেশে বড় ধরনের কোনো অবৈধ তৎপরতা চালাতে না পারে সেজন্য সন্দেহভাজন বিদেশীদের নামের তালিকাও গোয়েন্দা খতিয়ে দেখছে।
সূত্র আরো জানায়, ২০০৯ সালে দেশের নিরাপত্তা ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড এড়াতে সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পাশাপাশি আটক করা হয় সংগঠনের শীর্ষ নেতাদেরও। শুধু এদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এ সংগঠনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বেও ৮৭টি দেশে এ সংগঠনের শাখা রয়েছে এবং সংগঠনটির বিরুদ্ধে বিশ্বের একাধিক বড় নাশকতা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। যদিও এদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই ছিল এ সংগঠনের প্রধান টার্গেট। এখনো বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে সংগঠনটি এদেশে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। গত কয়েক বছর ধরেই সংগঠনটি বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও আলোচনার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে সংগঠনটি এদেশে ইসলামী হুকুমাত প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ এদেশের বন্ধুপ্রতীম দেশবিরোধী প্রচারণাতেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। ফেয়ার নিউজ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়